ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ

আগুনসন্ত্রাস থেকে নিজে বাঁচুন অন্যকে বাঁচান
আবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ

দ্বিতীয় দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষে একদিন বিরতি দিয়ে আবারো ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ঘোষণা করেছে বিএনপি। আজ ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত চলবে তৃতীয় দফার এ অবরোধ। গত সোমবার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। বিএনপি একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। তাদের যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করার অধিকার রয়েছে। তবে পেট্রোল কিংবা রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে যানবাহন কিংবা কোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আগুন দিয়ে যানমালের ক্ষতি করতে পারে না দলটি। তারা মানুষ হত্যা করতে পারে না। বিএনপি অবরোধ ডেকে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে তাদের এই নৈরাজ্য বন্ধে শান্তিপ্রিয় মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। কারো সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করলে কিংবা কোনো সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তির তরল কিংবা রাসায়নিক দাহ্য পদার্থ বহনের লক্ষণ দেখা গেলে অবিলম্বে আশপাশে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবহিত করতে হবে। এরফলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। বিএনপির অবরোধ চলাকালে সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব পালন করতে হবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে। কেননা জনগণের যানমাল রক্ষা করার দায়িত্ব তাদেরও নিতে হবে। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আওয়ামী লীগ মনোভাবাপন্ন ব্যবসায়ীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। অবরোধের সময়টিতে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা অবরোধের অজুহাত তুলে পণ্যের দাম বাড়ান। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ব্যবসায়ীরা যদি নিজেরা এই পণ্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হন, তাহলে অপশক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারবে না। ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের পর ২৯ অক্টোবর সারাে দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এরপর প্রথম দফায় গত ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পরে গত রোববার থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই অবরোধ গতকাল মঙ্গলবার ভোরে শেষ হয়। যুগপৎ আন্দোলনের শরিকসহ জামায়াতে ইসলামীও আলাদা করে এই অবরোধ পালনের ডাক দিয়েছে। দ্বিতীয় দফার অবরোধের শেষ দিনে ঢাকাসহ সারা দেশে ২২৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

এছাড়া মোতায়েন করা হয় র‌্যাবের ৪৬০টি টহল টিম। অবরোধ চলাকালে যাতে কোনো প্রকার সহিংসতা না হয়, সেজন্য সতর্ক অবস্থানে থাকে পুলিশও। পেট্রল পাম্প মালিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, প্রমাণসহ অগ্নিসংযোগকারীকে ধরতে সহায়তা করলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। একইসঙ্গে তিনি বোতল কিংবা ড্রামে করে খোলা অবস্থায় পেট্রোল বিক্রি না করার নির্দেশনা দেন। তিনি জানিয়ে দেন, খোলা পেট্রোল বিক্রি করা হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যেসব থানা এলাকায় পেট্রল পাম্প রয়েছে, ওই থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিনে একবার পেট্রল পাম্প পরিদর্শন করবেন। পেট্রল পাম্পগুলোর সঙ্গে পুলিশে সম্পর্ক বাড়াতে হবে। যোগাযোগটা সবসময় রাখতে হবে। এ সময় নিকটস্থ ওসি ও ডিউটি অফিসারের নম্বর পেট্রল পাম্পে রাখার অনুরোধ করেন কমিশনার। অবরোধ চলাকালে আইন-শৃঙ্খলাকারী বাহিনীর সদস্য ও আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা যদি রাস্তায় থাকেন তাহলে বিএনপি কিংবা অন্য রাজনৈতিক দলগুলো নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারবে না। যেহেতু বিভিন্ন প্রয়োজনে সাধারণ মানুষকে অবরোধ চলাকালেও ঘর থেকে বের হতে হয়, সে জন্য তাকেও রাস্তাঘাটে সচেতন থাকতে হবে। মোট কথা হচ্ছে নিজে সচেতন থাকতে হবে এবং অন্যকেও সচেতন করতে হবে। অপশক্তির হাত থেকে নিজে বাঁচাতে হবে এবং বিএনপির নৈরাজ্যে অন্যের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত