আবার অবরোধের কবলে দেশ

নিরাপত্তা নিশ্চিতে রুখতে হবে অগ্নিসন্ত্রাস

প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দিদের মুক্তির দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা বিরোধীদের ডাকে আবারও অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

তৃতীয় দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ আজ সকাল ৬টায় শেষ হতে না হতে আবার অবরোধের ডাক দেয়া হলো। আগামী রোববার সকাল ৬টা মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। এর আগে তিন দফায় ৪৮ ঘণ্টা করে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ সময় বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় বেশ কিছু বাসে আগুন দেয়া হয়। বাসে আগুন দেয়ার মধ্যদিয়েই অবরোধকারীরা মানুষকে আতংকিত করে থাকে। বিগত তিন দফার অবরোধ কর্মসূচি জনজীবনে তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। চতুর্থ দফার অবরোধ কর্মসূচি কতটা সহিংসতার মধ্যদিয়ে কাটবে, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। ব্যাপক সমালোচনার মুখে তৃতীয় দফার অবরোধ চলাকালে পিকেটাররা তাদের কৌশল পরিবর্তন করে। প্রথমত তারা কোনো যাত্রীবোঝাই বাসে আগুন দেয়নি। ফলে আগুনে পুড়ে কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। আর দ্বিতীয়ত তারা দিনের আলোয় বাসে আগুন না দিয়ে সন্ধ্যা-রাতকে আগুন দেয়ার সময় হিসেবে বেছে নেয়। তৃতীয়ত : আগুন দেয়ার পরপরই বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে বাসে আগুন দেয়ার স্কল দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে যে বাসে আগুন দিয়েছে, তার মোবাইল ফোনে ‘বখশিশ’ চলে যায়। চতুর্থত : পেট্রোল পাম্প থেকে লুজ জ্বালানি বিক্রির ওপর পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর মোটরসাইকেলে পেট্রোল সংগ্রহ করে তা পিকেটাররা আগুন দেয়ার কাজে লাগায়। এ কারণে অবরোধ চলাকালে মোটর সাইকেলে পেট্রোল সরবরাহ সীমিত করা উচিত। আর পঞ্চম পরিবর্তন হচ্ছে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলন করে অবরোধের কর্মসূচি জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিগত অবরোধ কর্মসূচি পালন করার মধ্যদিয়ে সরকারবিরোধীদের কোনো দাবি পূরণ হয়নি। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দল ও জোটগুলো আজ ও আগামীকাল কোনো কর্মসূচি না রেখে চতুর্থ দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। বিগত তিন দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় যান চলাচল ছিল প্রায় স্বাভাবিক। সকাল থেকেই যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি অটোরিকশা, রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল, পণ্যবাহী পিকআপ চলাচল করেছে। এমনকি কোনো কোনো টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কিছু বাসও ছেড়ে গেছে। তবে বরাবরের মতো ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ছিল কম। রাস্তায় যানবাহন কম থাকায় মানুষ সাধারণত ঘর থেকে বের হয় না। পরিবহণ মালিকরা যদি রাস্তায় তাদের যানবাহন বের করেন, তা হলে অবেেরাধের কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে পরিবহণ মালিকরা বলেছেন, রাস্তায় বাস নামাতে তাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে নিরাপত্তা দেবে কে? তারা বলেছেন, আগুনের ভয়ে তারা বাস চালান না। বাস চলাচল অব্যাহত থাকলে অবরোধের কোনো প্রভাব পড়ত না। কোনো কিছুই বন্ধ থাকত না।

বিএনপি-জামায়াতের ডাকে প্রথম দফায় গত ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ পালন করা হয়। এরপর ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। তৃতীয় দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয় ৮ ও ৯ নভেম্বর। অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে মানুষ নিত্যদিনের প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যায়। তবে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রুখতে হবে অগ্নিসন্ত্রাস।