ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আ.লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা

সিদ্ধান্তগুলো যথাযথভাবে প্রতিপালনের তাগিদ
আ.লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা

গণভবনে গত বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো প্রতিপালন করার জন্য নেতাকর্মীদের তাগিদ দেয়া হয়েছে। বিএনপি ও তাদের সমমনা কয়েকটি দল অবরোধ কর্মসূচি আহ্বান করার প্রেক্ষাপটে এই ধরনের নির্দেশনা যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার প্রাক্কালে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ ধরনের নির্দেশনার প্রয়োজন ছিল। অবরোধ-কর্মসূচি পালনের নামে বিএনপি আবার নৈরাজ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে। কূটনৈতিকদের তৎপরতাও বেড়ে গেছে। সে কারণে কূটনৈতিকদেরকে কূটনৈতিক উপায়ে মোকাবিলা করার কথা বলা হয়েছে ওই সভায়। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে সব ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিতর্কিত কথাবার্তা পরিহার করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কো-চেয়ারম্যান পদশূন্য রেখেই সভায় আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি হয়েছেন শেখ হাসিনা আর সদস্য সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম ৩০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে। অনলাইনেও সে সুযোগ থাকছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার জন্য ১৪টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। গত নির্বাচনের সময়ও ১৪টি ছিল। নাশকতা, গাড়ি ভাঙচুর ও নির্বাচন ভণ্ডুল করার অপচেষ্টা যতদিন চলবে, ততদিন সরকারের পাশাপাশি সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সতর্ক পাহারায় থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সভায়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুলের চক্রান্ত যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ করতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন। সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, বিএনপির নেতৃত্বে যে অগ্নিসংযোগ, অগ্নিসন্ত্রাস ও পরিবহনে আগুন দেয়ার মতো যেসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চলছে, সে ব্যাপারে আরো সচেতন থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলকে আরো সুসংগঠিত করার জন্যও দেয়া হয়েছে। সভায় এই বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে, দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান ও জানমাল রক্ষা করার দায়িত্ব ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও সরকারের ওপর বর্তায়। আর সে কারণে যার যে দায়িত্ব তাকে, সেই দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়। জনস্বার্থেই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সারা দেশে সতর্ক পাহারায় থাকবে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে এমনটা ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন ও বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনসহ সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন কূটনীতিকের তৎপরতার পক্ষে-বিপক্ষে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে বক্তব্য দিতে বারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখছে। কোনো প্রয়োজন হলে তারাই কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। তারাই দেশের অবস্থান জানাবেন। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নানান ষড়যন্ত্রের কথা নেতাদের জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ভোট হয়ে গেলেও ষড়যন্ত্র হবে। ভোটের পর ষড়যন্ত্রকারীরা নানান খুঁত বের করার চেষ্টা করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করবে- যাতে স্যাংশনসহ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আসে। নেতাদের এ ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকার জন্য বলেছেন তিনি। বিএনপি ও সমমনাদের অবরোধে বাসে অগ্নিসংযোগ, জ্বালাওপোড়াও নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। পোশাক-শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে বাইরের শক্তির পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরাও প্রবেশ করেছে বলে নেতাদের অবহিত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি তাদের চিহ্নিত করার জন্য নির্দেশনা দেন। এজন্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাকে শ্রমিক নেতাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত