অভিমত

সংঘাত নয় পৃথিবী হোক শান্তিময়

ইমন হাওলাদার

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

পৃথিবীর সৃষ্টি ও মানুষের আবির্ভবের সময়কাল থেকে মানুষ প্রাকৃতিক পরিবেশের বিভিন্ন বাধা-বিপত্তিকে মোকাবিলা করে আজ এই আধুনিক মানবসভ্যতার উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রকৃতির বিরূপ পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেড়ে কতই না প্রাণীকূল, পক্ষিকুল হারিয়ে গেছে সময়ের কাল স্রোতে। অনেক পশুপাখি পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে টিকে আছে, তাদের অভিযোজন প্রক্রিয়া এর ক্ষমতা সুদৃঢ় বলে। মানবসভ্যতার অস্তিত্ব টিকে আছে অভিযোজন এর ক্ষমতা সুদৃঢ় বলে। মানুষ যখন খাদ্য উৎপাদন ও সঞ্চয় করার পদ্ধতি আবিষ্কার না করেছে। তখন তারা স্বীকার করে খাদ্য সংগ্রহ করত এবং ফলমূল আহরণ করে জীবন পরিচালনা করত। তখন মানুষ ছিল হিংস্র। তারা গাছের কোটরে, গুহায়, মাটিতে গর্ত করে বসবাস করত। নিজেদের নিরাপত্তার কথা উপলব্ধি করতে পেড়ে তারা দলবদ্ধভাবে বসবাস শুরু করে। এর ফলে ক্রমান্বয়ে বন্য দশা থেকে বেরিয়ে এসে তারা মানবসভ্যতার উন্মোচন করে। বন্যদশার পরের পৃথিবী ছিল শান্তিময় সংঘাত হীন। তারা বিপদে একে অপরকে সাহায্য করত। খাদ্যদ্রব্য ভাগাভাগি করে খেত। তারা নিজেদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দলপতি নির্বাচন করতেন। তাদের মধ্যে দলপতি হিসেবে নির্বাচিত হতেন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, শক্তিশালী ও বিচক্ষণ বুদ্ধিমত্তার অধিকারী কেউ। দলপতি সবার মঙ্গলার্থে কাজ করত। কিন্তু আজ বিশ্ব দড়বারে হাজারো দলনেতা, দলপতি নির্বাচন করে আধুনিক সমাজে নেই কল্যাণ। সবার মাঝে বিদ্যমান রক্ত নেশা। সবাই যেন সকাল হতেই রক্তের সন্ধানে নেমে পড়ে কার জামাটি রক্তে করবে লাল। আমরা যেন ফিরে যাচ্ছি আদিম সেই বন্যদশায়। সভ্যতার মানেই যেন এখন আমাদের কাছে অর্থহীন। সবাই এখন নিজ স্বার্থসিদ্ধির পেছনে ছুটছে মনুষ্যত্ব লোপ পেয়েছে কয়েক হাজার গুণ। মানুষ এখন আর মানুষের দুঃখ-বেদনা অনুভব করে না, অন্যের কষ্টে চোখে জল আসে না, অন্যের দুঃখ-কষ্টের কথা শুনলে আমাদের হাসি পায়। আমরা হয়ে গেছি যন্ত্রমানব হয়ে। ভালো কথা আমাদের আর এখন ভালো লাগে না। অন্যের দুঃখ-কষ্ট মোবাইল ফোনে ধারন করে অনলাইনে ছেড়েই যেন দায় সারছে দায়িত্ববান লোকগুলো। আমাদের চারপাশের দ্রব্যসামগ্রী, দালান-কোঠা, অফিস-আদালত জীবন ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও আমাদের বিবেকবুদ্ধি লোপ পাচ্ছে। এগুলো বিকৃত হয়ে যাচ্ছে।

পারিপার্শ্বিক উন্নয়নের সঙ্গে আমাদের মনুষ্যত্বের উন্নয়ন ঘটাতে হবে না, হলে কখনোই পৃথিবীতে শান্তি বিরাজ করবে না। আমরা পরিণত হচ্ছি রক্তচোষা মানুষে, যাদের অন্যের জন্য কোনো মায়া-দয়া নেই। আছে শুধু নির্যাতন। যেমনটি বর্তমান বিশ্বে প্রতিটি দেশে চলমান। ইউক্রেন-রাশিয়াযুদ্ধ, ইজরাইল-ফিলিস্তিনযুদ্ধ যা জাতিসংঘের মতো একটা সংগঠন ও এর নিষ্পত্তি করতে পাড়ছে না। পুরো পৃথিবী আজ রক্ত নেশায় মেতে উঠেছে। তাই আমাদের এসব যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করে শান্তির সুবাতাস বহমানে কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

শিক্ষার্থী

ঢাকা কলেজ

বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম

ঢাকা কলেজ শাখা, দপ্তর সম্পাদক