ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য টিসিবির পণ্য

আরো সম্প্রসারিত হোক এই মহতী কার্যক্রম
স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য টিসিবির পণ্য

প্রায় ১ কোটি মানুষকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কোটি মানুষ মানে এর মাধ্যমে পাঁচ কোটি মানুষ এই সুবিধা পাবেন। কার্ডধারীরা ছাড়া অন্যরাও এই মালামাল নিতে পারছেন। গতকাল ডিসেম্বর মাসের জন্য দেশব্যাপী ১ কোটি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ ও এই কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু এই কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। আর তারই কন্যা শেখ হাসিনা সেই ধারা অব্যাহত রাখায় সাধারণ মানুষ স্বল্পমূল্যে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য পাচ্ছে। বাজারে যখন পণ্যের মূল্য বেড়ে যায়, তখন স্বাভাবিক কারণে অসচ্ছল মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আর এই দুর্ভোগ থেকে নিম্নআয়ের মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায় টিসিবি। দেশের অন্যান্য শহরের তুলনায় ঢাকা শহরে জীবনযাত্রার খরচ বেশি। এখানে ভাসমান লোকের সংখ্যাও বেশি। ঢাকায় প্রতিদিন ৯ হাজার সাধারণ ক্রেতা ভর্তুকি দামে কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছেন। যা বাজারদরের প্রায় অর্ধেক। ঢাকায় ৩০টি ট্রাকে সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৭২ টন পণ্য বিক্রি হচ্ছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে টিসিবি ১ কোটি নিম্নআয়ের ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের কাছে মোট প্রায় ৭২ হাজার ৫৭৪ টন চিনি, ১ লাখ ৮৭ হাজার ২২ টন মসুর ডাল, ১৮ কোটি ৬৫ লাখ লিটার ভোজ্য তেল, ৯ হাজার ৪২৬ টন পেঁয়াজ, ৯ হাজার ২৩০ টন ছোলা ও ৫৯০ টন খেজুর বিক্রি করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের জন্য যেসব মহতি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেন, টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রি তার মধ্যে অন্যতম। এই কার্যক্রম শুধু রাজধানীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে অরো ব্যাপক এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া হলে আরো বেশি মানুষ উপকৃত হবে। কেননা, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি যখন জীবনকে নানাভাবে বিব্রত করছে, ঠিক সেই সময় নিম্নআয়ের মানুষের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে টিসিবি। টিসিবির ক্রেতারা বলছেন, ‘টিসিবি গরিব মানুষের বেছে একটি নির্ভরযোগ্য অবলম্বন। কম দামে টিসিবি পণ্য কেনার মধ্য দিয়ে যে টাকা সাশ্রয় হয়, তা দিয়ে সন্তানদের অন্য চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়। টিসিবির যাত্রা শুরু হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত দিয়ে ১৯৭২ সালে।

নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আপৎকালীন মজুদ গড়ে তুলে প্রয়োজনের সময়ে ভোক্তা সাধারণের কাছে সরবরাহ করার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখার মিশন নিয়েই শুরু করেছিল টিসিবি। স্বাধীন উত্তরকালে বিপর্যস্ত অর্থনীতি, বিচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা, অবিন্যস্থ বন্দর ইত্যাদির প্রেক্ষাপটে পর্যাপ্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল জরুরিভিত্তিতে জোগান দেওয়া এবং ন্যায্যমূল্যে ভোগ্যপণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রয়োজন দেখা দেয়। এ পরিপ্রেক্ষিতেই টিসিবি প্রতিষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাজারে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে টিসিবির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জনগণের স্বার্থেই টিসিবির মতো একটি রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক সংস্থা কার্যকর থাকা জরুরি। সে গুরুত্ব অনুধাবন করেই বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই টিসিবিকে সক্রিয় ও শক্তিশালী করার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং এর জনবল ও মূলধন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত