পাহাড়-টিলা নিধন বন্ধ করতে হবে

আফতাব চৌধুরী

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

টিলা ও পাহাড় ঘেরা আমাদের সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য জেলাগুলো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এ অঞ্চলের প্রচুর সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে। এক সময় সিলেটে আসতেন শত শত দেশি-বিদেশি পর্যটক, যারা সিলেটের সৌন্দর্যের প্রশংসা করে একে ‘শ্রীভূমি’ উপাধি দিয়েছেন। পরিতাপের বিষয়, সিলেটের সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আগের মতো আজ আর নেই। সিলেটের চারপাশে যেসব টিলা ও পাহাড় ছিল, সেগুলো গেল কয়েক বছরে কেটে সাফ করা হয়েছে। সরকার এরইমধ্যে পাহাড় ও টিলাকাটা বন্ধে জেল জরিমানাসহ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সরকারের টিলাকাটা আর বন-উজাড়ের আইন সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। আমরা যদি চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার বা সিলেটের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব, পাহাড়ের জায়গায় পাহাড় নেই, টিলার জায়গায় টিলা নেই। পাহাড়-টিলা হয়ে গেছে সমতল ভূমি। গড়ে উঠেছে বসতবাড়ি বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। পবিত্র কোরআনে পাহাড়কে পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষাকারী কিলক বা পেরেক হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানীরাও অকপটে একই কথা বলেছেন। বাংলাদেশে খুব সহজ একটি কথা বলা হয়, পাহাড় কাটা আইনের নিষিদ্ধ। তবে কোথাও এ নিষিদ্ধের বালাই নেই। অহরহ পাহাড়-টিলাকাটা হচ্ছে, চলছে দখল-বেদখলের ভয়ানক কানামাছি খেলা। বুক ফুলিয়ে তৎপর ভূমিদস্যু অথচ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। মাঝেমধ্যে দুই-একটি ট্রাক আটকানো হয়। অনেকেই বলে থাকেন, এটা নাকি রেইট বাড়ানোর একটা পদ্ধতি। আমরা জানি, বিশেষজ্ঞরাও বলে থাকেন, পাহাড়ের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। পাহাড়গুলো পৃথিবীর ভারসাম্য ও স্থিতিশীলতা রক্ষাকারী হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে। পাহাড়-টিলা নির্মূল করা হলে ভারসাম্য বিনষ্ট হয়। একে ধ্বংস হতে দেয়া হলে যেভাবে পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটছে পরিণতি তার চেয়েও অনেক বেশি মারাত্মক হতে পারে। পাহাড়ের অবস্থান না থাকলে ভূমিকম্পের প্রকোপ বাড়বে, জীবন ও সম্পদ বিনষ্ট হবে। তাই প্রকৃতি বা পাহাড়কে প্রাকৃতিকভাবেই থাকতে দিতে হবে। এদিকে পাহাড় কাটার আইন লংঘনের জন্য সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড, ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড, পাহাড় কাটার যন্ত্রসামগ্রী জব্দ, নিষেধাজ্ঞা, পাহাড়কে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার বিধি-বিধান রয়েছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে সীমিত ও পরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটার সুযোগ রয়েছে। আর সেই সুযোগে ভূমিদস্যুরা কাটছে পাহাড়। দেখা গেছে, কোথাও একটি পাহাড়ের অংশ কাটার অনুমতি থাকলে তাকে পুঁজি করে আরো ৫ থেকে ৭টি পাহাড়-টিলা কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে। নেপাল সার্কভুক্ত একটি দেশ। হিমালয়কন্যা হিসেবে খ্যাত, অতুলনীয় সৌন্দর্যে ভরপুর একটি দেশ। সেদেশের সরকার ও জনগণ টিলারাশি, পাহাড়-পর্বত রক্ষায় এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। সরকার ও প্রতিটি নাগরিক পর্বত ও পাহাড় রক্ষায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। নিবিড় পরিকল্পনার মাধ্যমে তারা তাদের দেশকে গড়ে তুলছে। সে দেশে প্রচুর পরিমাণে ধানসহ মৌসুমি ফল-ফসল উৎপাদন হচ্ছে। পরিকল্পিত উপায়ে বৃক্ষরোপণ করে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলছে দেশকে। ফলে সারা বছরই সেখানে পর্যটকদের বিচরণ থাকে আর এ খাত থেকে তারা প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করে থাকে। সে দেশে এমনভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়ে থাকে, কোথাও ঝড় বৃষ্টি বা বর্ষায় বাড়িঘর ধসে পড়ার কথা শোনা যায় না।

বাংলাদেশে খুব বড় না হলেও ছোট ছোট অনেক পাহাড় ও টিলা ছিল। আমরা, এর অধিবাসীরাই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করছি, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকিস্বরূপ বলা যায়। বিভিন্ন পত্রপত্রিকার খবরে প্রকাশ, আন্তর্জাতিক পাহাড় বিশেষজ্ঞরা গভীর আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা পরিদর্শন করে পাহাড় টিলাকাটার নমুনা দেখে হতবাক হয়ে যান। তারা গভীর দুঃখভরা মনে বলেন, এদেশে যেভাবে পাহাড়-টিলা কেটে সমতল করা হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেবে, তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। তাদের অভিমত, এ ব্যাপারে সরকার ও জনগণকে অবশ্যই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রকৃতির এ সম্পদ রক্ষা করতে হবে। কোনো কোনো মানুষের স্বভাবই হচ্ছে, ঘাসকাটা কিংবা গাছকাটা। ঘাসকাটা অনেক সময় তুচ্ছার্থে ব্যবহার হয়। গাছকাটা নিয়ে কথা উঠলে বলা যায়, গাছ তো রোপণ করা হয়, কোনো না কোনো এক সময় কাটার জন্যই। ঘাস কাটলে সে স্থানে ঘাস আবার গজায়। গাছ রোপণ করে তা সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ করলে সে গাছ বেড়ে উঠে। উজাড় বন হয়তো কিছুদিন না কাটলে সে স্থান ঘন বনে পরিণত হতে পারে। কিন্তু মনুষ্যপুত্ররা অগ্রপশ্চাৎ বিচার-বিবেচনা না করেই কোনো সংগঠন, প্রভাব অথবা খুঁটির জোরে বা অর্থের বিনিময়ে টিলার পর টিলা কেটে চলেছে। তারা কি ভেবে দেখেছে যে, ওই পাহাড় বা টিলা কেউ রোপণ করেনি। টিলা বা পাহাড় কাটলে তা শুধু কাটাই হয়, আর নতুনভাবে গজায় না। এটা প্রকৃতির অমূল্য দান। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা সবাই স্বীকার করেছেন যে, সৃষ্টিকর্তা-পাহাড়-পর্বত-নদী-সাগরময় ভূপ্রকৃতি সৃষ্টি করেছেন এমন একটা ভারসাম্য সহকারে যে এর কোনো রকম ব্যত্যয় বা ব্যতিক্রম ঘটালে তা শুধু প্রকৃতিতে নয়, গোটা পরিবেশেই সৃষ্টি করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। গঙ্গা নদীর যে স্রোতধারা প্রবাহিত হচ্ছিল, ভারতীয় অংশে ফারাক্কা বাঁধ দেয়ার ফলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলজুড়ে শুরু হয়েছে মরুভূমির আলামত। গ্রীষ্মে দারুণ গরম আর শীতকালে নিদারুণ শীত। হিমালয় এলাকার ঘন বনরাজি নিশ্চিহ্ন হওয়ার ফলে আমাদের দেশে মাঝেমধ্যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় বলে আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা অভিমত প্রকাশ করেছেন। সিলেটের বুকে ভূপ্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাকারী টিলা-পাহাড়গুলো যারা একের পর এক নিধন করে চলেছে, তারা হয়তো জানতে বা বুঝতেও পারছে না যে, প্রকৃতির কী ক্ষয়ক্ষতি তারা সাধন করে চলেছে। আজ না হোক, কাল কিংবা অদূর অথবা সুদূর ভবিষ্যতে প্রকৃতি যখন এর প্রতিশোধ নিতে শুরু করবে, তখন ওই প্রতিশোধ যারা পাহাড় কেটে চলেছে শুধু তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং প্রকৃতির প্রতিশোধের কুফল পোহাতে হবে দেশবাসীকে। অন্য কথায় জানা কয়েকের অবিমৃষ্যকারিতার মূল্য দিতে হবে গোটা জাতিকেই। সুতরাং, আর কাল বিলম্ব না করেই এ মুহূর্ত থেকে যে কোনোভাবে যে কোনো উপায়ে, প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি পার্বত্য জেলাগুলোর টিলা-পাহাড় নিধন বন্ধ করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সব মহলকে তৎপর হতে হবে। আমরা বলি, নিজের বুঝ পাগলেও বোঝে। আর ব্যাপারটি মোটেই পাগলামি-ছাগলামির ব্যাপার নয়। এটা জেনেশুনে নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারার মতো। এটা যদি কারো গোঁয়ার্তুমির কারণে হয়, তাহলে বুঝতে হবে, সেটা নিরেট আহম্মকের গোঁয়ার্তুমি। শুধু কাগজে-কলমে বিধিনিষেধ দিয়ে অথবা কোনো মহলের নিছক গায়ের জোরের কাছে অসহায়ভাবে নতি স্বীকার করে প্রকৃতি ও পরিবেশের এ ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টির বোকামী উপভোগ করার বিলাসিতা আমাদের মতো হতদরিদ্র দেশের শোভা পায় না। ১৯৮৩ সালে সরকার পাহাড়-টিলা কাটার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। পরবর্তীকালে ১৯৮৭ সালের সংশোধিত আইনের আওতায় অনুমতি সাপেক্ষে পাহাড় ছাঁটার অনুমোদনের ব্যবস্থা রাখা হয়। কিন্তু আইনের ফাঁক দিয়ে টিলা ছাঁটার নামে বড় বড় টিলা কেটে সমতল করা হচ্ছে। এটা দেখার বা বাধা যাদের পক্ষ থেকে দেওয়ার কথা, তারা অর্থের লোভে এ কাটায় সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এমনও জানা যায়, সিলেটের কোথাও টিলা বা পাহাড় কাটার খবর আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানানো হলে তারা হয়তো তদন্তে যায়; কিন্তু তাদের যাওয়ার আগেই টিলা বা পাহাড় কাটার খবর জড়িতদের জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে সরেজমিন গিয়ে তাদের আর পাওয়াই যায় না। আর এতে খবরদাতাকে নাজেহাল হতে হয়। বিস্ময়ের ব্যাপার, পাহাড় কাটা হয়ে গেলে পরে এ আইনে মামলা দিয়ে শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু পাহাড় কাটা রোধ করার কোনো কার্যকর, নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এ আইনে নেই। আবারো সে আগের কথাই বলতে হয়। গাছ কাটলে গাছ হতে পারে। বীজ ফেললে চারা হয়, সে চারা একদিন মহীরুহে পরিণত হতে পারে। কিন্তু যে পাহাড় বা যে টিলাটি কেটে ফেলে সমান করা হলো প্রকৃতির নিয়মে প্রতিষ্ঠিত সে পাহাড়টি কিংবা সে টিলা আর মানুষের পক্ষে গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

লক্ষ্য করেছি, ক্ষমতাবান ও বিত্তশালীরাই পাহাড়-টিলা কেটে ধ্বংস করার ভূমিকায় বেশি অবতীর্ণ। দেখা যাবে, সিলেট শহর থেকে ৮ থেকে ১০ মাইল পর্যন্ত দূরত্বের বেশিরভাগ টিলাই কেটে সাফ করা হয়েছে। এসব টিলার মাটি কেটে শহর বা শহরতলীর বিভিন্ন বসতবাড়ি, আবাসিক এলাকা, পুকুর ইত্যাদি ভরাট করা হচ্ছে। বিত্তবান আর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পুলিশ বিভাগের লোকদের সহযোগিতায় সিলেটের হাজার হাজার একর টিলাভূমি নিশ্চিহ্ন হয়েছে। সিলেট শহরের পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণ সব দিকসহ চারপাশের ঢেউ খেলানো পাহাড় শ্রেণি আজ আর চোখে পড়ে না। ছোট ছোট টিলা এদিকওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল, এগুলোও নিধন চলছে। পাহাড়-টিলা কাটার কাজে প্রতিদিন শত শত শ্রমিক ও ট্রাক নিয়োজিত রয়েছে। পাহাড়-টিলা নিধন চলছে সংঘবদ্ধভাবে। পরিতাপের বিষয়, যাদের এসব অপরাধমূলক কাজে বাধা দেয়ার কথা, তারা নীরব ও নির্বিকার। তাদেরটা হয়ে গেলে তারা কথা বলে না। অর্থ পিপাসুদের প্রবণতাটা এমনই যে, দেশ জাহান্নামে যাক তাতে তাদের কিছুই আসে যায় না। তাদেরটা হলেই বাকিদের নিয়ে চিন্তা করে না তারা। যেহেতু পাহাড়-টিলা কাটার বিরুদ্ধে আইন আছে, সুতরাং পুলিশের হয়েছে পোয়াবারো। পুলিশের নাকের ডগায় সবকিছু হচ্ছে। শোনা যায়, পাহাড় কাটার সুবিধার্থে নাকি টোকেন প্রথাও চালু রয়েছে। কোনো সময় পাহাড় বা টিলা কাটার দৃশ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চোখে পড়লে দুই-একটি ট্রাক আটক করা হলেও তার পেছনে থাকে অন্য উদ্দেশ্য। আবার কেউ কেউ বলেন, পাহাড়-টিলা কাটার ব্যাপারে কড়াকড়ি যত আরোপ করা হয়, তাতে নাকি ট্রাক প্রতি বখরার অংকটা বাড়িয়ে দেয়া হয়। সত্য বলতে কি, ক্ষুদ্র ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থ যেখানে কাজ করে, সেখানে শুধু ভালো কথা, নীতিবাক্য আর সদাচরণের মৌখিক আহ্বান কোনো কাজে আসে না। এর জন্য নীতি ও নিয়মের পাশাপাশি কঠোর আইনের প্রয়োজন। আর সে আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং আইন প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট সব মহলের সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও দেশপ্রেম দরকার। যারা পাহাড় কাটছে, পাহাড় ন্যাড়া করছে এবং পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে, এসব ব্যর্থতার দায় শুধু তাদের নয়। এর দায় স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোরই বেশি। নিয়ন্ত্রণমূলক কর্মকাণ্ড জোরদার করার ক্ষেত্রে কী ধরনের সমস্যা এবং কারা এসবের পেছনে সক্রিয় রয়েছে, এ বিষয়গুলো ভালোভাবে খতিয়ে দেখে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জননিরাপত্তা, পাহাড়ের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা আজ অপরিহার্য। এ কাজটি যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়, সেজন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা আশা করব, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, বগুড়া, কুমিল্লাসহ সারা দেশের পাহাড়-টিলা, যে টুকুই অবশিষ্ট আছে, তা সংরক্ষণের জন্য কঠোর আইন প্রণীত হবে। একই সঙ্গে সে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রেও কঠোর মনোভাব ও ব্যবস্থা গৃহীত হবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে এবং লালিত শহরগুলোর ঐতিহ্য বজায় রাখার প্রয়োজনে সর্বস্তরের সব নাগরিককে সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে। এখনই, এ মুহূর্তে থেকে এ ব্যাপারে সতর্ক ও দায়িত্বশীল হতে হবে। গ্রহণ করতে হবে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ, যাতে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি পাহাড় নিধন। আমরা চাই না শুধু সুশ্রী, সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর শ্রীভূমি সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, শেরপুর, কুমিল্লা বা কক্সবাজারের পাহাড়ি পরিচয় স্রেফ ইতিহাসে পরিণত হোক।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট। বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার (১ম স্বর্ণপদক) প্রাপ্ত।