ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিজয় আমাদের মর্মবাণী অজর অক্ষয় চির অম্লান

রায়হান আহমেদ তপাদার
বিজয় আমাদের মর্মবাণী অজর অক্ষয় চির অম্লান

বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রসত্তা গুনে গুনে তার স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এসে দাঁড়িয়েছে। পেছনের ৫২টি বছর তো আর কম নয়। বিজয়ের এ বয়সে এসে আশা ছিল অনেক কিছুই প্রাপ্তির, অর্জনের কিংবা বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর মতো কিছু কৃতিত্বের। আহামরি অনেক কিছুর প্রাপ্তি ঘটে গেছে তা যেমন বলব না, আবার একেবারে যে হতাশার অতল তলে নিমজ্জিত হওয়ার মতো কিছু হয়েছে তাও নয়। প্রাপ্তির জায়গায় দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আর্থসামাজিক উন্নয়ন, দেশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন থেকে শুরু করে দেশ আজ ধীরে ধীরে মধ্যম আয়ের একটি দেশে উপনীত হয়েছে- এটাই বা কম কিসের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলার নাগরিক হিসেবে আমরা গর্বিত। তারই নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বুঝতে শেখার পর থেকেই আমরা স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে শুরু করেছি। ক্ষমতার পালাবদলে ইতিহাস বদলে যেতেও দেখেছি। স্বাধীন দেশে বিভাজনও সৃষ্টি হয়েছে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। পক্ষ-বিপক্ষের কথা এ জন্যই বলা। এখনো দুই ভাগে ভাগ হচ্ছে জনগণ। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি ও বিপক্ষ শক্তি খুঁজে নিতেই আমাদের অনেক ভাবতে হচ্ছে। স্বাধীনতা মানে শুধু পরাধীন দেশকে মুক্ত করা নয়। স্বাধীনতা মানে দেশের সার্বিক উন্নতি-অগ্রগতি সমুন্নত রাখা। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, হানাহানি, লুটতরাজ নিয়ন্ত্রণ করা। বঙ্গবন্ধু সে লক্ষ্যেই বাঙালিকে আহ্বান করেছিলেন ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে। স্বাধীন দেশে রাজনীতি মানে যাচ্ছেতাই করা নয়। সব নাগরিকের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, ভোটাধিকার, কথা বলার অধিকার নিশ্চিত করা। ইতিহাস মুছে দেয়ার পাঁয়তারা নয়; সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা। সর্বোপরি জনগণকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়াই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। যতবার দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছে, ততবারই দুর্নীতি নামের ব্যাধি আমাদের পশ্চাতে টেনে নিয়ে গেছে। তাই এখন দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়াও স্বাধীনতা অর্জনের মতো গুরুত্বপূর্ণ। এই দুর্নীতিতে ব্যক্তিরাই লাভবান হচ্ছে। ব্যাংক উজাড় হয়ে যাচ্ছে। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে যাচ্ছে। তখন মনে হয়, রাষ্ট্রের চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়-এ নীতিতে সবকিছু নির্ধারিত হচ্ছে। যুগে যুগে দেশের সার্বিক কল্যাণের কথা বলতে গেলেও বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে যেখানে সাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ১৮ শতাংশ, সেটা ২০২২-এ এসে দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ৬৮ শতাংশে। ১৯৭১ সালে যেখানে গড় মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ১৩৪ মার্কিন ডলার, সেখানে ২০২২-এ এসে মানুষের গড় মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলার। এরই মধ্যে আমাদের দেশের একজন অর্থনীতিবিদ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন। শুধু তাই নয়, আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে মহাকাশে একটি স্যাটেলাইট প্রেরণ করতেও সক্ষম হয়েছি। এই যে এত সবকিছু প্রাপ্তি আসলে আশার উদ্রেককারী ও প্রশান্তিদায়ক বটে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে আমরা আজ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর দ্বারপ্রান্তে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় যে গুণগত শিক্ষার কথা বলা হয়েছে, আমাদের শিক্ষার মানকে কি আমরা সে পর্যায়ে উন্নীত করতে পেরেছি? নাকি আমরা বহির্বিশ্ব থেকে পঠন-পাঠনের কিছু নিয়মনীতি ধার করে এনে আমাদের পঠন-পাঠনের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছি। আমরা কি আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাকে আরো বেশি উপভোগ্য করে তুলতে পেরেছি? এসব প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সুস্থ রাজনীতির চর্চা গণতান্ত্রিক দেশে বাঞ্ছনীয়। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে শিক্ষাঙ্গনে যে অসুস্থ রাজনীতির চর্চা যুগ যুগ ধরে চলমান, এর সমাধান আসলে কোথায়? সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, মূল্যবোধের অবক্ষয় আমাদের তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। অপরাধপ্রবণতা ও আত্মহত্যার সংখ্যা যেহারে বেড়েছে, এতে করে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা করা খুব বেশি কঠিন কিছু হবে বোধ করি না। নারী শিক্ষার হার বেড়েছে, নারীর কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু নারীর প্রতি সহিংসতা কি কমেছে? ১৯৭১ সালের আজকের দিনে হাজার বছরের পরাধীনতার শেকল ভেঙে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি। আর সেই ঘোষণার পথ ধরেই ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশ। এ অর্জন কালের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার। এ গর্ব বাঙালির। বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই, বিশ্বের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার এক দেশ। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিশ্বের বুকে এক স্বনির্ভর রাষ্ট্র। উন্নয়নের ধারাবাহিকতার প্রতীক। শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, শিল্প, কৃষি, মানব উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ প্রগতির মডেল। তাই স্বাধীনতার ৫৩ বছরে বাঙালি আজ শ্রদ্ধায় স্মরণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তার দেখানো সোনার বাংলার স্বপ্নের পথ ধরেই আজকের বাংলাদেশ। যার নেতৃত্বে আছেন বঙ্গবন্ধুরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরো জাতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী বীর সন্তানদের। স্মরণ করে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোন জাতি স্মরণ করে দেশের জন্য, বাংলা ভাষার জন্য, স্বাধিকারের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা প্রতিটি মানুষকে। বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকরা শোষণ এবং বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথগ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে হাত দেন জাতির পিতা। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটের আঘাতে থেমে যায় সেই প্রক্রিয়া। ’৭৫ পরবর্তী সময়ে সরকার আইন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে রাখে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেই বন্ধ দরজা খুলে দেয়। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় আবার চলতে শুরু করে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা চালু করেছে। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ডিগ্রি পর্যন্ত পড়ালেখা অবৈতনিক করে দিয়েছে। গৃহহীন মানুষের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দ্বিগুণ করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পেয়েছেন সাউথ অ্যাওয়ার্ড। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দিয়ে বাংলাকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদা দেয়ার কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের স্বীকৃতির লড়াইও চলছে। প্রাপ্তির খাতায় অনেক কিছু থাকার পরও একথাটি অনেক বাঙালির মনে ঘুরে ফিরে বারবার আসছে, যে স্বাধীনতার প্রত্যাশিত ফসল কি সাধারণ বাঙালির ঘরে উঠেছে! স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এসে আমরা কাঙ্ক্ষিত বাংলা দেশের কতটুকু পেলাম? দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির কারণে আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে পারছে না। যদি দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ করা না যায়, তাহলে স্বাধীনতার প্রত্যাশা পূর্ণতা পাবে না। দুর্নীতির শিকড় তুলে ফেলতে হলে সমাজের ভেতরের ঢুকে যাওয়া দুর্নীতি দূর করার জন্য অভিযান জোরদার করতে হবে। অধিকার আদায়ের জন্য আত্মসচেতন হওয়ার প্রেরণা দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। সমাজ জীবনে ব্যক্তি স্বাধীনতা, নারী মুক্তি আন্দোলন, নারী শিক্ষা, গণশিক্ষা, সংবাদপত্রের বিকাশ, সর্বোপরি গণতান্ত্রিক অধিকারের চেতনা ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করেছে। আমাদের সাহিত্যে বিশেষ করে কবিতা ও কথাসাহিত্যে যতটা ব্যাপ্তি পেয়েছে, এর বড় অবদান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। গণসচেতনতামূলক গান, নাটক, চলচ্চিত্র ব্যাপকভাবে রচিত হয়েছে স্বাধীনতার পর। তবে আশানুরূপভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কিংবা গৌরবগাথা শিল্প-সাহিত্যে আজও প্রতিফলিত হয়নি। এখনো আমরা চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রত্যাশার তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে আছি। বঙ্গবন্ধু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স করেছেন। তার কন্যা স্বাস্থ্যসেবা আরও তৃণমূলে নিয়ে যেতে কমিউনিটি ক্লিনিক করেছেন। তারপরও সঠিক তদারকি আর অনিয়মের কারণে চিকিৎসাসেবা অসন্তুষ্টি কাটিয়ে উঠতে পারছে না। আজও শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি জাতীয়করণ করা হয়নি। এর ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত মান অর্জন হচ্ছে না। শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি ও শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া সাফল্যের আশা-দুরাশা মাত্র। সর্বোপরি অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি ছাড়া সাফল্য সম্ভব নয়। আঞ্চলিক বিবেচনায় নানা সূচকে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে নানা দিক দিয়েই এগিয়ে আছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ও ছাত্রী সমতা বিধান হয়েছে। এ ছাড়া মাতৃমৃত্যুর হার ও জন্মহার কমানো, প্রাথমিক শিক্ষায় শতভাগ শিশুকে স্কুলে আনাসহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে অকুণ্ঠ প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে সহজে ব্যবসা করার সূচকে এখনো পিছিয়ে বাংলাদেশ। নতুন বছরে আমরা যেন এ সূচক সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।

দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সবার আগে নিশ্চিত করা জরুরি। জনমানুষের সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা-দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকুক। গণতন্ত্রহীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, রাজনৈতিক হানাহানি, সংঘাত, লড়াই আর সহিংসতা আর ফিরে না আসুক। নারীর প্রতি আরো মানবিক হোক রাষ্ট্র। আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হোক। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারকাজ অব্যাহত থাকুক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক দেশ হোক প্রিয় মাতৃভূমি। সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার অন্যতম বড় অবলম্বন হলো নির্মল পরিবেশ। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনগত উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা অন্যতম দেশ। এখানে আবহাওয়াগত পরিবর্তন দ্রুত ঘটছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা আমাদের বাড়াতে হবে। পরিবেশের অন্যতম বড় উপাদান নদী। অথচ নদীমাতৃক এই দেশের নদীগুলো নাব্য হারাচ্ছে, দখল ও দূষণের শিকার হয়ে বিপন্নপ্রায়। তিস্তা চুক্তি ঝুলে আছে বহুদিন ধরে। নতুন বছরে এ ইস্যুটি যেন সফল পরিণতি পায়। আর ঢাকার চারপাশের দখল ও দূষণের শিকার নদীগুলো উদ্ধার করে নির্মল পরিবেশের প্রত্যাশাও যেন পূরণ হয়। প্রত্যাশা যেমন বিপুল, বাংলাদেশের সম্ভাবনাও তেমনি বিপুল। চাওয়া আর পাওয়ার এই হিসাব মেলানোর মধ্য দিয়ে বিদায়ী বছরটি ছিল বৈচিত্র্যময়। নতুন বছরে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির যেন সুসমন্বয় হয়- এ প্রত্যাশা দেশবাসীর। পরিশেষে, এই বিজয়ের মাসে হৃদয়ের সব ভালোবাসা উজাড় করে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সব বীর শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের। যারা আমাদের মুক্ত করেছে, আমাদের স্বাধীন সবুজ ধান খেতে দাঁড়িয়ে নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে, যারা আমাদের একটি মানচিত্র আর আমাদের প্রিয় লাল-সবুজ পতাকা এনে দিয়েছে, তাদের ঋণ কভু শেষ হবে না, হওয়ার নয়। মুক্তিযুদ্ধের পরের প্রজন্ম হিসাবে তাদের স্যালুট জানাই। সবাইকে মহান বিজয়ের ৫৩ বছর পূর্তিতে রক্তে ভেজা অশ্রুসিক্ত শুভেচ্ছা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত