ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নির্বাচনি আমেজে মহান বিজয় দিবস

বাংলাদেশ হোক নৈরাজ্যমুক্ত শান্তিপ্রিয় ভূমি
নির্বাচনি আমেজে মহান বিজয় দিবস

৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের মধ্য দিয়ে একাত্তরের আজকের এই দিনে অর্জিত হয়েছিল আমাদের মহান বিজয়। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় বিশ্ব দরবারে। আগামী মাসের ৭ তারিখে দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনি আমেজে এবার মহান বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে। যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাদের মধ্যে অধিকাংশই নির্বাচনি এলাকায় অবস্থান করছেন। ভোটারদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের নামে ভোটের অনানুষ্ঠানিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ ছাড়া রাজধানীসহ দেশের মহানগর কিংবা শহরগুলোতে যারা অবস্থান করছেন, তারাও মহান বিজয় দিবস পালনের পাশাপাশি জনসংযোগে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। সর্বত্র নির্বাচনি আমেজে রয়েছেন প্রার্থী ও ভোটারা। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশীদারিত্বমূলক করার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের ২৯টি নিবন্ধিত দল নির্বাচনে অংশ নিলেও নির্বাচন থেকে বিরত রয়েছে বিএনপি। তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। রবং নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য জ্বালাওপোড়ায়ের পথ বেছে নিয়েছে। আগামী নির্বাচনে অংশ না নেয়ার মধ্য দিয়ে এই দলটিকে আরো অন্তত ৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকতে হবে। দলটি আগামী দিনে রাজনীতির মাঠে কতটা টিকে থাকতে পারবে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্র্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। আর সেটির পুনরুদ্ধার ঘটে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। এই বিজয়ের মহানায়ক হিসেবে যিনি ইতিহাসের চির অম্লান ও ভাস্বর হয়ে আছেন, তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মহান স্বাধীনতা অর্জন কোনো আকস্মিকতা ছিল না। দীর্ঘদিনের পথ পরিক্রমায় আজ আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম্ব দেশের নাগরিক।

মহান বিজয় দিবস আজ। বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১-এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সেই হিসাবে বিজয়ের ৫২ বছর পূর্তির দিন আজ। এর মধ্য দিয়ে এলো হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পরপরই শুরু হয় বাঙালির ওপর পশ্চিম পাকিস্তানিদের নির্যাতন। রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামজিক-সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনের ওপর তারা হস্তক্ষেপ শুরু করে। দুর্বিষহ হয়ে ওঠে নিরীহ বাঙালির জীবন। এ অবস্থায় মানুষ বসে থাকেনি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। তবে স্বাধীনতার ৫২ বছরে এসেও আমরা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড পরিহার করতে পারিনি। মহল বিশেষের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে শান্তিপ্রিয় মানুষ আজ বড়ই অসহায়। জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিনিয়ত কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, সেই সর্বসম্মত ব্যবস্থা আজো ঠিক করা সম্ভব হয়নি। কেমন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, সেটি নিয়েই রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বাকযুদ্ধ। শুধু পাকিস্তান ছাড়া বিশ্বের অন্যসব দেশে যেভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশেরও সেভাবে হবে- এমন আশা-আকাঙ্ক্ষা এদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের। তবে বিএনপি অনির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে ভোট বর্জনের রাজনীতিতে নেমেছে। সর্বোপরি এটা বলা যেতে পারে, বর্জন করে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না। ভোট বর্জন কোনো রাজনৈতিক সমাধান হতে পারে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত