রমজানে পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ

কোনো আহ্বানই ভাঙতে পারছে না সিন্ডিকেট

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

পবিত্র রমজান মাস আসছে। আর ব্যবসায়ীরাও প্রস্ততি নিচ্ছে এই সময়ের নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর। রমজান মাসে রোজাদাররা যথাসাধ্য চেষ্টা করেন উন্নত মানের খাবার খাওয়ার। অন্য সময়ের তুলনায় ইফতার ও সাহরির সময় মানুষ খাবারে কিছুটা বিশেষত্ব আনার চেষ্টা করেন। তবে মানুষের আয় সীমিত থাকায় তারা ইচ্ছা করলেই বিশেষ বিশেষ খাবার জোগাড় করতে পারেন না। অতীত থেকে জানা যায় রমজানকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর একটা সুযোগ গ্রহণ করে। তারা পণ্য সরবরাহে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বৃদ্ধি করে। আর তাতে নাজেহাল হতে হয় সীমিত আয়ের রোজাদারদের। তাই প্রতি বছর রমজান আসার আগে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যবসায়ী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) নেতারা। এবারও অনুরূপ আহ্বান জানানো হয়েছে। আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে এক মতবিনিময় সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দুয়েকজন ব্যবসায়ীর অসততার কারণে পুরো ব্যবসায়ী সমাজের বদনাম হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘যারা অনৈতিকভাবে বাজারে সংকট তৈরি করবে আমরা তাদের সঙ্গে নেই। ব্যবসায়ীদের কেউ অসাধু বলুক, সিন্ডিকেট করা হচ্ছে এমন কোনো কথা উঠুক, তা আমরা শুনতে চাই না। আমরা চাই ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করুক। কোনো সমস্যা হলে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু আমাদের কোনো বদনাম হোক তা আমরা চাই না। খেজুরসহ ফলমূল নিয়ে ভ্যাট-ট্যাক্সজনিত সমস্যা সমাধানে এফবিসিসিআই আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলেও জানান তিনি। বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় জেলা প্রশাসকের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে জেলা চেম্বারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে নিত্যপণ্যের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তবে ব্যবাসায়ীদের এমন আহ্বান ও প্রতিশ্রুতি বহু বছর ধরে মানুষ শুনে আসছে। কিন্তু কোনো সুফল মিলেনি। রমজান মাসে পণ্য মূল্য বৃদ্ধি পায়। সরকারের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়েও কোনো সমাধান হয় না। বাস্তবতা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন আছে কিন্তু ভোক্তাদের কোনো সংগঠন নেই। রবং ভোক্তারা দাম বাড়লে হুমড়ি খেয়ে পড়েন কেনাকাটা করার জন্য। ফলে দাম অনায়াসে বেড়ে যায়। সম্প্রতি পেঁয়াজ নিয়ে কি কাণ্ডই না হলো। ভারত বাংলাদেশের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিতে না দিতে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেল। রাতারাতি অনেককে অনেক বেশি অর্থ হাতিয়ে নিল বাজার থেকে। দাম বাড়লে ক্রেতারা কি করবে কিংবা এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরাই বা কি ভূমিকা পালন করবেন সে ব্যাপারে একটা নীতিমালা থাকা দরকার। ব্যবসায়ীরা কারণে অকারণে পণ্যের মূল্য বাড়াবেন আর ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে কিনবেন এটা কোন স্বাভাবিকতা নয়। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমাদের দেশের যে প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের আরো সক্রীয় হতে হবে। তানা হলে অসচ্ছল মানুষের দুর্ভোগ কোনোদিন কমবে না। তবে আশার কথা হচ্ছে টিসিবি পবিত্র রমজান মাসে তাদের নির্দিষ্ট পণ্যগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করায় মানুষ অনেকটা স্বস্থিতে থাকে।