‘লেটস টক’ পর্বে প্রধানমন্ত্রী

তরুণদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনই লক্ষ্য

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ তারুণ্যে ভরপুর একটি দেশ। দেশের জনসংখ্যার বড় একটি অংশই তরুণ ও যুবক। শুধু সংখ্যাতেই নয়, সমাজ পরিবর্তনেও তাদের ভূমিকা অনেক বেশি। দেশের তরুণ ও যুব সমাজ অর্থনীতি, রাজনীতি, খেলাধুলা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করছেন। নতুন নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তরুণরা এগিয়ে আসলেই এগিয়ে যাবে দেশ। কেননা তরুণদের মধ্যে রয়েছে অদম্য প্রাণশক্তি। তারা নতুন কিছু দেখলেই সেটা জয় করতে চান। তরুণরা যেন ভালো ভালো কাজ করতে পারেন, দেশের নীতিনির্ধারকদের সেই ক্ষেত্রগুলো তৈরি করে দিতে হবে। তবে ‘তরুণ আর তারুণ্য দুটি আলাদা জিনিস। একটা নির্দিষ্ট বয়সের মানুষকে আমরা তরুণ বলি। কিন্তু তারুণ্য সব বয়সি মানুষের মধ্যে থাকতে পারে। তাই তরুণদের চেয়ে তারুণ্যটাই গুরুত্বপূর্ণ। তরুণ ও তারুণ্যের মিশেলে যদি কাজ করা যায়, তাহলে সেই কাজ দেশ ও মানুষের জন্য ভালো হবেই।’ তরুণরা পৃথিবীর ভবিষ্যৎ। তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করা সমাজের দায়িত্ব। তরুণদের কাজ করার একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করার জন্য সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। সমস্যাগুলো খুঁজে বের করে সেগুলো সমাধান করতে হবে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠন, যেখানে মূলত তরুণদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের অনেকাংশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটেছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বৈশ্বিক সূচকে। এর পেছনে অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে তরুণদের উদ্যম। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণদের কথা শুনতে চান, নিজের ভাবনার কথাও তাদের জানাতে চান। গত শুক্রবার সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ‘লেটস টক’ সিরিজের ৫৩তম পর্বে উপস্থিত হয়ে সেই সুযোগ করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারা দেশ থেকে বাছাই করা ২৫০ জনের মতো তরুণ এতে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে তারা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরেন ও নানা বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে এই আলোচনাটি সম্প্রচার হওয়ার কথা রয়েছে। এবারের ‘লেটস টক’-এ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দৃষ্টিভঙ্গী বর্ণনা করেছেন। এটি বাস্তবায়নে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ রূপরেখার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ জনশুমারির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪ ভাগের ১ ভাগ তরুণ, যাদের বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে। সংখ্যায় তা ৪ কোটি ৭৪ লাখের বেশি। এই জনমিতিকে কাজে লাগাতে তরুণদের মতকে প্রাধান্য দিতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মূলত এ কারণেই তরুণদের সঙ্গে দেশের নীতি নির্ধারণী বিষয়ে আলোচনা, তাদের চাওয়া-পাওয়াগুলো সরাসরি জানা এবং দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আলোচনার জন্য তরুণদের এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ জানুয়ারি, আর আজ ইশতেহার ঘোষণা করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এতে তরুণদের উদ্দেশ্য করেও নানাবিধ বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, দেশের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে তরুণদের সেতুবন্ধন গড়ে দিতে ২০১৪ সাল থেকে ইয়াং বাংলা ‘লেটস টক’ শিরোনামে এ আয়োজন করে আসছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো এ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বছর আবারও তিনি আসলেন। তরুণদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনই ঘটানই এ ধরনের অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনার মহান দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধান এমন কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী এমনি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তরুণ সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা নিজে শুনছেন এবং তিনি রাষ্ট্র পরিচালনায় সেটি সংযোগ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যোগ তরুণ সমাজের জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর হবে বলে আশা করা যায়।