নতুন বছরে তারুণ্যের প্রত্যাশা

আজহার মাহমুদ

প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

একটি বছর শেষ হওয়া মানে আরেকটি নতুন বছর পাওয়া। কিছু পুরাতন হয়ে গেলে নতুন কিছু পাওয়াটাই স্বাভাবিক। এটাই পৃথিবীর নিয়ম। ২০২৩ শেষ, আমরা ২০২৪ সালে পদার্পণ করব। নতুন বছর মানেই নতুন কিছু। প্রত্যাশার পাল্লাটাও একটু ভারি হবে। চাওয়াটাও একটু বেশি হবে। এটা সাধারণ বিষয়। আমরা যখন নতুন কিছু নিতে যাই, তখন সবসময় ভালোটাই চাই। আমরা সবসময় পুরাতন জিনিসটার চাইতে আরো আপডেট এবং ভালো জিনিসটাই খুঁজি এবং সেটাই নিই। ঠিক সেভাবে ২০২৩ সালের সব ভুলভ্রান্তি ভুলে গিয়ে আমরা পেতে চাই আরো সুন্দর এবং সাজানো গোছানো একটি বছর।

২০২৪ সালের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বছরেই নতুনভাবে সরকার গঠন হবে। তাই নতুন বছরটি শুরু হবে নতুন পরিকল্পনার মাধ্যমে। আমরা জানি পরিকল্পনা ছাড়া কিছুই সঠিকভাবে সফল করা যায় না। আর এই পরিকল্পনায় সর্বপ্রথমেই থাকতে হবে তরুণদের কিছু চাওয়া। নতুন বছরটা যেনো তরুণদের কথা মাথায় রেখে কাজ শুরু করে সরকার, সেটাই বর্তমান তরুণদের প্রত্যাশা। তরুণদের কথা মাথায় রাখা বলতে, তাদের নিয়ে একসঙ্গে সোনার বাংলা সাজাতে হবে। দেশের উন্নয়ন করতে হলে অবশ্যই তরুণদের সাথে নিয়ে এগুতে হবে। সুযোগ দিতে তরুণদের। তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে প্রচুর। বেকার তরুণ যুবকদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হবে। নতুন বছরটা হোক তরুণদের জন্য একটি আশির্বাদের বছর। সোনার বাংলা গড়ার জন্য তরুণদের এই প্রত্যাশা পূরুণ করাটা অত্যন্ত জরুরি বলে আমি বিশ্বাস করি। এবারের নতুন বছরটি বাংলাদেশের জন্যও এক নতুন আশার আলো হবে। নতুন বছরে নতুনভাবে বাংলার মানুষ পাবে বাংলাদেশের সরকার। এবার যেন সরকার আরও বেশি তরুণনির্ভর হয়, আরও বেশি তরুণদের জন্য কাজ করে সেই প্রত্যাশা রইল। বর্তমান তরুণপ্রজন্ম কিন্তু কথায় নয় কাজে বিশ্বাস করে। তাদের আশ্বাস নয়, বিশ্বাস দিতে হবে। তরুণদের সাথে যদি ছিনিমিনি খেলা হয় তবে সেটা দেশের জন্যই ক্ষতি হবে। মনে রাখতে হবে তরুণরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের সুযোগ না দেওয়া মানে দেশকে ধ্বংস করে দেওয়া। সোনার বাংলা গড়ার কারিগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই তার তরুণ বয়সে দেখিয়েছেন তরুণরা কতটা করতে পারে দেশের জন্য। আমরা বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়লেই জানতে পারব তরুণ বঙ্গবন্ধু কতটা সফল ছিলেন। সেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বর্তমান তরুণ প্রজন্মও সফল হতে চায়। আর সরকার যিনিই হোক তরুণদের সেই সফলতা এনে দিতে হবে, এটাই তারুণ্যের চাওয়া। তরুণদের পাশে থেকে তাদের সুযোগ দিয়ে দেশকে আরো সমৃদ্ধ এবং সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে আমাদের সবার। এছাড়াও আমাদের দেশে আজ খেলার মাঠের বড় সংকট। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ খেলতে পছন্দ করে। অবসর সময়ে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার অন্যতম উপায় হচ্ছে খেলাধুলা করা। কিন্তু এই খেলাধুলা করার জন্য কোনো মাঠ এখন পাওয়া যায় না। সব মাঠে আজ দালানে পরিপূর্ণ। তারুণ্যের প্রত্যশা এই সমস্যা সমাধান করে প্রতিটি এলাকায় একটি করে উন্মুক্ত খেলার মাঠের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে মাদকের আগ্রাসন থেকে বাঁচতে চাইলে খেলার মাঠের বিকল্প নেই। আমরা যদি আমাদের আশপাশে লক্ষ্য করি তাহলে দেখতে পাবো তারাই ভালো আছে যারা খেলাধুলা করে। আমাদের দেশে বর্তমানে মাদকের ছড়াছড়ি। প্রতিটি স্থানেই এখন মাদক পাওয়া যায়। এখনও এই বাংলার মাটিতে চাইলেই মাদক সংগ্রহ করা যাবে। শুধু ইচ্ছা থাকাটাই মুখ্য বিষয়। ইয়াবা থেকে শুরু করে গাজা, মদসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য এখন তরুণদের হতের নাগালে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহীনি এখনো তাদের নাগাল খুঁজে পাচ্ছে না। সমাজে ভালো মানুষের মুখোশ পরে আড়ালে মাদকের ব্যবসা করাটাই এখন অনেকের আদর্শ। যা আমরা খালি চোখে দেখি না অনেকে। তবে যারা দেখি তারাও বলতে পারি না ভয়ে। তবে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির আরো দক্ষ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। তা না হলে হাজারো মাদকবিরোধী অভিযান করলেও মাদকের আগ্রাসন কখনো থামবে না। আড়ালে মাদক ব্যবসা চলতেই থাকবে। কারণ মাদক ব্যবসায়ীরা তখন মনে করবে তাদের ধরার ক্ষমতা আইনশৃঙ্খলা বাহীনিরও নেই। তাই তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে হলে মাদকের ছড়াছড়ি বন্ধ করতে হবে। নতুন বছরে বাংলার মানুষ নতুন মেয়াদে সরকার পাবে। সরকার যিনিই হবেন না কেনো তারুণ্যের প্রত্যাশাগুলো মাথায় রখে কাজ শুরু করার অনুরোধ রইল। পরিশেষে বলতে চাই- তারুণ্যের চাওয়া এবং প্রত্যশাগুলো যেনো প্রাপ্তিতে দিয়ে পূরণ হোক।