আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পর্যটন খাত তুলে ধরার এখনই সময়

বাপ্পি সরদার

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশের সব থেকে সম্ভাবনাময়ী খাত পর্যটন শিল্প। সব থেকে অবহেলিত খাতও পর্যটন শিল্প। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে পর্যটন খাতের উন্নয়ন করতে পারলে বাংলাদেশের জিডিপিতে ২০ ভাগ পর্যন্ত অবদান রাখতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পর্যটন খাতকে তুলে ধরতে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত।

আগামী প্রজন্মের নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মাণে পর্যটন খাতে মাস্টার প্ল্যান জরুরি। আন্তর্জাতিক বাজারে পর্যটন খাতকে তুলে ধরতে পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও হোটেল-মোটেলের সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করা সম্ভব।

গবেষণায় দেখা গেছে, ভ্রমণ করতে গিয়ে শতকরা ৮৭ জন হয়রানির শিকার হন। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে বিদেশি গাছ রোপণ ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রকৃতি তার সৌন্দর্য হারাচ্ছে। এগুলো অচিরেই বন্ধ করতে হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না এবং দেশীয় প্রজাতি গাছের চারা রোপণে বাধ্যবাধকতা রাখতে হবে। পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য টুরিস্ট পুলিশের আধুনিকায়ন, অর্থ বরাদ্দ ও লোকবল বৃদ্ধি করতে হবে। জাতীয় পর্যটন দিবস ঘোষণা, পর্যটন খাতকে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি এবং পাঠ্যপুস্তকের সর্বস্তরে পর্যটন শিল্পের প্রবন্ধ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিদেশে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সম্প্রসারণ করতে দূতাবাসগুলোতে আলাদা ডিপার্টমেন্ট চালু এবং বিদেশি বিনিয়োগ আনতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভ্রমণের নীতিমালা শিথিল করতে হবে।

সরকারিভাবে বাংলাদেশে কতগুলো পর্যটন স্পট আছে এবং আগামীতে নতুন স্পট আবিষ্কারের ক্ষেত্রে গবেষণা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে। দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো আধুনিকায়ন, উন্নত যাতায়াত ও পরিবহন ব্যবস্থা এবং পর্যটকদের জন্য আবাসন ও রুচিসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করা। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, পর্যটন কর্পোরেশন, পর্যটন মন্ত্রণালয় ও যুব মন্ত্রণালয়কে অন্তর্ভুক্ত করে ‘স্বাধীন টুরিস্ট বোর্ড’ চালু করতে হবে। পর্যটকদের সঠিক পরামর্শ ও গাইড করার জন্য প্রশিক্ষিত গাইডার তৈরিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা এবং হয়রানি বন্ধে বিধি-নিষেধ জারি করতে হবে। পর্যটননির্ভর বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে গ্রামীণ পরিবেশ তুলে ধরার মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে তুলে ধরা সম্ভব। প্রাকৃতিক পরিবেশ সমুন্নত রাখতে বৃক্ষ রোপণের গুরুত্ব অবধারিত।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। সবুজ আন্দোলন পরিচালনা পরিষদ।