ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের যাত্রা শুরু

সংসদ হোক প্রাণবন্ত ও জনগণের আশার প্রতীক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের যাত্রা শুরু

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর নির্বাচিত সদস্যরা গতকাল শপথ গ্রহণ করেছেন। প্রথমে আওয়ামী লীগ এবং তারপর জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য দল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরাও পর্যায়ক্রমে শপথবাক্য পাঠ করেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথবাক্য পাঠ করান। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীরা শপথ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের কার্যক্রম শুরু হলো। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন হবে কি না কিংবা নির্বাচন কমিশন এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে পারবে কি না তা নিয়ে ভোটের আগে অনেক সংশয় ছিল। বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচনে যাবে না বলে শর্ত দিল। নির্বাচন কমিশন ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিল। বিএনপি দ্বিতীয় দফার শর্ত দিয়ে জানাল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু সাংবিধানিক বাধ্যবদকতায় নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকালীন সরকরের অধীনে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে গেল। তপশিল ঘোষণা করল। বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি বরং তারা এই নির্বাচন বর্জনের ডাক দেয়। কিন্তু অন্তত ২৮টি রাজনৈতিক দল যখন নির্বাচনে অংশ নিল তখন তারা নির্বাচন প্রতিরোধ করার জন্য মাঠে নামল। বিএনপিকে দূরে রেখে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না এমনটি ভেবে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে ছিল। তারা মনে করেছে জাতিসংঘ বাংলাদেশে নির্বাচন বন্ধ করে দেবে। আর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নির্বাচন ব্যহত করবে। পশ্চিমা শক্তিগুলো বিএনপির পাশে দাঁড়াবে। বিএনপির ইচ্ছা-অনিচ্ছার প্রতি অবিচল থাকবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে। কিন্তু যখন দেখা গেল এসব পক্ষগুলো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করল না তখন বিএনপি হতাশ হয়ে বলতে লাগল কোনো বিদেশি পর্যবেক্ষক বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসবে না। অথচ দেখা গেল বিদেশি পর্যবেক্ষকরা বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করল। তারা সাংবাদিক সম্মেলন করে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করল। নির্বাচনে জয়লাভ করলে কোনো বিদেশি দেশ বাংলাদেশের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না। বিএনপির সেই প্রত্যাশাও নিরাশায় পর্যবাসিত হলো। ভারত, রাশিয়া, চীন, সউদি আবর, কমনওয়েলথসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের এই নিরংকুশ বিজয় কেবল সাধারণ জনগণেরই বিজয়। আজ নতুন মন্ত্রীসভা শপথ গ্রহণ করবে। তারপর আগামীতে বসবে সংসদের অধিবেশন। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য এই অধিবেশন প্রাণবন্ত হবে। মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে সেই প্রতাশা এ দেশের জণগণের। যেহেতু বিএনপির মতো একটি বড় দল এবারের সংসদে নেই। অন্য যারা আছে তাদের সংখ্যাও সন্তোষজনক নয়। তাহলে সংসদ কীভাবে প্রাণবন্ত হবে সেই বিষয়টি সামনে আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা নিতে হবে। আওয়ামী লীগকে বেশি বেশি করে আত্মসমালোচনা করতে হবে। জনগণের জন্য যা কল্যাণকর সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সংসদীয় গণতন্ত্রের বিকাশে রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। কার্যকর রাজনৈতিক দল গঠনে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রচর্চা অপরিহার্য। সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে অধিকতর সচেতন হতে হবে। সংবিধান সমুন্নত রেখে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন প্রার্থীরা। ভোট প্রতিহতকারীদের হুমকি উপেক্ষা করে মানুষ ভোট কেন্দ্রে গেছে। তারা যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তাদের ভোট দিয়েছে তাদের আশা- আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত