চি ঠি প ত্র

একটি গাছ একটি প্রাণ

প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

কবি, দার্শনিক, বিজ্ঞানী নির্বিশেষে সবাই স্বীকার করেন, প্রতিটি কাজের ঠিক সমান প্রতিফল উৎপাদন অবশ্যম্ভাবী। আমরা অন্নের জন্য, শস্যের জন্য বসুন্ধরাকে আঘাত করি, তার অনিষ্ট করি। এই অনিষ্ট নিবারণ করার জন্য আমরা তাকে যদি কিছু দেই, তো আমাদেরই মঙ্গল। বৃক্ষরোপণের মধ্য দিয়ে ধরণীর প্রতি কর্তব্য পালন করলে একদিকে যেমন তার ‘ক্ষত বেদনা নিরাময়’ হতে পারে, অপরদিকে তরুছায়া ফুল ও ফলের ধরণী হয়ে উঠতে পারে শ্যামল সুন্দর। মনে রাখতে হবে, একটি গাছ হলো একটি প্রাণ। চারাগাছ ঠিক শিশুর মতোই যত্নে ও ভালোবাসায় বেড়ে ওঠে। ঘটা করে শিশুর জন্মদিন পালন করলেই যেমন দায়িত্ব শেষ হয় না, তেমনি বছরে একবার বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ পালন করলেও বনের সমৃদ্ধি ঘটে না। আসলে প্রয়োজন নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও একাগ্রতা। বাড়ন্ত শিশুর ভালো-মন্দের দিকে যেমন সারাক্ষণ লক্ষ রাখতে হয়, চারাগাছের পুষ্টি ও বিকাশের দিকেও তেমনি লক্ষ্য রাখা দরকার। এছাড়া গাছপালার সমৃদ্ধির ফলে অন্যদিক দিয়েও আমরা লাভবান হই। গাছ আমাদের মনকে প্রসন্ন করে। আমাদের ফল, সবজি ও ফুল দিয়ে উপকার করে। বৃক্ষ আমাদের মূক সঙ্গী, আমাদের দুঃখ-সুখের অনন্তকালের অংশীদার। এক হিসাবে আমাদের জীবনেরই ওপিঠ ওরা। আমরা যে কার্বন-ডাই অক্সাইড বর্জন করি, ওরা তা গ্রহণ করে আবার আমাদের অক্সিজেন ফিরিয়ে দেয়। জীবনধারণের পক্ষে এই অক্সিজেন অপরিহার্য। বস্তুত, জীবনের যে মূল উপাদান-আলো-বাতাস, জল-স্থল, উদ্ভিদ আর জীব সমাজকে ঘিরে চক্রাকারে আবর্তিত, তাদের সবই অদ্ভুত এক ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ। আমরা যেন উপলব্ধি করার সুযোগ পাই, উদ্ভিদ জগতের সঙ্গে যে বিরাট ব্যবধান আমরা গড়ে তুলেছি, তা আমাদের অজ্ঞানতাপ্রসূত।

মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান

পাঠান পাড়া, সিলেট