ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চি ঠি প ত্র

কৃষি বাঁচলে দেশ বাঁচবে

কৃষি বাঁচলে দেশ বাঁচবে

বৈশ্বিক রাজনীতির কারণে খাদ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় নাগরিক জীবন বিপন্ন। হাটবাজারে নিত্যপণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। তাহলে কেন এ অস্থিরতা? কৃষির সঙ্গে জড়িত কিছু লোকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এর বড় কারণ নিজ দেশের কৃষকদের অবমূল্যায়ন ও মজুতদারি। কৃষক কষ্ট করে ফসল ফলায়, কিন্তু পায় না ফসলের ন্যায্যমূল্য। সরকার কৃষিতে যে ভর্তুকি দেয়, তা সঠিকভাবে পায় না কৃষক। যদি উন্নত বিশ্বের দেশের দিকে আমরা লক্ষ করি, দেখা যায় তারা কৃষির আধুনিকায়ন ঘটিয়ে বিশ্বকে কৃষি বা খাদ্যের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন দেশের কোম্পানি কৃষিজমি কিনে রাখছে। একটি উদাহরণ দিই। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারে জন্য বিভিন্ন কোম্পানিকে টাকা দিতে হয়। একটা সময় আসবে, যখন কৃষিজমি তাদের কাছ থেকে ইজারা নিতে হবে। সেদিন বেশি দূরে নয়। করোনা মহামারির সময় দেখা গেছে টাকা আছে, খাদ্য নেই, চিকিৎসা নেই। আমরা যদি কৃষিতে সফল হতে না পারি; পাট, গম, সরিষা, লাল চিনির মতো হারাতে বসি নিজ দেশের অর্থকরী সব ফসল, তাহলে আমাদের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে। এখনই সময় এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার। তা না হলে অস্থিরতা শেষ হওয়ার নয়। প্রধানমন্ত্রী যেমনটি বলেছেন, কৃষিকেই আমাদের সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ হিসাবে গুরুত্ব দিতে হবে। সেজন্যই যথোপযুক্ত বাজেট সহায়তা ছাড়াও সহজ শর্তে ঋণ সম্প্রসারণ এবং মার্কেটিং সমর্থন দিয়ে যেতে হবে। কৃষিভিতিক শিল্পের পাশাপাশি কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য সব ধরনের নীতি সমর্থন দিতে হবে। বদলে যাওয়া গ্রামবাংলায় কৃষি খাতের প্রসারের জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের হাতে প্রয়োজনীয় পুঁজির জোগান দিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য অল্প সুদে ২৫ হাজার কোটি টাকার যে পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে মনোযোগ বাড়াতে হবে। বাস্তবায়নের গতি কতটা, তা দেখার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মনিটরিং জোরদার করতে পারে। এ কর্মসূচি যেন অব্যাহত থাকে, সেজন্য আরো অর্থ পাইপলাইনে রাখা যেতে পারে। এই কর্মসূচির মধ্যে সোলার সেচ প্রকল্প যুক্ত করা উচিত। পাশাপাশি কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কর্মসূচির অধীনে যে ভর্তুকির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তা এই সোলার সেচ উদ্যোগের জন্যও প্রযোজ্য হোক।

মো. ইকরামুল হক মোল্লা

শিক্ষার্থী, আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত