ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পণ্যের অতিরিক্ত মূল্য রোধে হটলাইন

দাম সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
পণ্যের অতিরিক্ত মূল্য রোধে হটলাইন

এবার জাতীয় জরুরি সেবা হটলাইন ৩৩৩ নম্বরে নতুন সেবা যোগ হচ্ছে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেশি নেওয়া হলে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। তারপর সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ। গত সোমবার সচিবালয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৩৩৩ নম্বরে বর্তমানে যেসব সেবা আছে, সেগুলো চালু থাকবে। পাশাপাশি ৩৩৩ নম্বরে ফোন করার পর আরেকটি ডিজিটে চাপ দিয়ে নতুন সেবাটি পাওয়া যাবে। তিনি জানান, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এই সুবিধা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সময়ের মধ্যে নতুন একটি ওয়েবসাইট খোলা হবে। যেখানে পণ্যের দাম ও মজুতসহ বিভিন্ন তথ্য থাকবে। এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থাগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভয়ভীতি দেখিয়ে নয়, নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে।

এজন্য চালু করা হবে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা। অর্থ মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নিয়ে দল গঠনের মাধ্যমে এ ব্যবস্থাপনা করা হবে। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের স্বার্থে নয়, আমরা কাজ করব জনস্বার্থে, ভোক্তার স্বার্থে। তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মধ্যে নিয়ে আসা। আর উৎপাদক বা আমদানিকারক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে সময়ের ব্যবধান কমিয়ে আনতে চাই। পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করার সময় কোনো সিন্ডিকেট কারসাজি করতে পারেনি দাবি করে আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখি রমজান এলেই কিছু ব্যবসায়ী, আমি তাদের ব্যবসায়ী বলব না, তারা আসলে অসাধু গোষ্ঠী। ব্যবসার নামে তারা অপকর্ম করে। অপরদিকে আসন্ন রমজানে পণ্য সরবরাহ ও মূল্য ঠিক রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি বাজারে পণ্যের দাম নিয়ে যারা কারসাজি করে তাদের নজরদারিতে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সোমবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গঠিত নতুন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন যেটা সবচেয়ে বেশি আলোচিত সেটা হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি। পণ্যের দাম বেশি অথচ খাদ্যপণ্যের অভাব নেই।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, কারসাজি যারা করে তাদের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সামনে আমাদের রমজান মাস। আমাদের খাদ্যপণ্য আমদানি করে সীমিত কয়েকটি গ্রুপ। তারাও এখানে সব সময় একটা খেলা খেলতে চায়। সেই ক্ষেত্রে এখন থেকে আমাদের একটু প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি বলেন, রমজান মাসে যে পণ্যগুলো আমাদের বেশি লাগে সেগুলোর মূল্য যেন ঠিক থাকে এবং সেগুলো যেন বাজারে পাওয়া যায় সরবরাহ যেন ঠিক থাকে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। পণ্যের দাম কৃষক এবং ভোক্তা উভয়ের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা একটা অদ্ভুত ব্যাপার খাদ্যপণ্যের যখন দাম বাড়ে তখন কৃষক খুশি হয়। অথচ যারা ভোক্তা তারা দুঃখ পায়। তাদের উপরে চাপ এসে পড়ে। এটাকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে হবে, এটাকে কীভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা যায় এ বিষয়ে আমাদের খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধি যেটা হবে মূল্যস্ফীতি তার চাইতে কম থাকতে হবে। তাহলেই তার সুফলটা দেশের সাধারণ মানুষ পাবে। তিনি আরও বলেন, মুদ্রাস্ফীতি আমরা কমিয়েছি, খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১২ শতাংশ উঠে গিয়েছিল, সেটাকে কমিয়ে নয় ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। অন্য সব মিলিয়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে।

এটাকে আমাদের আরও কমাতে হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারে আওয়ামী লীগ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে এবং দায়িত্বগ্রহণ করার পরই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সেটা শুভ উদ্যোগ। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকলে মানুষ স্বস্তিতে থাকতে পারবে। তবে আশা থাকবে আসন্ন রমজান মাসে যাতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করতে না পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। রমজান আসতে অনেকটা সময় পাওয়া যাবে। সে কারণে এখনই ব্যবস্থা নিলে সুফল পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত