সংকটে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বিরোধীদের প্রস্তুতি কতদূর?

ব্রি. জে. হাসান মো. শামসুদ্দীন (অব.)

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

দশকের পর দশক ধরে মিয়ানমার সেনাশাসিত। এর মাঝে কিছুটা সময়ের জন্য গণতন্ত্রের সুবাতাস পেলেও মিয়ানমারের জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাংবিধানিক বাধ্য বাধকতার কারণে ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় অনেক কিছুই তারা করতে পারেনি। মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর আধিপত্য বহু দশক ধরে চলে আসছে। ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের কাছে মিয়ানমারের রাজতন্ত্রের পতনের পর মিয়ানমার ব্রিটিশ ভারতের নিয়ন্ত্রণে আসে। মিয়ানমারের রাজনীতিতে তখনকার অবস্থা থেকে মিয়ানমারের স্বাধীনতার জন্য মিয়ানমারের ছাত্রদের মধ্যে থেকে ৩০ কমরেডের মাধ্যমে বার্মা আর্মি সংগঠিত হয় এবং এরাই পরবর্তীতে স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে প্রথমে জাপান ও পরে ব্রিটিশদের মিয়ানমার ছাড়া করে স্বাধীনতা লাভ করে। উপনিবেশিক শাসন আমলের ডিভাইড অ্যান্ড রুলের বিপরীতে জেনারেল অং সাং, পাংলং কনফারেন্সের মধ্যে দিয়ে ক্ষুদ্র জাতিগুষ্টিগুলোকে একত্রে একটা ফেডারেল মিয়ানমারের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছিল। মিয়ানমারের স্বাধীনতার কিছুদিন আগে তিনি আততায়ীর হাতে নিহত হওয়ায় তিনি তা বাস্তবায়ন করতে পারেন নাই। ব্রিটিশদের কাছে থেকে মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হলেও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ বামারদের মধ্যেকার বিভেদ ও আস্থার অভাব রয়েই যায়। সে সময় থেকেই তারা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য সশস্ত্র দল গঠন করে ও অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে থাকে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র সংগঠনগুলোর (ইএও) মধ্যে দশকের পর দশক ধরে সংঘর্ষ চলতে থাকে। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নেউইনে ক্ষমতা দখলের পর থেকে বার্মার নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর উপর তাদের দমনপীড়ন চালিয়ে যেতে থাকে এবং দশকের পর দশক ধরে মিয়ানমারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলে। ২০১১ সালে মিয়ানমারে রাজনৈতিক চর্চা, অর্থনৈতিক সংস্কার ও উন্নয়নপ্রক্রিয়া শুরু হয়। ন্যাশনাল লীগ ফোর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে তারা ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা চলমান রাখা এবং মিয়ানমারের জনগণ সেই সুফল পুরোপুরি পাবার আগেই ২০২১ সালের সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের মধ্যে দিয়ে তার অবসান ঘটে। সামরিক শাসনের প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ এবং পরবর্তীতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সেনাবাহিনী আগের মতোই দমনপীড়নের মাধ্যমে অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এবার তাদের নিপীড়নের সেই পুরোনো পদ্ধতি কাজ করেনি এবং জনতা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। স্বাধীনতাকামী ছাত্র ও যুবকদের সঙ্গে এবার সংখ্যাগরিষ্ঠ ভামার তরুণরা সেনা শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। তরুণ সমাজের একাংশ, বেসামরিক নেতাকর্মী, ইএও এবং সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ সাধারণ নাগরিকরা এবার সশস্ত্র সংগ্রামে জড়িয়ে পড়ে। মিয়ানমারের গণতন্ত্রমনা জনগণ এখন একতাবদ্ধ হয়ে দেশকে সামরিক শাসন মুক্ত করার জন্য প্রাণপণ লড়াই করে যাচ্ছে। ২০২১ সালে জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) গঠিত হয়। বর্তমানে সেনাশাসনবিরোধী রাজনৈতিক জোট এনইউজি এবং তাদের সামরিক শাখা পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ), ইএও সমন্বিতভাবে জান্তার বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করছে। মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি, তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি- এই তিনটি সশস্ত্র সংগঠন ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে তাদের নিজেদের মধ্যকার বিভেদ মিটিয়ে একত্রে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স গঠন করে, ‘অপারেশন ১০২৭’ নামে জান্তার বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ শুরু করে। এত বছর পর ই এ ও গুলো তাদের নিজেদের মধ্যেকার মতভেদ ভুলে একত্রিত হয়ে জান্তার বিরুদ্ধে সংগ্রামে সফলতার মুখ দেখছে। চলমান এই আক্রমণে সামরিক বাহিনী দুর্বল হওয়ার পাশাপাশি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের মনোবল বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকল ফ্রন্টে ব্রাদারহুড এলায়েন্সের একযোগে আক্রমণ ঠেকাতে সেনাবাহিনী তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে, তাদের দৃঢ় অবস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে, হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে-এর ফলে তাদের মনোবল ভেঙে পড়ছে। সেনাবাহিনী নতুন সদস্য নিয়োগ করার এবং শক্তি বাড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী সময় সময় কিছু সশস্ত্র দলের সঙ্গে অস্ত্র বিরতি করে, বাকিদের দমনে তৎপর ছিল। নিজেদের মধ্যে স্বার্থ ও অন্যান্য বিষয়ে বিভেদ থাকার কারণে ইএও গুলো কখনো সংঘবদ্ধভাবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করতে পারেনি। মিয়ানমারের জনগণের উপর সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভামার ও বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘগুলোর মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে কয়েক দশক ধরে সমর্থন দিয়ে আসছিল। এবারের সংগ্রামে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকমনা জনগোষ্ঠী বিশেষভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভামার জনগোষ্ঠীর সমর্থন ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সামর্থ বাড়িয়েছে। দেশের মূল জনগোষ্ঠী ভামারদের সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন কমে যাওয়া এবং ভামার সংখ্যাগরিষ্ঠ সামরিক বাহিনীতে ভামার তরুণদের যোগদানে অনিচ্ছা এই পরিস্থিতির উপর বিরুপ প্রভাব ফেলেছে। তরুণ ভামার যুবকদের কাছে বহু বছর ধরে চলা সেনাশাসনের অবসান ও গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার কিছুটা আশার আলো দেখিয়েছিল। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেটা নিভে গেলে তারা বিদ্রোহী হয়ে উঠে ও অনেকে সশস্ত্র সংগ্রামে যোগ দেয়। মিয়ানমারে বহু দশক ধরে সেনাবাহিনীর প্রতি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সমর্থন সেনাবাহিনীর মনোবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছিল। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মধ্যে বিভক্তি ও সেনাবাহিনীর প্রতি একতরফা সমর্থন হ্রাসের কারণে অনেক সাধারণ মানুষও সেনাবাহিনীর প্রতি তাদের সমর্থন থেকে সরে এসেছে। অনেক নেতৃস্থানীয় ভিক্ষু মনে করে যে, মা বা থা ভিক্ষুরা উগ্র জাতীয়তাবাদ ও ঘৃণা না ছড়িয়ে রাখাইনের উন্নয়নের জন্য সক্রিয় হলে জনগণের জীবনমানের উন্নতি হতো ও দেশে শান্তি বিরাজ করত। চলমান প্রেক্ষাপটে ভিক্ষুরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে, তাদের নিজস্ব অহিংস প্রতিরোধ গড়ে তুলছে এবং বার্মার সীমান্তবর্তী জঙ্গলে ছাত্রদের সঙ্গে অল বার্মা ইয়াং মঙ্কস ইউনিয়ন নামে সংগঠিত হয়ে প্রতিরোধে অংশ নিচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন অঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সমন্বিতভাবে সেনাবাহিনীর অবস্থানে একযোগে হামলা শুরু করায় তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। মিয়ানমারের ইতিহাসে আঞ্চলিক গেরিলা গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে এরকম সমন্বয় এই প্রথম। প্রধান শহরগুলো ও সেনা ছাউনির বাইরে জান্তা সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না। চলমান সশস্ত্র প্রতিরোধের ব্যাপকতা সামরিক শাসকদের মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। সেনাবাহিনী নিম্ন মনোবল ও নিয়োগ জটিলতায় ভুগছে। এটি জান্তার নৈতিক বল ভেঙে দিচ্ছে এবং জনগণের মাঝে প্রতিরোধের প্রেরণা তৈরি করছে। মিয়ানমারের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র যোদ্ধারা এখন দেশটির বেশির ভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। দেশের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে মিয়ানমার কয়েক ভাগ হয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করে জনগণকে সামরিক বাহিনীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায়, তবে জনগণ এই আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না।

বিরোধিদের দমনের জন্য সামরিক নেতারা নির্বিচার গ্রেপ্তার ও সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে। পরাজয় বুঝতে পেরে সেনাবাহিনী এখন ব্যাপক সহিংসতা চালাতে পারে। জান্তার ক্ষমতা দখলের পর ১৯ হাজার ৬৭৫ জন রাজনৈতিক নেতা ও কর্মী কারাগারে রয়েছে এবং এ সংখ্যা বেড়ে চলছে। সেনাবাহিনী সশস্ত্র সংগ্রাম নিয়ন্ত্রণে বসতি ও স্থাপনায় বিমান হামলা করছে। চলমান সহিংসতায় নিহতের পাশাপাশি সাত লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। মিয়ানমার সামরিক জান্তা এত দ্রুত হাল ছেড়ে দিবে এটা ভাবা কখনোই ঠিক হবে না। তবে সামরিক জান্তা-পরবর্তী মিয়ানমার কেমন হবে, এনইউজি সে বিষয়ে একটি পরিকল্পনা করছে। তাদের উপদেষ্টা সংস্থা ন্যাশনাল ইউনিটি কনসালটেটিভ কাউন্সিল (এনইউসিসি) জানিয়েছে যে জান্তার বিরুদ্ধে তাদের লড়াইয়ের চূড়ান্ত লক্ষ্য একটি ফেডারেল ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করা। মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও ফেডারেল রাষ্ট্রব্যবস্থা চায়, তারা চায় সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করা হোক। মিয়ানমারের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে চলমান সংগ্রাম সফল হলে জান্তাবিরোধী শক্তিগুলো এবং সমস্ত ক্ষুদ্র জাতিগত গুষ্টিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, কারণ ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে যে কোনো উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন সম্ভব। চলমান পরিস্থিতিতে জয়লাভের পর বিরোধীরা যদি শান্তি ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয় তাহলে তা নতুন করে জাতিগত সংঘাতের সৃষ্টি করবে এবং রাজ্যগুলোতে মাদকপাচার ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ বাড়িয়ে দেবে। মিয়ানমারের জান্তা সরকার থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তর প্রক্রিয়ায় আঞ্চলিক শক্তি ও বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অর্থপূর্ণ সমর্থন প্রয়োজন। প্রতিবেশী দেশ, আসিয়ান ও পশ্চিমা শক্তিগুলোকে মিয়ানমারের সব গোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে জান্তা-পরবর্তী মিয়ানমারের ভবিষ্যতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র বার্মা অ্যাক্টের আওতায় পিডিএফ, জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন এবং গণতন্ত্রপন্থি গ্রুপগুলোকে ‘নন-লেথাল এইড’ বা ‘প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র সরঞ্জাম’ দিয়ে যাচ্ছে, এবং ইএওগুলো নিজেদের এলাকায় তাদের ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। এনইউজিকে এইসব জাতিভিত্তিক গ্রুপকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তাদের দেখাতে হবে যে তাদের জাতিকে নেতৃত্ব ও রক্ষা করার শক্তি ও সামর্থ্য রয়েছে। অর্থনীতি চলমান রাখতে হলে মিয়ানমারে বিনিয়োগকারী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। মিয়ানমার ছেড়ে যাওয়া বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিভিন্ন দেশের সমর্থন ও সহায়তা আদায়ে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে। চীন, আসিয়ান ও আঞ্চলিক দেশগুলোর স্বার্থ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্রুত দেশের ক্রমঅবনতিশীল অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে হবে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য সাহায্য সংস্থাগুলোকে মিয়ানমারের মানবিক পরিস্থিতিতে সহায়তা প্রদানের সুযোগ করে দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করতে হবে। রোহিঙ্গাদের মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে উন্নয়নে তাদের কাজে লাগাতে হবে। মিয়ানমারের সামনের দিনগুলোতে নতুন সরকারের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে গণতন্ত্রের পথে মুক্তমনে উদার অবস্থান নিয়ে এগিয়ে গেলে মিয়ানমারের শান্তি নিশ্চিত করে গণতন্ত্রের ধারা চলমান রাখা সম্ভব হবে।

লেখক : এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি; মিয়ানমার ও রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষক।