বিশ্ব অর্থনীতির আকাশে ফের কালো মেঘ

রায়হান আহমেদ তপাদার

প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মুখোমুখি হওয়া বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যের ক্রমবর্ধমান সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বৈশ্বিক অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কার মুখোমুখি হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সৃষ্ট অস্থিরতা এ প্রভাবকে আরো গভীর ও দীর্ঘ করে তুলতে পারে। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশসহ প্রায় ৫০টি দেশের ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ এসব নির্বাচনে অংশ নেবেন। এসব নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের প্রতি অবিশ্বাস বাড়ছে। ভোটাররা তিক্তভাবে বিভক্ত এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে গভীর ও স্থায়ী উদ্বেগ রয়েছে। নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকারগুলোকে বাণিজ্য, বিদেশি বিনিয়োগ ও অভিবাসন বিষয়ে কঠোর নিয়ন্ত্রণের দিকে ঠেলে দিতে পারে। বিশ্বব্যাংকের সবশেষ ঋণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদেশি ঋণে নির্ভরতা গত এক যুগে বেড়েছে পৌনে ৪ গুণ। তবে বৃদ্ধির প্রবণতা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে ২০১৮ সাল থেকে পরের ৪ বছরে। যাতে বলা হয়, প্রতি ১ বছরে ধারাবাহিকভাবে দায় বেড়েছে ১৮ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত। আর ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট ৯৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে পরিশোধ করতে হবে ৭৫ বিলিয়নের ওপরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী বছরে বিভিন্ন উৎস থেকে নেয়া ঋণের দায় পরিশোধ করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই যা চাপ বাড়াবে অর্থনীতিতে একই সঙ্গে চীন-রাশিয়ার মতো ব্যয়বহুল উৎস থেকে ঋণ বাড়ানোর প্রবণতা ঝুঁকিতে বাড়াতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতির। বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে চলমান ডলার সংকটে। তাদের পরামর্শ সংস্কারে মনোযোগী হওয়ার। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ না হওয়ায় পরিচালন ও প্রকল্প ব্যয়ের জন্য সরকারকে হাত পাততে হচ্ছে বিদেশিদের কাছে। গেল একযুগে বাংলাদেশের উন্নয়নের বড় মাপ কাঠি অতিরিক্ত ব্যয়ে একগুচ্ছ মেগা প্রকল্প। তবে এর অধিকাংশই হয়েছে বিদেশি ঋণের টাকায়। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে প্রত্যাশিত মাত্রায় রাজস্ব আহরণ না হওয়ায় বিদেশি ঋণে তাই নির্ভরতা বেড়েছে। ফলে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দায়ের পরিমাণ। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পুঞ্জীভূত মোট ঋণের ২৭ শতাংশই নেয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংক থেকে। আর ২০ শতাংশ দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক। আর এই তালিকায়, নতুন করে বড় উৎস হিসেবে সামনে আসছে উচ্চ সুদের চীন ও রাশিয়া। যাদের দখলে মোট ১৭ শতাংশ। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২ বছরে বাংলাদেশের ঋণ তিন গুণ বেড়েছে। অথচ বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর সম্মিলিত বিদেশি ঋণের পরিমাণ ২০২২ সালে কমেছে। গত বছর নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর সম্মিলিত ঋণের পরিমাণ ৩ দশমিক ৪ শতাংশ কমলেও বাংলাদেশের বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এদিকে শুধু ঋণই বেড়েছে তা নয়; অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মতে, টাকার মান দুর্বল হওয়ায় চলতি অর্থ বছরে বিদেশি ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধে বাজেট বরাদ্দের চেয়েও সরকারের ব্যয় প্রায় ১১ শতাংশ বাড়বে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ২০২৩ সালে ক্যামব্রিজ স্কুলের ভূমিকা যদিও তেমন ইতিবাচক ছিল না। আশ্চর্যজনকভাবে এর প্রাথমিক কারণ চীনা নেতৃত্বাধীন বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান নয়, যদিও অনেকেই সে রকম ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। বরং এর কারণ ছিল বিদ্যমান ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ সংকট, যা বিশ্বব্যাপী এর কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে আরো প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল।

তবে, শিগগির আন্তর্জাতিক কোনো নতুন ব্যবস্থা চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বরং অনেক দেশ পাশ্চাত্যসৃষ্ট অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে স্বশাসিত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় ক্ষয় ধরেছে। ২০২৩ সালের অনেক আগে থেকেই অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় পাশ্চাত্যের নেতৃত্ব নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। শুধু গত ১৫ বছর ধরেই বিভিন্ন ভুল পদক্ষেপের কারণে এর বিশ্বাসযোগ্যতা ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফলে বহুবার বিপর্যয়ও দেখা গেছে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকট। বার বার ব্যবসায় বিনিয়োগকে নিষেধাজ্ঞার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার, কোভিড-১৯-এর টিকার অসম বণ্টন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক মুদ্রাস্ফীতিকে ক্ষণস্থায়ী পরিস্থিতি বলে চালিয়ে দেওয়া এবং ব্যাংকগুলোতে ভয়ংকরভাবে সুদের হার বৃদ্ধি। বৈশ্বিক দক্ষিণের অস্বাভাবিক ঋণ গ্রহণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিকভাবে অত্যন্ত জরুরি সংকটগুলোর মোকাবিলায় এই ব্যবস্থা অক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। ফলে, তার সঙ্গে জড়িত অন্য পদ্ধতিগুলোও বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। সমস্যাগুলো আরও বেশি তীব্র হয়ে উঠছে বলে পাশ্চাত্যের প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতি মুহূর্তে অকার্যকর এবং কম অন্তর্ভুক্তিমূলক বলে মনে হচ্ছে। এ বছর বিশেষত দুটি ঘটনা বিশ্বব্যাপী পাশ্চাত্য পরিচালিত ব্যবস্থা সম্বন্ধে হতাশা বাড়িয়েছে। যেমন : আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট ব্যবহারে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং দেশটির তেল রপ্তানিতে মূল্য বেঁধে দেওয়ার পরও রাশিয়া তার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুষ্ঠুভাবে টিকিয়ে রাখতে পেরেছে। যদিও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও লেনদেনের ক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রযুক্তিবিদদের আবিষ্কৃত সাময়িক ব্যবস্থাটি আদৌ ব্যয়সাশ্রয়ী নয়, তবে দেশটির অর্থনীতির ক্ষতি অনেক হ্রাস করতে পেরেছে, এই প্রযুক্তি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থায়নে যথেষ্ট সহায়তা করতে সক্ষম হয়েছে। পাশ্চাত্য নিষেধাজ্ঞার প্রভাব এড়াতে রাশিয়া বিভিন্ন দেশের সহায়তাও পেয়েছে, যদিও এই সংখ্যাটি তুলনামূলক এখনো নগণ্য। নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে এই সীমিত সফলতা বিশ্বে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় পাশ্চাত্যের বিকল্প নেই- এই পুরোনো বিশ্বাসে চিড় ধরিয়েছে এবং ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার প্রতি পাশ্চাত্যের প্রতিশ্রুতির অসারত্ব উদোম করে দিয়েছে। কিছুদিন আগে জো বাইডেন স্বীকার করেছেন, বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ মনে করে, হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার জবাব হিসেবে ইসরায়েলের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া তার আন্তর্জাতিক সমর্থন হারানোর কারণ হয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সর্বশেষ আলোচনায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ভোট নেওয়া হয়েছে। এতে ১৫৩টি দেশ যুদ্ধিবিরতির পক্ষে এবং শুধু ১০টি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। অনুপস্থিত দেশের সংখ্যা ছিল ২৩টি। সাধারণ মানুষের ওপর বোমা নিক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করার পরও ইসরায়েলকে বিচারের মুখোমুখি না করা নিয়ে কয়েকটি দেশ দুঃখ প্রকাশ করেছে। ফিলিস্তিনে দায়িত্বরত জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক কর্মকর্তা ফিলিপ্পে লাজ্জারিনি বার বার গাজাকে ভূ-নরক বলে উল্লেখ করেছেন। এসব ঘটনায় তাদের অবস্থান যাই হোক, দেশগুলো পাশ্চাত্যের নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থার কার্যকারিতা, গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বিশ্ব অর্থনীতিকে এককেন্দ্রিকতা থেকে বহুকেন্দ্রিকতার দিকে নিয়ে যাওয়ার গতি ত্বরান্বিত করছে। অন্যদিকে, মাঝারি শক্তির দেশগুলো যেভাবে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের জাহির করছে, তারা পশ্চিমা বিশ্বের ছোট ছোট মিত্র দেশকে নিরপেক্ষ হতে উৎসাহদানে সফল হতে পারে।

পশ্চিমা শক্তিগুলোকে অবশ্যই এ হুমকির মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক নেতাদের উচিত বাদবাকি ভাঙনের ঝুঁকির ওপর চোখ রাখা এবং বিদ্যমান বহুমুখী কৌশল শক্তিশালী করে আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ঠেকাতে দ্রুত বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া। প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতি সংস্কার ও তাদের পুনরায় সবল করার মধ্য দিয়ে এই চেষ্টা শুরু করা উচিত; যেমন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংক দিয়ে তা শুরু হতে পারে। প্রাথমিক কর্তব্য হবে প্রতিনিধি নিয়োগ ও নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরায় উৎসাহদান এবং পাশ্চাত্যের স্বার্থকেন্দ্রিক পুরোনো নিয়োগগুলো বাতিল করা। এ ছাড়া কার্যক্রম প্রক্রিয়ারও আধুনিকীকরণ করতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে পাশ্চাত্য পরিচালিত এ ব্যবস্থা বিশ্বের জন্য ভালো কাজ করলেও, এর সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। বর্তমান আন্তর্জাতিক কাঠামোটি যদি ব্যর্থ হতে দেওয়া হয় তাহলে নতুন চীনা পদ্ধতি তার জায়গা দখল করতে পারবে না, বরং তা আরো বেশি বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এই ফলাফল স্বল্পমেয়াদে হলেও আমাদের প্রত্যেকের ক্ষতি করবে। এ ছাড়া নতুন এই পদ্ধতি ক্রমবর্ধমান জটিল ও দীর্ঘকালীন সংকটগুলো মোকাবিলায় আমাদের যৌথ সক্ষমতাকেও বাধাগ্রস্ত করবে। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক পলিসির অধ্যাপক ডায়ান কোয়েল বলেন, এ ধরনের নীতি অর্থনীতিতে আমরা যেভাবে অভ্যস্ত ছিলাম, তার চেয়ে অনেক আলাদা একটি বিশ্বে রূপান্তরিত করবে। অনেক জায়গায় স্থবির আয়, জীবনযাত্রার মানের অবনতি এবং ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের কারণে এরই মধ্যে বিশ্বায়ন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে ‘সংকুচিত বাণিজ্যের বিশ্ব হলো আয় সংকোচনের বিশ্ব’। অর্থাৎ বাণিজ্য কমার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আয়ও কমে যাবে। এতে জীবনযাত্রার মানে আরো অবনতি হবে। আগামী বছর সবচেয়ে বড় নির্বাচন ভারতে। বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশটি বিশ্বের উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে ধাক্কা খাচ্ছে। জানুয়ারিতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দ্বীপরাষ্ট্রটি ঘিরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে বেইজিং। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে পারে।

ইন্দোনেশিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট নিকেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ নিয়ে সরকারের নীতি পরিবর্তন করতে পারেন এ ছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অবশ্যই বিশ্ব অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে। আসন্ন প্রতিযোগিতা এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রভাবিত করছে। আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতির পূর্বাভাস এখন পর্যন্ত মিশ্র। বেশির ভাগ দেশে প্রবৃদ্ধির গতি ধীর এবং কয়েক ডজন উন্নয়নশীল দেশ তাদের ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ব অস্বস্তিকর জোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী ব্লকে ভাঙন অব্যাহত থাকায় অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাপিয়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপ রুশ জ্বালানি কেনা দ্রুত কমিয়ে দিয়েছে। তবে চীন, ভারত ও তুরস্ক রুশ জ্বালানি তেল, গ্যাস এবং কয়লা কিনতে এগিয়ে এসেছে।

একই সময়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনার মধ্যে ওয়াশিংটন ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিয়ে কাঁচামাল আমদানিতে বেইজিংনির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে। ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের লোহিত সাগরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বিশ্বজুড়ে আরো বিভক্তির লক্ষণ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মধ্যবর্তী সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রধান অর্থনীতিগুলোর মধ্যে ভূরাজনৈতিক ও ভূঅর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্রমাগত অস্থিরতা সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লেখক : গবেষক ও কলাম লেখক