অভিমত : একুশে বইমেলা

কেবল সৌজন্য কপি পাওয়ার আশায় থাকবেন না!

রাজু আহমেদ

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

আজ একুশে বইমেলার পর্দা উন্মোচিত হবে। ফেব্রুয়ারি ভাষার মাস এবং বইয়ের মাস। লেখক-প্রকাশক এবং পাঠকের মাস। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইয়ে ঠাসা শত শত প্যাভিলিয়ন, হাজার হাজার নতুন বই, লাখ লাখ পাঠকের উপস্থিতিতে রমরমা হবে বইমেলা। বাংলা সাহিত্য পাবে নতুন সম্পদ, সাহিত্যের ইতিহাস পাবে আগামীর লেখক। যাদের অল্পবিস্তর পড়ার বাতিক আছে তাদের কাছে ফেব্রুয়ারি আকাঙ্ক্ষিত। নতুন বইয়ের মৌ মৌ গন্ধ, লেখক-পাঠকদের মিলনমেলায় এক অনবদ্য আয়োজন। একজন লেখকের কাছে তার প্রকাশিত গ্রন্থ সন্তানসম। মাতৃত্ব-পিতৃত্বের মায়ায় মমণ্ডহৃদয়ে সন্তান ভূমিষ্ঠের ফলে যেমন রোমাঞ্চিত আনন্দের রোমন্থনের স্রোত সৃষ্টি হয় তেমনি একজন লেখক সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মাতোয়ারা হতে পারেন তার চিন্তাকে দুই মলাটের ভাঁজে বন্দি করে। ফেব্রুয়ারির বইমেলায় আমাদের অসংখ্য বন্ধুর প্রথম কিংবা প্রাথমিক লগ্নের সৃষ্টি আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে শুনে আমরা হয়তো অপেক্ষা করছি বন্ধুত্বের খাতিরে সৌজন্য কপি পাওয়ার আগ্রহে। অর্থের বিচারে এটা সংকীর্ণ না হলেও চিন্তার বিচারে একজন লেখককে পিছিয়ে দেয়ার জন্য এটা মারাত্মক টনিকের কাজ করে। প্রকাশনা শিল্প সম্পর্কে যারা জানেন তারা অবশ্যই অবগত যে, নতুন কোনো লেখকের পাণ্ডুলিপি অর্থ ছাড়া প্রেসে যায় না, মলাটবদ্ধ হয় না। উদাহরণস্বরূপ বলি, মাত্র ১০০ কিংবা ততোধিক মূল্যের একখানা বই ক্রয় করতে আপনাকে কোনোভাবেই বেগ পেতে হয় না কিন্তু একজন লেখককে যদি তার শতাধিক বন্ধু, সহপাঠী এবং অগ্রজ-অনুজকে সৌজন্য কপি বিলিয়ে খুশি রাখতে হয় তবে লেখকের ইচ্ছাশক্তি মুকুলে ধাক্কা খায় এবং অমিত সম্ভাবনার ইতি ঘটার আশঙ্কা জাগ্রত হয়। লেখকদের অর্থশক্তি যুগে যুগেই বিবেচনার ব্যাপার! মনে রাখা উচিত, ইতিহাসের কোনো পরতেই সাহিত্যচর্চার সাথে বিত্তবান এবং অভিজাতরা (কিছু ব্যতিক্রম ব্যতীত) সম্পৃক্ত হয়নি। মধ্যবিত্ত কিংবা গরিব শ্রেণিকেই সাহিত্য টানে। হোক সে লেখক হিসেবে কিংবা পাঠক।