ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চব্বিশে বিশ্বব্যবস্থা যে কারণে আরো জটিল হতে পারে

রায়হান আহমেদ তপাদার
চব্বিশে বিশ্বব্যবস্থা যে কারণে আরো জটিল হতে পারে

ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈরিতার শুরুটা হয়েছিল ১৯৫৩ সালে। ওই সময় ইরানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোসাদেক তেল সম্পদকে সরকারিকরণ করতে চেয়েছিলেন। কারণ, এর বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতো ব্রিটিশরা এবং বেশিরভাগ ইরানিরা সেখান থেকে কোনো সুবিধা পেত না। কিন্তু এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। মনে করা হয় যে, এই অভ্যুত্থানের পেছনে মার্কিন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের ভূমিকা ছিল। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে মোহাম্মদ রেজা শাহ ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং সাভাক নামক গোপন পুলিশ বাহিনী দিয়ে তার বিরোধিতাকারীদের দমন করেন।

তখন ইসলামপন্থি নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি তার প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে যান। তবে শাহের বিরোধিতা করার পর তিনি নির্বাসনে ছিলেন। কিন্তু, সত্তরের দশকে ইরানের জনগণের বড় অংশ শাহের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ১৯৭৯ সালে প্যারিস থেকে খামেনি আবার ইরানে ফিরে আসেন। ওই বছর থেকেই খামেনি হয়ে উঠলেন দেশটির প্রথম সুপ্রিম লিডার। সেই সময় নতুন ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে আমেরিকাবিরোধী মনোভাব তুঙ্গে ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৯ সালে খামেনিপন্থি ছাত্ররা তেহরানের মার্কিন দূতাবাসে ঢুকে পড়ে। ৫২ জন আমেরিকানকে ৪৪৪ দিন জিম্মি করে রাখে তারা। এই ঘটনায় প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ১৯৮০ সালে ইরান-ইরাক যুদ্ধ শুরু হয়। ইরানে হামলার মাধ্যমে তিক্ত এক যুদ্ধ শুরু করে ইরাক। সেই যুদ্ধে ইরাককে নানাভাবে সাহায্য করতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ধারণা করা হয়, সেই যুদ্ধে প্রায় ১০ লাখ মানুষ মারা গেছে। টানা আট বছর পর একটা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হন খামেনি। এরপর এই দুই দেশের সম্পর্ক তিক্ত হতেই থাকে।

তেহরান ইঙ্গিত দেয়, আমেরিকা এবং ইসরায়েল তাদের প্রধান শত্রু। এরপর, ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ গুলি করে তেহরানের একটি বিমানকে ভূপাতিত করে। এটাকে ভুল হিসেবে স্বীকার করলেও এর জন্য কখনো ক্ষমা চায়নি যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু ২০০০ সালের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নজর পড়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর। তখন আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ায় ইরানের তেল রপ্তানি ও অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব পড়ে। ২০১৫ সালের চুক্তির আলোকে ইরান তাদের পরমাণু কার্যক্রম সীমিত করতে সম্মত হয়েছিল ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের পরিদর্শনের অনুমতি দিয়েছিল। তবে শর্ত ছিল যে, ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে এ চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ান এবং বলেন, তিনি পরমাণু কর্মসূচি কমিয়ে আনা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি স্থগিত করতে ইরানকে একটি নতুন চুক্তিতে বাধ্য করবেন। ইরান তার এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে এবং ঘোষণা করে যে তারা আর ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধ মানবে না। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ২০২০ সালে ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় হত্যা করা হয় ইরানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে। এ হত্যাকাণ্ডের পর দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনার সঙ্গে নতুন করে যোগ হলো টাওয়ার ২২-এ হামলা।

যুক্তরাষ্ট্র, চীনের কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা এরমধ্যেই নড়বড়ে হয়ে যাওয়া বিশ্বব্যবস্থাকে আরো বেশি নাজুক ও নড়বড়ে করে তুলেছে। এই দুটি দেশ প্রযুক্তিযুদ্ধে জড়িয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শ্রেষ্ঠত্ব নিজের কবজায় রাখা এবং উন্নত সেমিকন্ডাক্টর চিপ উৎপাদন নিয়ে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহ শৃঙ্খলে অগ্রগামী যুক্তরাষ্ট্র চীনের রপ্তানিকে নিয়ন্ত্রণ এবং চীনে বিনিয়োগ রোধের মাধ্যমে বেইজিংয়ের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। তবে চীন এখন পর্যন্ত খনিজ পদার্থ; বিশেষ করে ইভি, ব্যাটারি ও সৌর প্যানেল তৈরিতে ব্যবহার্য কোবাল্ট ও লিথিয়ামের সরবরাহ শৃঙ্খলে নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে পেরেছে।

চীনের এই সুবিধাকে খর্ব করতে যুক্তরাষ্ট্র চীনের গাড়ি ও অন্যান্য পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক বসিয়েছে। এই দুই পরাশক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিশ্বকে শিবিরভিত্তিক রাজনীতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার পরিবেশ মারাত্মকভাবে হুমকিতে পড়ে গেছে। পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার দৌড়ে এগিয়ে থাকতে বড় বড় দেশ তাদের পারমাণবিক চুল্লিগুলোকে আধুনিক থেকে আধুনিকতর করছে। পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা নিষিদ্ধ করা বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি দ্য কম্প্রিহেন্সিভ নিউক্লিয়ার টেস্ট ব্যান ট্রিটি বা সিটিবিটিতে অনুস্বাক্ষর করা দেশ রাশিয়া গত বছরের নভেম্বরে এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে। এর ফলে রাশিয়ার সামনে পারমাণবিক অস্ত্রের নতুন কোনো পরীক্ষার দুয়ার খুলে গেছে। গাজায় তিন মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল প্রতিদিন গণহত্যা চালাচ্ছে। সেখানে মানবিক বিপর্যয় দেখাদিয়েছে। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট জাহাজে আক্রমণ করায় যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ তাদের নৌবাহিনীকে সেখানে একত্র করতে বাধ্য হচ্ছে। অন্যদিকে লেবানন ও সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলা সমগ্র অঞ্চলকে সংঘাতের ঝুঁকিতে ঢেকে ফেলছে। অপরদিকে বিস্তীর্ণ উর্বর ভূমি ও বিপুল খাদ্যশস্য ভাণ্ডারের দেশ ইউক্রেন যুদ্ধের মুখে পড়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। লাখ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়ে একেবারে উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছেন। খাবার, পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ইউক্রেনে হামলাকারী দেশ রাশিয়ারও বিপুল ক্ষতি হয়েছে। রাশিয়ার ওপর পশ্চিমারা অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা এবং ন্যাটোর পূর্বাঞ্চলকে সম্প্রসারিত করার চেষ্টা অব্যাহত রাখা সত্ত্বেও মস্কো লড়াই চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ রয়েছে। ফিনল্যান্ড ৩১তম সদস্য হিসেবে ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর সীমান্ত দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে। সুইডেনও ন্যাটোয় নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা জোরদার করেছে।

ফলে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আশু সমাপ্তি দেখা যাচ্ছে না। কৌশলগত পারমাণবিক ওয়ারহেড মোতায়েনকে সীমিত অবস্থায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ‘নিউ স্টার্ট’ নামে যে চুক্তি হয়েছিল, সেটিও রাশিয়া গত বছর স্থগিত করেছে। ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য মাঝারি পাল্লার পারমাণবিক শক্তিগুলোকে নির্মূল করতে যে আইএনএফ চুক্তি হয়েছিল, সেটি ২০১৯ সালে বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যদিয়ে ২০২৪ সালে কয়েক ডজন দেশে নির্বাচন হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, উদ্বেগ তত বাড়ছে। ৮১ বছর বয়সি জো বাইডেন এবং ৭৭ বছর বয়সি ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এই ভোটের ফলাফল ভূরাজনীতিতে; বিশেষ করে ট্রান্সআটলান্টিক সমীকরণে গভীর প্রভাব ফেলবে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন মার্চে পঞ্চম মেয়াদের জন্য পুনর্নির্বাচিত হতে চেয়েছেন। ইন্দোনেশিয়ায় ফেব্রুয়ারিতে এবং ভারতে মে মাসে নির্বাচন হতে চলেছে। যুক্তরাজ্যে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে নির্বাচন হবে। নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন দেশে জনতুষ্টিবাদী হাঁকডাক সামাজিক মেরুকরণকে তীক্ষè ও তীব্র করে তুলছে। পাকিস্তানের জন্য ২০২৪ সাল হবে একটি দমবন্ধ করার মতো সময়কাল। দেশটি বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদের কবলে রয়েছে। এখানে নির্বাচনের আগের পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে আছে। দোষারোপের খেলা চরম পর্যায়ে চলে এসেছে। বিনিয়োগকারীরা দেশটির অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। পাকিস্তানের ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে সৃষ্ট সংকটের সমাধান হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এই দুই দেশের মধ্যে বৈরিতার ইতিহাস আজ নতুন না। ১৯৫০-এর দশক থেকেই এই দুই দেশের সম্পর্ক জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে।

কিন্তু সম্প্রতি এক ড্রোন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন সেনা নিহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান সমর্থিত কট্টর জঙ্গিগোষ্ঠী এ হামলা চালিয়েছে। এখন এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানকে পাল্টা জবাব দেয়ার কথা বলেছেন। এতে করে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্র এবার সরাসরি ইরানে আক্রমণ করবে কি না। তবে ইরানের ওপর কোনো আক্রমণ করা হলে ইরানও এরই মধ্যে পাল্টা আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

যদিও এই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান, এই দুই দেশই জানিয়েছে যে তারা যুদ্ধ চায় না। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে টানা হামলা ও ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশ দু’টি সংঘাতের দিকে হাঁটছে বলে মনে করছেন পশ্চিমা দেশগুলোর বিশ্লেষকরা। ২৮ জানুয়ারি সিরিয়ার সীমান্তবর্তী জর্ডানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রুকবানে এক মার্কিন ঘাঁটিতে একটি মনুষ্যবিহীন ড্রোন হামলা চালানো হয়। পরবর্তীতে, মার্কিন কর্মকর্তারা ড্রোন হামলার শিকার হওয়া এই ঘাঁটির নাম দেন ‘টাওয়ার বাইশ’। এই হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পাশাপাশি অন্তত ৩৪ জন সৈন্য মস্তিষ্কে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড। এই হামলার পেছনে কারা জড়িত সেটি স্পষ্ট না হলেও শুরু থেকেই সেন্ট্রাল কমান্ড ও বাইডেন ইরানকে দায়ী করছে। এদিকে, জর্ডান দাবি করছে যে ড্রোন হামলাটি সিরিয়ায় হয়েছে, জর্ডানের ভেতর নয়। এই অঞ্চলে মার্কিন ঘাঁটিতে এর আগেও হামলা হয়েছে, তবে এর আগে কখনো মার্কিন সেনাদের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গত সাতই অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর ওই অঞ্চলে এই প্রথম কোনো মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান সমর্থিত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলায় চালিয়ে আসছে।

পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি থমাস শ্যানন এনবিসি নিউজকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন ধীরে ধীরে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করা শ্যানন মনে করেন, ইরান তার সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনী ব্যবহার করে পশ্চিমা স্বার্থকে চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও ইরান প্রায়ই বলে, এই গোষ্ঠীগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর তাদের কোনো প্রভাব নেই। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরাও স্পষ্ট নন। তবে এই অস্পষ্টতাকেই বড় করে দেখছেন শ্যানন। বলছেন, এটি হিসাবের গড়মিল ও উত্তেজনার তীব্রতা বাড়িয়ে তোলার ঝুঁকি তৈরি করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেন মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে অবিশ্বাস্যভাবে অস্থির হিসেবে মন্তব্য করেছেন।

এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অন্তত ১৯৭৩ সালের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এত বিপজ্জনক পরিস্থিতি বিশ্ব দেখেনি। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন আলোচনায় নিযুক্ত ছিলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিশেষ দূত ফ্রাঙ্ক লোয়েনস্টেইন। এই হামলার ঘটনাগুলো কতখানি ইরানে প্ররোচনায় হচ্ছে, সেটি শতভাগ নিশ্চিত না হলেও তিনি বলছেন, এ ধরনের কয়েক ডজন হামলা তারা আগেও চালিয়েছে। কিন্তু এর আগে তারা কখনো কোনো মার্কিন সেনাকে হত্যা করেনি। শেষ পর্যন্ত এ দফায় যুক্তরাষ্ট্র-ইরান কোনো যুদ্ধের দিকে গড়াবে কি না, সেটি স্পষ্ট না হলেও মার্কিন সেনা নিহত হওয়ায় এই উত্তেজনা সহসা থামছে না, এমন ইঙ্গিতই করছেন বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত