সংকটময় বিশ্বের জটিল বিশ্লেষণে মিউনিখ সম্মেলন

রায়হান আহমেদ তপাদার

প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

পঞ্চাশের দশকে ঠান্ডা যুদ্ধ বা স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তখন পৃথিবী ছিল দুই ভাগে বিভক্ত। একদিকে ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক শিবির, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পুঁজিবাদী শিবিরের দেশগুলো। এই দুই শিবিরেই গঠিত হয়েছিল দুটি সামরিক জোট। একটি নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো), অন্যটি ওয়ারশ জোট। পুরো স্নায়ুযুদ্ধের কালজুড়ে মধ্য ইউরোপের উভয় পক্ষের দেশগুলো পরস্পরের দিকে তাক করে রেখেছিল পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে সোভিয়েত রাষ্ট্রের বিলোপ ঘটলে সেই আদর্শিক স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটে; এরই একটি বড় অনুষঙ্গ হিসেবে ১৯৮৯ সালের নভেম্বরে বার্লিন প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়। অবশ্য স্নায়ুযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসানের আগেই জার্মানির রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবী সমাজ শান্তি ও নিরাপত্তার পক্ষে নানা উদ্যোগ নিতে শুরু করে। এমনকি তীব্র স্নায়ুযুদ্ধের কালেও ১৯৬৩ সালে রাজনীতিক, গবেষক ও নাগরিক সমাজকে নিয়ে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের উদ্যোগ শুরু হয়।

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন একটি উন্মুক্ত ফোরাম, যেখানে নানা দেশের প্রতিনিধিরা দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় নানা বিষয়ে মতবিনিময় ও আলোচনা করেন। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। রাষ্ট্রনেতা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও এ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বাণিজ্য ও অর্থনীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বিগত ৬০ বছরে, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ক্রমাগত বিকশিত ও বৈচিত্র্যময় হয়েছে। বেশ কয়েকটি নতুন বিষয়ে আলোচনার মঞ্চ এবং পরিবর্তিত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় টেকসই বিতর্কের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করছে। মূল উদ্দেশ্য হিসাবে, সংলাপের মাধ্যমে শান্তি গড়ে তোলা। নব্বইয়ের দশকে স্নায়ুযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসানের আগেই জার্মানির রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবী সমাজ শান্তি ও নিরাপত্তার পক্ষে নানা উদ্যোগ নিতে শুরু করে। এমনকি তীব্র স্নায়ুযুদ্ধের কালেও ১৯৬৩ সালে রাজনীতিক, গবেষক ও নাগরিক সমাজকে নিয়ে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের উদ্যোগ শুরু হয়। তবে প্রথম এক দশক সে সম্মেলন ব্যাপক আন্তর্জাতিক সাড়া জাগাতে পারেনি; শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোই এতে অংশ নিত। পরবর্তীতে এর ব্যাপ্তি বেড়েছে। তিন দশক আগে পূর্ব আর পশ্চিমের মধ্য স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হলেও, এই মুহূর্তে ইউক্রেন আর গাজা উপত্যকার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে বড় অশান্তি তৈরি হয়েছে। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রতিক্রিয়া পড়েছে বিশ্বজুড়ে। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলন। স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের প্রধান দুই উদ্যোক্তা এভাল্ড ভন ক্লাইস্ট ও হোর্স্ট টেল্টশিক এই সম্মেলনকে বিশ্বজনীন রূপ দেওয়ার প্রয়াসে নতুন রূপরেখা তৈরি করেন। বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে ইউরোপের বাইরের বিভিন্ন দেশ এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তারপর থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়কেরা মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিয়ে পারস্পরিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক ও সমস্যা নিয়ে আলোচনা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রায় ৬০ জন সিনেটর নিয়ে সব থেকে বড় প্রতিনিধি দল আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ফরাসি রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাখোঁ পোল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি আন্দ্রেজ দুদা, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইও, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ প্রমুখরা। এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে তিনি এই সম্মেলনে একটি অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার পাশাপাশি জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডারিকসনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এ ছাড়া ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করসহ বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদলের নেতা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এই বছর মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের আলোচ্যসূচি সম্পর্কে বিশদ বিবরণ সম্মেলন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে প্রকাশ করা হবে। তবে ইউক্রেন এবং গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ, বিশ্বে ইউরোপের ভূমিকা, যুদ্ধের পাশাপাশি অভিবাসন, খাদ্য সমস্যা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাগুলো কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া এই মুহূর্তে ইউরোপের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষায় কী ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন বা বৈশ্বিক ব্যবস্থার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, জলবায়ু পরিবর্তনের সুরক্ষা প্রভাব এবং অন্যান্য অনেক প্রশ্নের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্মেলনে আলোচিত হবে। সম্মেলনের সভাপতি ক্রিস্টোফ হিউসজেন বলেছেন, সংলাপের মাধ্যমে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার যে প্রয়াস আমরা দীর্ঘদিন আগে শুরু করেছিলাম, তার প্রয়োজন এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তিনি বিশ্বাস করেন যে ইউক্রেন যুদ্ধে হেরে গেলে ন্যাটো অঞ্চলে রাশিয়ার আক্রমণ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সম্মেলনে রাশিয়া-ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত সম্ভবত সবচেয়ে বেশি স্থান নেবে বলে পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছে। মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এবং পুনরায় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ইউরোপের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ ক্যারোলিনা রাজ্যে একটি নির্বাচনি প্রচারণা অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেছেন যে, ন্যাটোর প্রতিরক্ষা ব্যয় ইউরোপের সদস্য দেশগুলো নিয়মমাফিক ব্যয় না করলে তিনি রাশিয়াকে তারা যা খুশি তাই করতে উৎসাহিত করবেন। বিশ্ব নিরাপত্তার সন্ধানে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন হলেও বিশ্ব নিরাপত্তা, খাদ্য, পরিবেশ বা বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কতটুকু সমাধান হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি এবং তথাকথিত আদর্শিক স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পরও বিশ্বজুড়ে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। উপরন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার নতুন করে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার প্রশ্নটি আবার বড় হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি দেশে দেশে অর্থনৈতিক সম্পর্ক, প্রাকৃতিক পরিবেশ, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে সম্মিলিতভাবে চিন্তাভাবনা ও মতামত তুলে ধরা, প্রস্তাব পেশ ও গ্রহণ করা এবং সেগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে পৃথিবীকে আরো নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ করার ক্ষেত্রে মিউনিখ সম্মেলনের প্রাসঙ্গিকতা অবশ্যই তর্কাতীত বিষয়। ইউরোপের দোরগোড়ায় চলমান যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে মহাদেশের নিজস্ব প্রতিরক্ষা কাঠামো আরো জোরালো করার বিষয়টি এবারের সম্মেলনে গুরুত্ব পাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বর্তমানে জো বাইডেনের প্রশাসন ইউক্রেন তথা ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট উদ্যোগ নিলেও ভবিষ্যতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন ঘটলে বা তার মতো কোনো নেতা ওয়াশিংটনে ক্ষমতাকেন্দ্রে এলে ইউরোপ একই রকম সংহতির প্রত্যাশা করতে পারবে কি না, সে বিষয়ে সংশয়ের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ফলে ইউরোপের দেশগুলোর ওপর প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় আরো বাড়ানোর জন্য চাপ বাড়ছে। জ্বালানি ও খাদ্যনিরাপত্তার মতো বিষয় সম্পর্কেও নতুন করে ভাবনাচিন্তা করতে হচ্ছে পশ্চিমা বিশ্বকে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে কে জিতবে, ইউক্রেনের যুদ্ধ কোনদিকে মোড় নেবে, তা বিবেচনার আগে সবরকম আগ্রাসন ঠেকাতে ইউরোপের নিজের ক্ষমতা জোরদার করতে হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রুশ আগ্রাসন এবং ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে প্রচেষ্টা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন। ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে একটি প্যানেল আলোচনায় বক্তৃতা দেয়ার সময় ইউক্রেনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আহ্বান জানান। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং-ই বলেন, বিশ্বজুড়ে সংঘাতের মধ্যে তার দেশ স্থিতিশীল একটি শক্তি হিসাবে কাজ করবে। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এবং আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান গত শনিবার জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে দেখা করেন। ককেশাস অঞ্চলে শান্তির জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে জানান তারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, সম্মেলন শুরুর কিছুক্ষণ আগে নাভালনির মৃত্যুর ঘোষণা করাটা কাকতালীয় নয়। ব্রোউডার বলেছিলেন, সম্মেলনের আগে নাভালনির মৃত্যুর খবর ঘোষণা করে পুতিন কার্যকরভাবে সমগ্র বিশ্বকে নাড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। সম্মেলনে আসা অনেকেই বিশ্বাস করেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য পুতিনের সঙ্গে আলোচনার একটি উপায় আছে। তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, ব্রোউডার তা নাকচ করে দেন। ব্রোউডারের কথায়, পুতিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনো আলোচনার জায়গা নেই। শান্তির জন্য তার কোনো আপস করার ক্ষমতা নেই। পুতিন একজন যুদ্ধবাজ। তিনি নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, পুতিনবিরোধী রাজনীতিবিদ ভ্লাদিমির কারা-মুর্জার ভাগ্য নিয়ে চিন্তিত? মুর্জাকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে রাশিয়া? তিনি বলেন, এখন আলেক্সি নাভালনিকে হত্যা করা হয়েছে? ভ্লাদিমির কারা-মুর্জা সম্ভবত তার পরেই রয়েছেন। আমরা ওর নিরাপত্তা, সুস্থতা নিয়ে আতঙ্কিত। সম্মেলনে আসার মূল উদ্দেশ্য হলো, পশ্চিমা নেতাদের সঙ্গে কথা বলা, যাতে ভ্লাদিমির কুরা-মুর্জাকে জেল থেকে বের করার উপায় খুঁজে বের করা যায়। যেন তার পরিণতি নাভালনির মতো না হয়? ব্রোউডার নিজের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত। তার কথায়, দুঃখজনক হলো, রাশিয়া বা বিশ্বের যে কোনো জায়গাই আমার মতো পুতিনবিরোধী কোনো ব্যক্তির জন্য খুব বিপজ্জনক জায়গা। মার্কিন রিপাবলিকান সেনেটর জেডি ভ্যান্স, ন্যাটো এবং ইউক্রেন সম্পর্কে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানিয়েছেন সম্মেলনের শেষদিনে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার বিষয়ে সতর্ক অবস্থান প্রকাশ করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর রিপাবলিকান সেনেটর ভ্যান্স বলেন, আমরা আমাদের ন্যাটো মিত্রদের ভালোবাসি। আমরা ন্যাটো জোটকে মূল্য দিই। ভ্যান্স বলেন, ট্রাম্প এবং রক্ষণশীল রিপাবলিকানরা চায়, প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ইউরোপ একটু বেশি স্বয়ংসম্পূর্ণ হোক। তার মত, ইউরোপ যদি বিশ্বাস করে যে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাদের জন্য অস্তিত্বের হুমকি তাহলে জার্মানির মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল চালিকাশক্তিদের পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূরাজনৈতিক লক্ষ্যগুলোর পাশাপাশি ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের শেষ দিনে আলোচনা হয়েছে। ইইউ বৃদ্ধির সুবিধা নিয়ে আলোচনা করেছেন জর্জিয়ান প্রেসিডেন্ট সালোমে জওরাবিচভিলি, লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিলিয়াস লান্ডসবার্গিস, ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ওলহা স্টেফানিশিনা এবং পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাডোস্লাও সিকোর্স্কি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল এবং লাটভিয়ান প্রধানমন্ত্রী ইভিকা সিলিনা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরবর্তী ভূরাজনৈতিক এজেন্ডা নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। ইউরোপে আগামী ৬০ বছরের ভূরাজনীতি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সম্মেলনটি শেষ হয়।