ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাত প্রতিমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ

মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন সেটাই প্রতাশা
সাত প্রতিমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান মন্ত্রিসভায় সাতজন নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বঙ্গভবনের ঐতিহাসিক দরবার হলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নতুন প্রতিমন্ত্রীদের শপথ পাঠ করান। শপথ গ্রহণের পর তারা পদ ও গোপনীয়তার শপথপত্রে স্বাক্ষর করেন। নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা হলেন- রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুল ওয়াদুদ, নওগাঁ-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শহীদুজ্জামান সরকার, চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার চম্পা, ওয়াসিকা আয়েশা খান, নাহিদ ইজহার খান ও রোকেয়া সুলতানা। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গত ১১ জানুয়ারি টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেন। প্রথমে গঠিত মন্ত্রিসভায় ৩৭ সদস্যের মধ্যে ২৬ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এখন নতুনদের নিয়ে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের মোট সংখ্যা দাঁড়াল ৪৪। বর্তমানে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় ২৬ জন মন্ত্রী ও ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন।

আমাদের দেশের মন্ত্রিদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের কাজের আওতা কতটুকু এবং জনগণের সেবা করার জন্য তাদের কি কি করা দরকার সে ব্যাপারে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। জনগণের পয়সায় তাদের বেতন-ভাতার নিশ্চয়তা মিলে। সে কারণে জনগণের সেবা করাই হচ্ছে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের প্রধান কাজ। মাননীয় প্রধামন্ত্রী যদি নিজেকে জনগণের সেবক হিসেবে মনে করে জনগণের কল্যাণের বিষয়টি প্রতিনিয়ত ভাবতে থাকেন তাহলে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বসে থাকার কোনো অবকাশ নেই। মনে রাখা দরকার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীত্ব কোনো চাকরি নয়। যে কোনো সময় প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছে করলে মন্ত্রিত্ব কেড়ে নিতে পারেন। সে কারণে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা যতদিন কাজ করার সুযোগ পাবেন তারা সেই সুযোগ কাজে লাগাবেন। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হলে অনেক বিচক্ষণতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হয়। নিজ নিজ কর্মকাণ্ডে কোনো কারণে একবার বিতর্কের সৃষ্টি হলে আওয়ামী সরকার বিরোধী মহল সেটাকে লুফে নিয়ে জনগণকে বার বার মনে করিয়ে দেবে। আওয়ামী লীগের আমলে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী বেফাস কথা বলে এবারের মন্ত্রিসভায় স্থান পায়নি। তাদের এসব বক্তব্যের পর নানাভাবে সংশোধনী কিংবা ব্যাখা দেয়া হয়েছে তবে মানুষ তাতে সাড়া দেয়নি। সে কারণে নতুন যে সাতজন প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় স্থান পেলেন তাদের অত্যন্ত সাবধান থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর যদি মনে করে থাকে যে, তারা এখন নিশ্চিতভাবে দেশ পরিচালনা করবে তবে সেটা হবে সাংঘাতিক রকমের ভুল।

কেননা আওয়ামী বিরোধী শক্র কেবল দেশের অভ্যন্তরেই নয়, দেশের বাইরের অনেক দেশ আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী মনোভাব পোষণ করে। সেই সঙ্গে রয়েছে জোরালো গুজব ও অপতথ্য পরিবেশন। মানুষের সামনে যেসব মৌলিক সমস্যা এখন রয়েছে সেগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে তা নিয়ে ভাবতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে সংকট সমাধানের পথ উন্মোচন করতে হবে। অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব পোষণ করতে হবে। যেসব নতুন প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করলেন তারা যদি তাদের মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রীর সান্নিধ্য পান তাহলে ভালো। তারা নিজেরা বসে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করবেন। কখনো কখনো দেখা যায় পূর্ণমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে বোঝাপড়া ভালো না থাকলে সচিবরা এই সুযোগটি নিয়ে থাকেন। মন্ত্রিত্বকে যদি কেউ উপভোগের বলে মনে করেন তাহলে তিনি জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারবে না। তাকে মনে রাখতে হবে এই পাঁচ বছর তার পরবর্তী জীবনের আমলনামা।

মন্ত্রি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে যদি কেউ সাফল্য অর্জন করতে পারেন তাহলে তিনি আগামী দিনে মূল্যায়িত হবেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার চোখ ফাঁকি দেয়া খুবই কঠিন। তিনি জানেন না কিংবা বোঝেন না এমন কোনো বিষয় নেই। দীর্ঘদিনে রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতাকে তিনি কাজে লাগিয়ে দেশ পরিচালন করছেন। তার মতো একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদের দৃষ্টি এড়িয়ে কোনো কিছু করার সাধ্য আওয়ামী লীগের কোনো নেতার নেই। দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাই তার এই অগ্রযাত্রায় যারা নতুন করে শরিক হলেন তারা প্রধানমন্ত্রীর অনুস্মরণে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবেন সেই প্রতাশা থাকবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত