ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইটভাটাকে নিয়মের মধ্যে আনা জরুরি

একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকা দরকার
ইটভাটাকে নিয়মের মধ্যে আনা জরুরি

পরিবেশ দূষণের একটি অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা। প্রতিনিয়তই ইটভাটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিছু কিছু জায়গাতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের জরিমানা করা হচ্ছে। তারপরও বীরদর্পে অবৈধ ভাটার মালিকরা এসব ভাটা চালাচ্ছেন। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ছাড়া কোনোভাবেই ইটভাটার দূষণ নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন পরিবেশবিদরা। ইটের প্রয়োজনীয়তা যেমন আছে, তেমনি ইটভাটার মালিকরা কোনো নিয়ম মানবেন না, তা তো হতে পারে না। আইন অমান্য করে এসব ইটভাটায় আবার ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। ইটভাটায় কাঠ ব্যবহারের কারণে বন ধ্বংস হয় এবং গাছপালা কমে যায়। এমনিতেই আমাদের দেশে দিন দিন বন উজাড় হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর। ইটভাটা থেকে বায়ুমণ্ডলে দূষিত উপাদান যুক্ত হচ্ছে। এসব দূষিত উপাদানের মধ্যে রয়েছে পার্টিকুলেট ম্যাটার, কার্বন মনোক্সাইড, সালফার অক্সাইড ও কার্বন ডাই-অক্সাইড। গবেষণায় দেখা গেছে, এসব উপাদান মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এসব উপাদান মানবদেহে প্রবেশ করলে শ্বাসপ্রণালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

দেশে ইট তৈরি সনাতন পদ্ধতিতে করার কারণে বায়ুদূষণ ঘটছে মারাত্মকভাবে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, এই পদ্ধতিতে ইট তৈরির কারণে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের। ইটভাটার আশপাশে বসবাসরত মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয় বেশি। কৃষিজমির ওপরও ইটভাটার ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। জমির উর্বরতা শক্তি কমে যায়। ইটভাটা স্থাপন-সংক্রান্ত একটি আইন দেশে কার্যকর রয়েছে। আইনটির নাম ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন’। সেই আইন অনুযায়ী, লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা স্থাপনের সুযোগ নেই। লাইসেন্স ছাড়া কেউ এটা চালু করলে শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।

এ ছাড়া অনধিক এক বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে।

আইন যদি কার্যকর না হয়, তাহলে আইন থেকেই বা লাভ কী? আইন কার্যকর করা এবং তদারকি করার দায়িত্ব হলো জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের। এ ক্ষেত্রে তারা যে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, তা স্পষ্ট। ইটভাটা আধুনিক পদ্ধতিতে চালালে পরিবেশদূষণ হওয়ার আশঙ্কা কম। আধুনিক পদ্ধতিতে ইট তৈরির জন্য বাধ্য করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এ জন্য এ বিষয়ে এখনই একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকা দরকার। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়াতে হবে। আশা করি, পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে নজর দেবে। পরিবেশকে রক্ষা করতে হলে ইটভাটাগুলোকে নিয়মের মধ্যে আনতেই হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত