ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি

সচেতনতাই কমাতে পারে দূষণের মাত্রা
বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি

ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানী ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ বায়ুর মানের তালিকায় আধিপত্য বজায় রেখেছে। বৈশ্বিক বায়ু মান পর্যবেক্ষক সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় প্রতিদিনই শীর্ষ তিনের মধ্যে থাকছে ঢাকার নাম। আজও বায়ুদূষণের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ঢাকা।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫৪ মিনিটে বায়ুমানের সূচক (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকায় বাতাসের মান ছিল ১৯৫ স্কোর। বায়ুর মান বিচারে এ মাত্রাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণ বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ মিলিয়ন লোককে হত্যা করে। মূলত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায়।

এই অবস্থার মধ্যেও গত বছর পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বায়ুদূষণ রোধে নির্দেশিকার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। নির্দেশিকায় রাস্তা নির্মাণের সময় নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, বিটুমিনের ওপর বালু না ছিটিয়ে মিনি অ্যাসফল্ট প্ল্যান্টের মতো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার, রাস্তার পাশের মাটি কংক্রিট বা ঘাসে ঢেকে দেওয়া, রাস্তা পরিষ্কারে ঝাড়ুর পরিবর্তে ভ্যাকুয়াম সুইপিং ট্রাক ব্যবহার, বড় সড়কে কমপক্ষে দুবার পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নেওয়া- কোনোটি কার্যকর করার উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি।

যানবাহন ও শিল্প কারখানার ধোঁয়া; বস্তিতে প্রায় চল্লিশ লাখ চুলায় আবর্জনা, কেরোসিন ও কাঠ-কয়লা দিয়ে রান্নার ধোঁয়া; ইটভাটা; ঢাকার বাইরে থেকে আসা হাজার হাজার ট্রাক ও যানবাহনের ধুলা ও ধোঁয়া এবং রাস্তা ও চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণকাজের ধুলা বায়ূ দূষণের অন্যতম কারণ। এগুলোর পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণের জন্যও এখানকার বায়ু দূষিত হয়ে থাকে। ঢাকার আশপাশে প্রচুর ইটভাটা রয়েছে এবং সেগুলো দূষণের জন্য মারাত্মকভাবে দায়ী। অনেক দেশে ইটভাটা নেই। তারা সিমেন্টের তৈরি ব্লক ব্যবহার করে। আমরাও ব্লক ব্যবহার করতে পারি।

আমাদের এখানে গৃহের ভেতর দূষণ (ইনডোর এয়ার পলুশন) বেশি হয়। আমরা স্বাস্থ্যসম্মত রান্নাঘর ব্যবহার করি না বলে আমাদের রান্নাঘর থেকেও প্রচুর বায়ুদূষণ হয়। এসব বিষয়ে যদি আমরা সচেতন হই তাহলে দূষণ কম হবে। কাজগুলো অল্প অল্প করে শুরু করতে হবে। এ জন্য সরকারি পর্যায় থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।

বায়ু দূষণের কারণগুলোই বলে দিচ্ছে এ দূষণ কমানো বা রোধ করা সম্ভব। কিছু নিয়ম, কিছু পরিকল্পনা এবং সমন্বিত উদ্যোগই কমাতে পারে বায়ু দূষণ। শুধু স্থানীয়ভাবে ঢাকায় বায়ুদূষণ কমালে কাজ হবে না। এ জন্য আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণ বন্ধ করার বিষয়ে আঞ্চলিকভাবেও উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে সব দেশের একমত হওয়া প্রয়োজন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত