ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হরেক মানুষের হরেক ইফতারি

দুঃখবোধ গোছাতে হবে অসচ্ছল মানুষের
হরেক মানুষের হরেক ইফতারি

আমাদের সমাজে হরেক রকম মানুষ বসবাস করে। যারা রোজা পালন করেন তারা হরেক রকম খাবার দিয়ে ইফতার সম্পন্ন করেন। এই মাসটি সংযমের মাস হলেও মানুষ সংযমের পথে নেই। যার যেমন সাধ্য আছে, সে তেমন করে ইফতার বা সাহরির আয়োজন করছেন। তবে আর্থিক অসঙ্গতির জন্য সব মানুষ হয়তো পরিবারের চাহিদা মতো ইফতার সামগ্রী কিনতে পারেন না। আয়োজন করা যায় না পছন্দের ইফতারির। যারা অর্থবিত্তের মালিক তারা নামিদামি হোটল কিংবা বিভিন্ন অভিজাত্য বাজার থেকে ইফতার সামগ্রী সংগ্রহ করেন। আপনজনদের নিয়ে ইফতার করেন। তারা পরিবারের প্রতিটি সদস্যের পছন্দের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। ইফতারের বাহারি নাম শুনলে খাওয়ার বাসনা জাগ্রত হয়। যাদের আয় রোজগার কম। তাদের জন্য ইফতারের আয়োজনও স্বল্প পরিসরে হয়ে থাকে। যারা আবর দেশগুলোর মতো ধনী দেশে জন্মগ্রহণ করেছে, তারা জন্মগতভাবেই সম্পদশালী। তারা পছন্দ মতো পণ্য সামগ্রী দিয়ে ইফতার করেন। আস্ত দুম্বা দিয়ে দিয়ে ইফতার করার মতো ঘটনা নাকি অহরহ ঘটে থাকে আবর পরিবারে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ইফতার কিংবা সাহরি মসজিদে রেখে দিয়ে আসে এলাকার মানুষ। যাতে অস্বচ্ছল মানুষ তা খেতে পারে।

ভিন দেশি মানুষ রমজান মাসে মসজিদের খাবার খেয়েই নাকি পুরো রোজার মাস অতিবাহিত করে। আবার আমাদের দেশের অনেক মানুষ আছেন, যারা সামান্য কিছু খাবার দিয়ে ইফতারসম্পন্ন করেন। কেউ কেউ হয়তো বাড়তি হিসেবে এক গ্লাস শরবর কিংবা দু’চারটা খেজুর খাওয়ার বিলাসিতা করতে পারেন না। ফলমূল কিনে খাওয়ার মতো আর্থিক সামার্থ্য অনেকের হয় না। তারপরও মানুষ রোজা পালন করে মহান আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ট জীব মানুষের মধ্যে অনেক রকম ফের। প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির নিয়ে আমাদের বেচে থাকতে হয়। তবে যারা ঈমানদার তারা এ নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করেন না। মহান আল্লাহর সন্তষ্টিই তাদের লক্ষ্য। মহান আল্লাহ তাদের কিসমতে যা রেখেছেন তারা তা গ্রহণ করেই আত্মতৃপ্ত থাকেন। তারা সব কিছুতেই আল্লাহর ওপর নির্ভর করেন। নিশ্চয় মহান আল্লাহ এসব রোজাদারকে পছন্দ করেন। তবে আমাদের সমাজে যারা সামর্থ্যবান তারা যদি এই পবিত্র রমজান মাসে তাদের আশপাশের অভাবি মানুষের প্রতি একটু খেয়াল রাখেন, তাদের পাশে দাঁড়ান, তাহলে ওইসব অভাবগ্রস্ত মানুষ এই রমজান মাসে ইফতার ও সাহরির জন্য উপাদেয় খাবার সংগ্রহ করতে পারবেন। আমাদের দেশের গণমাধ্যমগুলো বাহারি ইফতার তৈরি কিংবা ইফতার বাজার সম্পর্কে যেসব প্রতিবেদন প্রচার করেন তা দেখে মানুষ ওইসব নামি-দামি খাবার কিনতে উদ্ধুদ্ধ হয়। যাদের ওই সব সামগ্রী কেনার সামর্থ্য নেই তারা হয়তো আফসোস করতে পারেন। প্রথম দশক পেরিয়ে দ্বিতীয় দশকে পড়েছে পবিত্র রমজান মাস।

মাসজুড়েই ইফতার আয়োজন নিয়ে উৎসবমুখর থাকে রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারসহ সারাদেশের হাট-বাজার। জোহরের নামাজের পর থেকে ইফতার বাজারে মানুষের আনাগোনা শুরু হয়। বিকাল গড়াতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। আর্থিক সংকট কিংবা অনেকের সঙ্গে একসঙ্গে ইফতার করার সওয়াব কিংবা মনের আনন্দে অনেকে আবার মসজিদে ইফতার করেন। রমজান মাসে ফলের চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম নিয়ে একরকম অস্থিরতা চলছে। কেউ সিন্ডিকেটের দোষ দিচ্ছেন, আর কেউ বেশি বেশি শুল্ক আরোপের দোহাই দিচ্ছেন। বাজারে থাকা সব ধরনের ফলের দামই এখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি। কোনো কোনো ফলের দাম শুধু রমজান উপলক্ষ্যে দ্বিগুণ হয়েছে। তারপরও মানুষ কিছু কিছু কিনে খাচ্ছে। মহান আল্লাহ মানুষকে তাদের পছন্দের খাবার জোগাড় করার তৌফিক এনায়েত করুক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত