বাহির দেখে বিচার করা অভিনয়ে ভালো থাকা!

রাজু আহমেদ

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বাহিরে হাসি দেখানো আর ভেতরে ভালো থাকাণ্ডঢের তফাৎ আছে। সময়ের প্রয়োজনে, নিত্যকার জীবনযাপনে কতরকমের অভিনয় করতে হয়! ভেতরটা পুড়ে যাচ্ছে তবুও বলতে হয়- এইতো বেশ ভালো আছি। পারিপার্শ্বিকতা নানাভাবে দুঃখ দেয়, প্রিয়জন আঘাত করেই সুখ পায় কিংবা প্রয়োজন স্বার্থের টানে দূরে যায়-এভাবেই ব্যথার তরী ভরে ওঠে। শত বেদনার মাঝেও নানান পোশাকে সাজতে হয়, বাহারি ঢঙে ছবি তুলতে হয় কিংবা নানা ভাঁজের কথা বলতে হয়! আদতে ভালো না থাকলে এই সমাজ-সভ্যতার কিছু যায়-আসে না কিন্তু ভালো না থেকেও যদি ভালো থাকার অভিনয় না করেন তবে সবাই তিক্ত কথায় জাপটে ধরে, খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তৃপ্তি খোঁজে কিংবা পাছের কথায় ঝড় ছোটাবে! সমাজ-সংসার বাহির দেখে বিচার করে! ভালো থাকা, না থাকা যে ভেতরে থাকে সে বুঝ ক’জনে বোঝে? দরদ আর ক’জনে ধরে! আঘাত করতে করতেও কামনা করে আঘাতপ্রাপ্ত পৃথিবীকে জানাতে বলুক-ভালো আছি! সবাইকে দেখিয়ে দিক-সুখে আছি! অথচ ভেতরটা দেখানো যায় না। কখনো কখনো দেখানো হয় না! কাউকে কাউকে দেখাতে ইচ্ছাও করে না! কেউ কেউ দেখতেও চায় না বা পায় না। সমাজ বাহ্যরূপ দেখে মানুষের বিচার করে বলে চির দুঃখীজনও ভালোর ছদ্মবরণে সমাজকে ঈর্ষান্বিত করে রাখতে চায়! আসলেই ভালো আছি- এটা সমাজস্থদের হিংসার মহান কারণ! কেউ মহাদুঃখে আছে-সমাজ এমন কাউকে পেলে খুব সন্তুষ্ট হয়! বেদনার বড় বড় পাহাড় সেখানে চাপিয়ে দিয়ে মহানন্দ পায়! সমাজের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে তাই ভালো থাকার অভিনয় এই এখানে নতুন কিছু নয়। সেজন্যই বাথরুমে জড়ানো অশ্রুফোঁটার খোঁজ বেডরুমের সহবাসী বহুলাংশেই জানে না। একাকীত্বের যাতনা আড্ডায় কেউ কোনদিন তোলে না। বৃষ্টির সাথে মিশে যায় চোখের পানি! বালিশ শুষে নেয় যে নোনাজল সেটাই আসল আপনি-আমি! দুঃখগুলো কেউ ধরে ফেলুক, নিজস্বতা কেউ জেনে যাক, বাধ্য না হলে এসব কাউকে কখনোই জানানো হয় না। জীবনটা মানাতে মানাতে চলে যায়। রেখে যায় স্মৃতিচিহ্ন! যার পদাঙ্ক অনুসরণ করে কেউ খোঁজে না। যে দুঃখের কেউ ভাগীদার হয় না, যে ব্যথায় কেউ মমত্বের স্পর্শ দেয় না কিংবা সুজন হয়ে স্বান্তনার অংশীজন পর্যন্ত হয় না, সেখানে কষ্ট-ব্যথার হাঁটবার বসালে কেউ দরদাম করার প্রয়োজনও মনে করবে না! প্রয়োজনের পৃথিবীতে প্রিয়জনের সাথে জ্যোছনা দেখা, বারিষ ছোঁয়া কিংবা নদীর তীরে হাঁটা-এমন সৌভাগ্য খুব কম মানুষের হয়!