অভিমত

দাম্পত্য জীবনের সংকট ও বিচ্ছেদের ঝুঁকি

প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

জীবন চলে জীবনের নিয়মে। যেমন শৈশব থেকে কৈশোর হয়ে যৌবন পেরিয়ে আসে বার্ধক্য। জীবন চলতে থাকে, কালের বহমানতায় আসে শারীরিক, সামাজিক, মতাদর্শ, কর্ম ক্ষমতাসহ বহু পরিবর্তন। এমন সব পরিবর্তনের অন্যতম যৌবনকালে বিবাহের প্রয়োজনীয়তা। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মীয় মানুষ বিবাহ নামক সামাজিক ও ধর্মীয় বিধির মাধ্যমে নারী-পুরুষ একত্রে বাস করার অনুমতি পায়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন অনুযায়ী ২১ বছর বয়সি প্রতিটি ছেলে ও ১৮ বছর বয়সি প্রতিটি মেয়ে বিবাহের জন্য উপযুক্ত। কিন্তু বিবাহের পর অনেকের দাম্পত্য জীবনে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। যার পরিণতিতে কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা দেয় সম্পর্কের প্রতি অনীহা বা বিচ্ছেদ। কিন্তু বিবাহের পরই অল্প কিছুদিনের মধ্যে বিচ্ছেদ ব্যাপারটি সদ্য বিবাহিত ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্যই হতাশার এবং আক্ষেপের। সামাজিক বিভিন্ন প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এই বিচ্ছেদে ঝুঁকি থাকার কারণগুলো তুলে ধরা যায় ও সমাধানে এগিয়ে নেয়া যায়। প্রথমত দেখা যায়, বিবাহের পূর্বে ছেলে কিংবা মেয়ে কিংবা উভয়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সুতরাং তারা প্রাক্তনকে ভুলে হুট করে সংসারে মনোযোগী হতে পারে না। দ্বিতীয়ত, যৌতুক প্রথার শিকার হয়ে সংসার জীবনে হতাশায় ডুবে যান অনেক তরুণী। তৃতীয়ত, নতুন পরিবেশ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেন না অনেকে। স্থান ঘর ও সামাজিক সম্পর্কীয় অবস্থান অনুযায়ী খাপ খাইয়ে না নিতে পারার কারণেও বিচ্ছেদের সম্মুখীন হন। চতুর্থত, স্ত্রীর দায়ভার গ্রহণ করার মতো উপার্জনক্ষমতা অনেক ছেলের থাকে না। পঞ্চমত, শ্বশুরবাড়ির পরিবেশ নারীদের জন্য প্রতিকূল হলে নারীরা কূলহারা হয়ে পড়েন। ষষ্ঠত, বিবাহ নিয়ে আশা-আকাঙ্ক্ষা তীব্র থাকলেও বাস্তবতা থাকে ভিন্ন। যে নারী বা পুরুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রেম ভালোবাসা অথবা তথাকথিত সেলিব্রিটিদের সংসার জীবন দেখে বিবাহের স্বপ্ন দেখেন, বাস্তবতা নামক বজ্রপাত তাদের সংসারকে ভেঙেচুরে দেয়। তবে একে অপরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, বন্ধুত্ব, ঘনিষ্ঠতা, অভিযোজন ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চললে বিবাহ বিচ্ছেদের ঝুঁকি কমানো যায়। ভালোবাসার ছন্দে সংসার জীবনকে পরিচালনা করতে ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই দায়িত্ব অনস্বীকার্য।

মো. তুহিন আলম, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।