ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বাস্থ্য খাতে অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ

কমিউনিটি ক্লিনিক গ্রামীণ জনগণের ভরসাস্থল
স্বাস্থ্য খাতে অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের স্বাস্থ্য খাতে আমল পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে বিশ্বের বড় বড় দেশ করোনাসহ অন্যান্য ক্রান্তিকালে যখন হাফিয়ে উঠেছে, ঠিক তখনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় এক অনন্য উচ্চতায়। স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘ থেকেও সম্মানের আসন অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এমন এক প্রেক্ষাপটে দেশে আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হচ্ছে। এই দিবসটি পালনের মধ্যদিয়ে দেশের স্বাস্থ্য খাত আরো এগিয়ে যাবে। মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা মানুষের হাতের নাগালের মধ্যে পৌঁছে যাবে, সেই প্রত্যয় নতুন করে ব্যক্ত করতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরই মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই ১০ টাকার টিকিট কেটে রাজধানীর একটি চক্ষু হাসপাতালে চোখের চিকিৎসা করান। তিনি জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করছেন বলেই জনতার কাতারে গিয়ে তিনি চোখের চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে একজন সরকারপ্রধান কতটা গুরুত্ব দেন, তার প্রমাণ তিনি রাখছেন। মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে কোনো একজন মানুষের কর্মশক্তি পুরোপুরি ব্যবহার করা যায়।

সুস্থ দেহে সুন্দর মনের বিকাশ ঘটে। স্বাস্থ্য ভালো না থকলে মানুষের কাজেকর্মে মনোযোগ থাকে না। ফলে তার কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবাও পাওয়া যায় না। আওয়ামী লীগ পূর্ব সরকারগুলো দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে তেমন কোনো নজর দেয়নি। ফলে এই খাতটি ছিল অবহেলিত। তবে গত ১৪ বছরে স্বাস্থ্য সেবায় আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ৭১,০০০ শয্যা সংখ্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল স্থাপন করেছে। যা ২০০৬ বিএনপি-জামায়াত জোটের সময়ে ছিল মাত্র ৩৩,৫৭৯ বিশিষ্ট। ১৯৯৮-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার মোট ১০,৭২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছিল। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি সরকার এসে সকল ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। অপরদিকে আওয়ামী লীগ সরকার ১৪,৯৮৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এ মহৎ উদ্যোগের জন্য জাতিসংঘ হতে ??‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। ২০০৬ সালে সরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ছিল ১২টি, ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করেছে। বর্তমানে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৭২টি, ২০০৬ সালে ছিল ২৪টি। ২০০৬ সালে বিশেষায়িত হাসপাতালের সংখ্যা ছিল মাত্র ৮টি, বর্তমানে যার পরিমাণ ১৫টি। উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতাল সংখ্যা ২০০৬ সালে ছিল ২০৮টি, ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকার স্থাপন করেছে ৪৩১টি।

এছাড়া সরকারি ডাক্তারের সংখ্যা বর্তমানে ৩০ হাজার ১৭৩ জন, ২০০৬ সালে যা ছিল ৯ হাজার ৩৩৮ জন। মেডিকেল টেকনোলজিস্টের সংখ্যা বর্তমানে ৬ হাজার ২৬৪ জন, ২০০৬ সালে ছিল মাত্র ১ হাজার ৯৮৮ জন। নার্সিং কলেজ অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের সংখ্যা ২০০৬ সালে ছিল ৩১টি, বর্তমানে ৩ গুণ বৃদ্ধি হয়ে ৯৯টি স্থাপনা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। শুধু তাই নয়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষা রক্ষার্থে আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে ১৮ হাজার ৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে। যার মাধ্যমে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ খুব সহজেই প্রাথমিক বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন। কমিউনিটি ক্লিনিক দিন দিন মানুষের ভরসাস্থলে পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশে যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, মা ও নবজাতকের ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি, নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়া, পোলিও মাইলাইটিস, হাম ও রুবেলা এ রোগগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। ইপিআই কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশে বিনামূল্যে এ টিকাগুলো দেয়া হয়। বর্তমানে তা ৯৮ শতাংশেরও বেশি সফল করতে সক্ষম হয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এ কর্মসূচির ফলে পঙ্গুত্ব রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সফলতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার দিয়েছে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন এবং ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)। ২০২০ সালে যখন করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের সকল বাঘা বাঘা দেশগুলো করোনা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেয়েছিল। তখন শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের নাম করা দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে থেকে নিজের নেতৃত্বের কথা জানান দেন। এমনকি অর্থনীতিতে যেখানে সমগ্র বিশ্ব করোনার কারণে পিছিয়ে পড়ে, সেখানে অর্থনীতিতে আমাদের অবস্থান ছিল অনেক উপরে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খুব দ্রুতই পৌঁছে যাবে আরো উন্নয়নশীল দেশের তালিকায়। তবে সেজন্য জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত