ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাগ্রত হোক ঈদের মহিমা

সম্প্রীতির বন্ধনে গড়ে উঠুক ভ্রাতৃত্ব বোধ
জাগ্রত হোক ঈদের মহিমা

ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানেই অনাবিল আনন্দ উৎসব। প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের আগমনে বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ ঈদের মহিমা জাগ্রত হয়। বাংলাদেশের মুসলমানরাও ঈদকে তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে উদযাপন করে। প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ এসেছে। চারদিকে ঈদের আমেজ। রং হারিয়ে ফ্যাকাসে বর্ণ ধারণ করেছে এবারের ঈদ। বাস, ট্রেন ও নৌপথে মানুষ শিখড়ের সন্ধানে বাড়ি ফিরছেন। পথে যানজটের মধ্যে পড়লেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনজনকে জানিয়ে দিচ্ছেন, তাদের সর্বশেষ অবস্থান। ফলে দুশ্চিন্তা কিংবা দুর্ভাবনার কোনো সুযোগ নেই। পথের ক্লান্তি নেই বললেই চলে। মধ্যরাত পর্যন্ত মানুষ ঈদের কেনাকাটা করছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় রমজানে মানুষের তেমন একটা কষ্ট হয়নি। এক বছর পরও ঈদ এসেছে। মানুষ তার সাধ্যমতো কেনাকাটা ও খাবারের আয়োজন নিয়েই এখন ব্যস্ত থাকছে। ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলির রীতিনীতি মানুষকে আকষ্ট করে। মানুষ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

সেই সঙ্গে ছোটদের জন্য রয়েছে ঈদ বখশিশ। আমরা ছোটবেলায় মরব্বীদের পা ছুয়ে সালাম করে সামন্য একটু সময় অপেক্ষা করতাম। কেউ কিছু টাকা দিলে খুশি মনে নিলাম। দিনভর সালাম করে যা সংগ্রহ হতো, পরে কোনো সুবিধাজনক সময় দোকান থেকে ভালো কিছু কিনে খেতাম। তবে এখনকার ছেলেমেয়েরা অনেকটা বলে কয়ে ঈদের বখশিশ দাবি করে আদায় করে। রাজধানী ছেড়ে অনেকে বাড়ি-ঘরে গেছেন ঈদপালন করতে। তাদের জন্য রয়েছে অবারিত আনন্দ। জন্মভিটার টান সবার মধ্যে সদাজাগ্রত। জন্মভূতিতে বসে ঈদ উদযাপনের কোনো তুলনা হয় না। ঈদের সময় অনেকে বাড়িতে আসেন। তাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হয়। কর্মজীবনের ক্লান্তি ভুলে গিয়ে মানুষ আনন্দঘন পরিবেশে কয়েকটা দিন কাটায়। এখানেই ঈদের প্রকৃত আনন্দ। পরিবারের সকলে ঈদের অনাবিল আনন্দে প্রতিটি মুহূর্ত কাটায়। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্বাদ ও রকমারি খাবার খেতে খেতে গল্প গুজব করার মতো উপভোগ্য আর কিছুই যেন হতে পারে না। ঈদের সময় ধনীরা অপেক্ষাকৃত দরিদ্র আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নেন। তাদের জন্য পোশাক-পরিচ্ছদ কেনেন। তা না হলে ফিতরার পাশাপাশি কিছু বাড়তি টাকা তুলে দেন। ফলে দারিদ্র্য মানুষও ঈদের সময়টিতে একটু ভালো খাবার খেতে পারেন। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হয়ে উঠে। ঈদের সময়টি আনন্দের মধ্যে কাটলে আমাদের সমাজে নানা ঝগড়া বিবাদও ঈদের সময় হয়ে থাকে। মানুষ মারামারি বা রক্তারক্তির মতো ঘটনার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ে। কখনো কখনো হতাহতের মতো ঘটনাও ঘটে। সেটা যেন কোনো ক্রমে না হতে পারে, সে জন্য খুবই সতর্ক থাকতে হবে। আবার অনেক সময় ঈদের নামাজ আদায় করতে গিয়ে তুচ্ছ কারণে মারামারি কিংবা খুনোখুনির মতো ঘটনাও ঘটে। এই ধরনের পরিস্থিতির যাতে কোনো অবতারণা না ঘটে, সেদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

মনে রাখা উচিত, ঈদের আনন্দ ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষ উপভোগ করবে, সেটাই সবার কামনা। তবে ঈদে যেতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকের হতাহতের ঘটনাও ঘটে। সে কারণে রাস্তায় অত্যন্ত সাবধান থাকতে হবে। সেই সঙ্গে যারা যানবাহন চালান, তাদেরও সতর্কতার সঙ্গে যানবাহন চালাতে হবে। মনে রাখতে হবে, একটি প্রাণ অনেক মূল্যবান। একজন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো পরিবারে নেমে আসে বিষাদের ছায়া। ঈদের ময়দানে মোনাজাতে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনার পাশাপাশি মানুষের মধ্যে যেন সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব জাগ্রত হয়, সেই দোয়া করতে হবে। ঈদ সবার জন্য আনন্দের ও উপভোগের হোক- সেই কামনা থাকবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত