ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগ

শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাও জরুরি
সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের চিত্তবিনোদন ও শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের জন্য সংগীতচর্চা ও শারীরিক শিক্ষক থাকার কোনো বিকল্প নেই। শিশু শিক্ষার্থীরা অনেকটা আবেগময় জীবনযাপন করে। এ ছাড়া তাদের মধ্যে অনেকে খেলাধুলার করার মন-মানসিকতা পোষণ করলেও খেলার মাঠে অভাবে তারা খেলাধুলা করতে পারে না। তবে শিক্ষাঙ্গনে যতটুকু ফাঁকা স্থান থাকে, সেখানে শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়ে শারীরিক কিছু অনুশীলন করলে রক্ত সঞ্চালন গতিশীল হবে এবং দেহ ও মন ফুরফুরে থাকবে। আমদের দেশে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষক রয়েছেন। তবে সংগীত শিক্ষক থাকলেও তাদের কর্মকাণ্ড সীমিত। অথচ প্রতিদিন শারীরিক অনুশীলনের সঙ্গে সংগীতচর্চার আয়োজন থাকলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসলতা কমে যেত, তারা আনন্দচিত্তে পড়াশোনা করতে পারত। শিক্ষার্থীরা সুস্থ-সবলভাবে বেড়ে না উঠলে তাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং সংস্কৃতির বাসা-বাধার আশঙ্কা থাকে। সরকার দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ের ৫ হাজার ১৬৬ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। কেন না, আমাদের আগামী দিনে নাগরিক আজকের শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মনমানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করাও সমাজের দায়িত্ব। এসব শিক্ষক নিয়োগের জন্য পদ সৃজনের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরইমধ্যে সংগীত বিষয়ে ২ হাজার ৫৮৩ জন এবং শারীরিক শিক্ষাবিষয়ের শিক্ষক ২ হাজার ৫৮৩ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে। আগামী ২ মে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির ১১তম সভায় এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হতে পারে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া সভায় ২০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পক্ষ থেকে ৫ হাজার ২৯৮টি পদ সৃজনের প্রস্তাব উঠছে। এর বাইরে ৬টি বিধিমালার সংশোধনের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হতে পারে। সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ের ৫ হাজার ১৬৬ জন শিক্ষক নিয়োগে পদ সৃজনের প্রস্তাবে সম্মতি দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রশাসনিক উন্নয়ন কমিটির সভার পর অর্থ বিভাগের সম্মতি নিয়ে সচিব কমিটিতে এই প্রস্তাব পাঠানো হবে। তারপর সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারবে মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২০ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষার মান বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক সংস্কারে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই সময় নতুন করে ১ লাখ ৬৯ হাজার ১২৪টি শিক্ষকের পদ সৃজনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এসব পদের মধ্যে ২ হাজার ৫৮৩টি সংগীত, ২ হাজার ৫৮৩টি শারীরিক শিক্ষা, সাধারণ শিক্ষকের পদ ৯৮ হাজার ৩৩৮টি এবং সহকারি প্রধান শিক্ষকের পদ ৬৫ হাজার ৬২০টি। এই প্রস্তাবের মধ্যে সম্প্রতি সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ের পদ অনুমোদন প্রস্তাবের সম্মতি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন-কর্মসূচির (পিডিপি-৪)-এর আওতায় এসব শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়া হবে। মন্ত্রণালয় আরো জানায়, এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় এসব শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। বেতন-ভাতার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এখন আনুষ্ঠানিক সম্মতি প্রয়োজন হবে। এরপর প্রস্তাবটি প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে পাঠানো হয়। সচিব কমিটি অনুমোদন দিলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেবে। অন্যদিকে, প্রশাসনিক উন্নয়ক সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো (কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা-২০২৩, প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন অনুবিভাগ সৃজনের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়কে ছোট ক্যাটাগরি থেকে বড় ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাবসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। বিদ্যালয়ে শুধু পাঠদান করার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানে জগতে প্রবেশ করানো যায়। তবে মন ও শরীর ভালো না থাকলে শিক্ষাজীবনে কখনো কখনো বিষণ্ণতা নেমে আসে। এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত