মে দিবসের ভাবনা : কৃষকের অধিকার নিশ্চিত করা হোক

কৃষিবিদ মো. বশিরুল ইসলাম

প্রকাশ : ০১ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

কেশবপুরে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ধানের বিচালি বেঁধে বাড়িতে আনার সময় ২৯ এপ্রিল জোহর আলী সরদার (৫০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নওগাঁর রানীনগরে তীব্র গরমে জমিতে ধান কাটার সময় ‘হিট স্ট্রোকে’ ২৭ এপ্রিল রেজাউল ইসলাম (৪৬) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরে বোরো ধান কাটতে গিয়ে সাপের কামড়ে ২৫ এপ্রিল আজাদ মিয়া (৫৮) মৃত্যু বরণ করেন। এরকম কৃষকের মৃত্যু খবর প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও পাওয়া যাচ্ছে। তারপরও কৃষকরা দেশের চাকা সচল রাখতে দিন-রাত পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করে চলছেন। আর এই ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষকরা অথবা আমরা সাধারণ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করি। তাদের কাছে কিসের দাবদাহ, শৈত্যপ্রবাহ, রোদণ্ডবৃষ্টি, ঝড়-তুফান যা-ই হোক প্রতিদিন কাজ করতেই হবে। আর ‘মে দিবস’ কি? কী কারণে এই দিনটিকে ‘মে দিবস’ বলা হয়? তা জানা নেই কৃষকদের! কেবল জানেন, একদিন কাজ না করলে পরদিন আর পেটের ভাত জোগাড় হবে না।

শ্রমিকদের সম্মানে মে দিবস জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালন করে বিশ্বের ৮০টি দেশ। কিন্তু যাদের নিয়ে এই দিবস, তারা এ সম্পর্কে কতটা অবগত? অনেক শ্রমিক জানেনই না এর ইতিহাস। তাদের কাছে আসে নেহায়েত ৩০ এপ্রিলের পরের দিন ১ মে, সেই হিসেবে। এই দিনে সরকারি ছুটি থাকে, কিন্তু কৃষকরা জানেন না। তারা ব্যস্ত সময় পার করছে বোরোধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলতে। শুনেছি, শ্রমিকদের অধিকার ও দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে মে দিবস পালিত হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মে দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় মে দিবস। এই দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য থাকে শ্রমিকদের তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা। যাতে করে তারা মে দিবসের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারেন ও নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে আমরা মে দিবস পালন করি, সেটি কতটা সফল হয়, তা নিতে প্রশ্ন আসতে পারে। আসাটা বেশ স্বাভাবিক।

১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের শ্রমিকরা দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ করার জন্য আন্দোলন শুরু করেন। তাদের এ দাবি কার্যকর করার জন্য তারা সময় বেঁধে দেন ১৮৮৬ সালের পহেলা মে পর্যন্ত। বারবার মালিকপক্ষের কাছে দাবি জানানো হলেও কোনো সাড়া না পাওয়ায় শ্রমিকদের প্রতিবাদ চরমে ওঠে। ফলাফলে ১৮৮৬ সালের ৪ মে শিকাগোর হে মার্কেট নামক স্থানে ফের আন্দোলন গড়ে তোলেন শ্রমিকরা। আগস্ট স্পিজ নামে এক নেতা জড়ো হওয়া শ্রমিকদের উদ্দেশে কিছু কথা বলছিলেন। হঠাৎ দূরে দাঁড়ানো পুলিশ দলের কাছে এক বোমার বিস্ফোরণ ঘটে, এতে মেথিয়াস জে. ডিগান নামের একজন পুলিশ স্পটেই এবং আরও ছয়জন পরবর্তীতে নিহত হন। পুলিশবাহিনী শ্রমিকদের ওপর অতর্কিতে হামলা শুরু করে- যা দাঙ্গায় রূপ নেয়। এই দাঙ্গায় ১১ জন শ্রমিক শহীদ হন। এ ঘটনার দুই বছর পর ১৮৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের শতবার্ষিকীতে প্যারিসে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ১৮৯০ সাল থেকে শিকাগো প্রতিবাদের বার্ষিকী আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশে পালনের প্রস্তাব করেন রেমন্ড লাভিনে। পরে ১৯০৪ সালে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে অনুষ্ঠিত সমাজতন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবি আদায় এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বব্যাপী মে মাসের প্রথম দিন মিছিল ও শোভাযাত্রার আয়োজন করতে সব সমাজবাদী গণতান্ত্রিক দল ও শ্রমিক সংঘের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানের সাড়া হিসেবে বিশ্বের সব শ্রমিক সংগঠন ১ মে বাধ্যতামূলক কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে যে দেশে এ ঘটনার, জন্ম সেই যুক্তরাষ্ট্রই মে দিবস পালন করে না। একই কথা কানাডার ক্ষেত্রেও। এই দুটি দেশ সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার শ্রমিক দিবস পালন করে থাকে।

আমাদের দেশেও রাষ্ট্রীয়ভাবে মে দিবস বর্ণ্যাঢ্য র‌্যালি, শোভাযাত্রা, শ্রমিক সমাবেশ, আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজনে পালিত হয়। সংবাদপত্রে বের করা হয় বিশেষ ক্রোড়পত্র। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সম্প্রচার করা হয় আলোচনা অনুষ্ঠান, প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ও টক শো। মে দিবস আসে আবার চলেও যায়। কিন্তু যারা দিন-রাত ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে নিরলস পরিশ্রম করে জমিতে সোনার ফসল ফলায়; তারা প্রতি বছরই কষ্টে অর্জিত ফসলের নায্য দাম পায় না এবং সীমাহীন বৈষম্যের শিকার হয়। ফসল ফলাতে গিয়ে একজন কৃষকের কী রকম শ্রম ও অর্থের প্রয়োজন হয় তা আমাদের জানা।

গ্রামে বড় হওয়ায় আমি নিজেও কৃষি কাজের সাথে সরাসরি জড়িত, তাই আমি জানি এক কেজি চাল উৎপাদন করতে কৃষকের কি পরিমাণ পরিশ্রম হয়। শহুরে একটা বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করেন চাল কোথায় পাওয়া যায়? সে বলবে দোকানে। কথা সঠিক, চাল তো দোকানেই পাওয়া যায়। এই চালকে দোকান পর্যন্ত নিয়ে আসার পেছনে কৃষকের যে অমানুষিক পরিশ্রম জড়িত রয়েছে তা কি কেজিতে ৬০ টাকা দিয়ে মেটানো যায়? আবার আপনার আমার দেওয়া এই ৬০ টাকা একটা অংশ চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের দখলে। কোনো কোনো সময় কৃষক তার প্রকৃত উৎপাদন খরচও পান না। তবুও তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করে যান। আসলে, শ্রমের ফলে মানুষ শুধু নিজের প্রয়োজন মেটায় না, উদ্বৃত্ত সৃষ্টি করে। সমাজের যা কিছু সমৃদ্ধি তা উদ্বৃত্ত সৃষ্টির ফলেই সম্ভব হয়েছে। এই উদ্বৃত্ত আত্মসাৎ করার ফলেই একদল সম্পদশালী হয় আর বাকিরা হয় নিঃস্ব।

এটা দিবালোকের মতো আজ সত্য, আমাদের দেশের কৃষক উৎপাদিত পণ্যে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। অন্যদিকে বেশি দাম দিয়ে খুচরা বাজার থেকে পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছে ভোক্তারা। অর্থাৎ ত্রুটিপূর্ণ বাজার ব্যবস্থার কারণে মাঠে কৃষক ও বাজারে ভোক্তাদের ঠকতে হচ্ছে। আসলে, কৃষকের এ দুর্দশা স্থায়ী রূপ পেয়েছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রভুদের হাতে চালু হওয়া চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে। এর ফলে ব্রিটিশ শাসক ও বাংলার কৃষকদের মধ্যে কয়েক স্তরের মধ্যস্বত্বভোগী তৈরি হয়েছিল। ব্রিটিশ প্রভু, জমিদার, জোতদার, নায়েব, বরকন্দাজ সবার ‘খাই’ মেটাতে উৎপাদক শ্রেণি কৃষক হয়ে পড়েছিল নিঃস্ব থেকে নিঃস্বতর।

এটা ঠিক, দেশ আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলছে। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। কিন্তু আমাদের কৃষকরা মধ্যস্বত্বভোগীদের সেই ‘চিরস্থায়ী দৌরাত্ম্য’ থেকে কতটা মুক্তি পেয়েছে? কেননা কৃষক চায় ন্যায্যমূল্য, ভোক্তা চায় কম মূল্য আর ব্যবসায়ী চায় বেশি মূল্য। এ তিন মূল্য সমন্বয় করে সবাইকে সন্তুষ্ট করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। রোজা সময়ে তরমুজের দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা তাই প্রমাণ করে। কৃষক থেকে তরমুজ পিস হিসাবে কিনে কেজি দরে বেশি দামে বিক্রি করায় তার মূল কারণ। এ অসন্তোষ্টি দূরীকরণের জন্য মোবাইল কোর্ট পর্যন্ত বসাতে হয়েছে। তারপরও পুরোপুরি সুরাহা মিলছে না। প্রশ্ন আসতে পারে কেন এমনটি হচ্ছে? সহজ উত্তর ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য এমনটি করছে।

শুধুমাত্র ৩ বেলা ভাত খেয়ে বেঁচে থাকাই কি কৃষকের খাদ্য নিরাপত্তা? বছরের পর বছর ধান চাষ করেও কৃষক কোনো লাভ করতে পারছে না। গত ৫ বছরে ধান চাষের খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ, কিন্তু‘ সেই তুলনায় ধানের ফলন ও উৎপাদন বেড়েছে খুব নগণ্য হারে। ধান চাষে কৃষক কোনো লাভ করতে পারছে না, তাহলে কৃষক কেন ধান চাষ করবে? বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বেঁধে দেওয়া মূল্যে ব্যবসায়ীরা খুচরা বাজারে পণ্য বিক্রি করছেন না। সরকারি সংস্থাগুলো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যে মূল্য প্রকাশ করে, বাজারে তার সঙ্গেও কোনো মিল পাওয়া যায় না। চাহিদা ও সরবরাহের তথ্যেও রয়েছে গরমিল। ময়মনসিংহের তারাকান্দা ও ফুলপুর উপজেলায় শসার কেজি ৪ টাকা, আবার সে শসা রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় মরিচের কেজি ১০ টাকা, আবার একই সময় এ মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, কৃষকদের জন্য সুসংগঠিত কোনো বাজার ব্যবস্থাপনা আজও গড়ে ওঠেনি। এ ব্যবস্থার সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে আমাদের এখানকার মতো মুক্তবাজারি ব্যবস্থা।

একটি বিষয় স্পষ্ট করে বুঝতে হবে, কৃষি ক্ষেত্রে শুধু ভর্তুকি এবং সামান্য প্রণোদনা দিলেই কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। কারণ বাংলাদেশের কৃষক একটি কাঠামোগত সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। কৃষককে লাভবান করতে হলে রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার প্রয়োজন। ধান উৎপাদনের উপকরণ সুলভ মূল্য কৃষকের কাছে দিতে হবে এবং ধানের উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে, যাতে কৃষক লাভবান হতে পারে। আগে কৃষকের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে ধান চাষে কৃষক দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে এবং দেশ খাদ্য নিরাপত্তার অধিক ঝুঁকিতে পারবে।

ভাতের সঙ্গে অন্য যেসব পুষ্টিকর খাবার, শাক-সবজি, দুধ, ডিমসহ সবকিছুর দাম প্রথমে করোনা এবং পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে দ্বিগুণ বেড়েছে। ফলে, হাজারো নিম্ন আয়ের কৃষক তাদের খাদ্য তালিকা ছোট করতে বাধ্য হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেকেই কম কিনছে এবং কম খাচ্ছে। ফলে যে কৃষককে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে হয়, সেই কৃষকের শরীর দিন দিন অপুষ্ট হচ্ছে। সঙ্গে তার পরিবারের সবাই পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ যে পুষ্টিকর খাবার কৃষক নিজে উৎপাদন করছেন, টাকার অভাবে কৃষক ও তার পরিবারের সদস্যরা সেই খাবার খেতে পারছেন না। ২ মণ ধান বিক্রি করে ১ কেজি ইলিশ মাছ খাওয়ার সামর্থ্য কয়জন কৃষকের আছে? অথবা ১ মণ ধান বেচে ১ কেজি মাংস কৃষক বছরে কয়দিন কিনতে পারে?

যদি কৃষক পর্যায় থেকে সরাসরি পাইকারি ও খুচরা বাজারে তাদের পণ্য বিক্রি করার উপায় থাকত, তবে মধ্যস্বত্বভোগীরা অতি মুনাফা করতে পারত না। আর কৃষককদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হলে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের সরাসরি বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক কৃষক সংগঠন তৈরি করে গ্রুপ মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে করা যেতে পারে। তবে এ কাজটি করা কঠিন। কারণ কৃষক সংঘবদ্ধ থাকতে চায় না। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বেশ সংঘবদ্ধ। মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মীরা উৎপাদনের পেছনে যে পরিমাণ শ্রম ও সময় ব্যয় করে তার কিছুটা সময় যদি ফসল বিক্রয়ে সহায়তা করতে পারত তবে কৃষক কিছুটা লাভবান হতো। যদিও বিপণন কাজটি করার দায়িত্ব বর্তায় কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ওপর। কিন্তু কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সেট-আপ ইউনিয়ন বা উপজেলা পর্যায়ে নাই। আছে শুধু জেলা পর্যায়ে সীমিত জনবল নিয়ে। জেলা পর্যায়ে বাজার মনিটরিং করতেই তাদের হিমশিম খেতে হয়। ইউনিয়ন বা উপজেলা পর্যায়ে দেখবে কে? তাই উপজেলা পর্যায়ে কৃষি বিপণন কর্মকর্তার জনবলসহ একটা পূর্ণাঙ্গ সেট-আপ দরকার। সে পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে।

আসলে ভোক্তার স্বার্থরক্ষা করতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে যে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করার কথা, তা হচ্ছে না। ফলে কিছু ব্যক্তি-গোষ্ঠীর হাতেই চলে যাচ্ছে নিত্যপণ্যের বাজারের নিয়ন্ত্রণ। তারা কারসাজি করলেও সরকারের তখন আর কিছু করার থাকে না। এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে। মুক্তবাজার অর্থনীতির মানে এই নয় যে, ব্যবসায়ীরা যা ইচ্ছা তা-ই করবে আর সরকার চেয়ে চেয়ে তা দেখবে। বস্তুত, বাজার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারের কঠোর অবস্থানের কোনো বিকল্প নেই। বাণিজ্যমন্ত্রী শুধু মুখেই বলে চলেন, অসাধু পন্থা নেওয়া হলে সংশ্লিষ্টদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। কিন্তু বাস্তবে কেউ শাস্তি পায় না।

আমি মনে করি, যদি বাংলাদেশের কৃষকের স্বার্থ রক্ষা না হয় তবে তার সার্বিক ফলাফল কোনোভাবেই ইতিবাচক হওয়া সম্ভব নয়। তাই কৃষকের ন্যায্যমূল্য এবং অধিকার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

লেখক : উপ-পরিচালক, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।