কৃষিজমি রক্ষায় সরকারকে কঠোর হতে হবে

আফতাব চৌধুরী

প্রকাশ : ২১ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে কৃষিজমি যে বাড়ছে না, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষি গবেষণায় গুরুত্ব দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের লোকসংখ্যা বাড়তেই থাকবে। সেই সঙ্গে খাদ্যের উৎপাদনও বাড়াতে হবে। কিন্তু জমির পরিমাণ ঠিক সেই হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে না। কৃষি গবেষণা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিকল্পিত শিল্পায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে আমরা নির্দেশ দিয়েছি দুই ফসলি বা তিন ফসলি জমি কোনোভাবেই এ কাজে ব্যবহার করা যাবে না। অন্য জমিগুলোতে আমরা শিল্পায়ন থেকে শুরু করে যা করার করব আর এটা আমাদের করতে হবে পরিকল্পিতভাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি এলাকার খাল, বিল ও পুকুর আমরা সংস্কার করব। সেখানে যেন পানি ধারণ ক্ষমতাটা বৃদ্ধি পায়, তার ফলে সেখানে মাছের উৎপাদনও বাড়বে। সেচের জন্য ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার না করে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগও প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি। শেখ হাসিনা জানান, গত ৯ বছরে সব খাত মিলিয়ে মোট ৬০ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। কৃষি প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কার্যক্রম বাবদ ৭৮৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। সেখানে যে বিনিয়োগ হবে বিনিয়োগকারীদের আমি আহ্বান করব, সেখানে কৃষিপণ্যগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করার শিল্পও যেন তারা গড়ে তোলেন।

বাংলাদেশ একটি কৃষিভিত্তিক উন্নয়নশীল দেশ। দেশটি ঘনবসতি পূর্ণ। অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। দেশের মোট জনসংখ্যার ৮৫ ভাগ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। দেশের সব উন্নয়ন তৎপরতা এ কৃষিকে ঘিরেই ধীর পায়ে এগিয়ে চলছে। কৃষি থেকেই আমাদের জাতীয় আয়ের ৬০ ভাগ অর্জিত হয়।

কৃষি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চালিকা শক্তি। বৈদেশিক রপ্তানিতে কৃষিপণ্যই প্রধান। কৃষি ও কৃষকের সমৃদ্ধির উপরই দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ননির্ভর করে। কৃষির অগ্রগতির সঙ্গে মোট জনগোষ্ঠীর খাদ্য সরবরাহ, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান ইত্যাদির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে।

বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ বসতবাড়ি রয়েছে। এসব বাড়ির মানুষের জীবিকার প্রধান অবলম্বন কৃষি। গ্রামের গৃহস্থের বাড়িগুলোতে পরিকল্পিতভাবে শাকসবজি, ফল, ঔষধি গাছ ও মশলার চাষ করে ক্ষুধা ও অপুষ্টি দূর করার পাশাপাশি অর্থ উপার্জনের উৎস হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় শাকসবজি, বাড়ির সীমানায় ফলবৃক্ষ ও ঔষধি গাছ রোপণ করতে পারলে অব্যবহৃত জমিগুলো কাজে লাগবে। পাশাপাশি এতে পরিবারের পুষ্টির প্রাপ্যতা ও আয় বৃদ্ধি পাবে এবং পরিবেশও উন্নত হবে। স্বল্প আয়ের এসব জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা ব্যয় লাঘব হবে। প্রতিটি অর্জনই গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচনের উপকরণ হিসেবে কাজে করবে।

লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, কত দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে কৃষিজমি। অবিশ্বাস্য গতিতে কৃষিজমির উপর তৈরি হচ্ছে- ঘর-বাড়ি, দোকানপাট, শিল্পকারখানা আরো কত কিছু। কিছুদিন আগেও শহরঘেঁষা আধাগ্রাম বা একেবারে গ্রামীণ খেতগুলোর চারপাশে চোখ জুড়ানো ফসল ফলত। সকলেই স্বীকার করবেন কমবেশি সব জায়গাতেই এই ছবিটি বদলে যাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ অবধারিতভাবেই বিস্তার ঘটাচ্ছে শিল্পায়ন ও নগরায়ণের। নিছক বসবাসের জন্যও মানুষকে আরো বেশি মাত্রায় ব্যবহার করতে হচ্ছে কৃষিজমিকেই।

অনেকেই বলবেন ভালোই তো, উন্নয়ন কি খারাপ? মানুষ কি চিরদিন একই অর্থনৈতিক পরিবেশে বাস করবে আর? তা ছাড়া, সভ্যতার অগ্রগতির পথে এমনটাই তো অবধারিত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এভাবে কৃষিজমির দ্রুত বিলুপ্তি ঘটলে মানুষ আগামীদিনে খাবে কী? কোথায় থাকবে তার খাদ্য নিরাপত্তা? এদিকে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে সামাজিক নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ থাকবে কি? মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশে জনসংখ্যার চাপ কিন্তু প্রবল। এমনকি তর্কের খাতিরে জনসংখ্যাবৃদ্ধির হারকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে সক্ষম হলেও মোট জনসমষ্টির বিপুল চাপটা; কিন্তু থেকেই যাবে।

সুতরাং বাড়বেই খাদ্যের চাহিদা। অন্যদিকে, বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট বলছেন, জমির উৎপাদন শক্তি বা সঠিকভাবে ‘ইউনিট’ প্রতি কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আর নাও চলতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই জমির উৎপাদিকা শক্তি বা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির প্রায় শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছে। অনেক ‘ইনপুট’ দিয়ে প্রান্তিক বৃদ্ধির কিছুটা সম্ভব হলেও বড়সড় বৃদ্ধির সম্ভাবনা একেবারে নেই বললেই চলে। উপরন্তু খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহার যেমন ‘জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ক্রপস’ বা ‘অ্যানিম্যাল ক্লোনিং’ কোনোটাই বিতর্কের বাইরে নয়। দ্বিতীয় একটি সবুজ বিপবর খুব প্রয়োজন থাকলে মাটি বা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে তা আদৌ সম্ভব কি না, সেটা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে বিজ্ঞানী মহলে। ভাবিত আজ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ‘ওয়াল্ড ওয়াচ ইনস্টিটিউট’-এর মতো প্রথম সারির গবেষণা সংস্থাগুলোও।

এই ভয়ংকর ভবিষ্যতের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কৃষিজমি সংরক্ষণের কথা আমাদের ভাবতে হবে। আগামীদিনের সম্ভাব্য চাহিদা-জোগানোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজকের ভূমির ব্যবহারকে যদি একটু একটু করে সঙ্গতিপূর্ণ করে না তোলা যায়, তবে ভবিষ্যতে মানুষ না পাবে প্রয়োজনীয় খাদ্য, না-বাঁচবে পরিবেশ।

তখন কোথায় থাকবে এই তথাকথিত ‘উন্নয়ন’? কারণ, কাল যদি আমাদের মনে হয় খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য আরো বেশি জমিতে ফসল উৎপাদান করতে হবে, তখন সেই উৎপাদনক্ষম জমি কোথা থেকে পাওয়া যাবে? সেই জমি তো হিমালয় থেকে ঝরে পড়বে না, বঙ্গোপসাগর থেকেও ভেসে উঠবে না। জমি যা রয়েছে তাকে তো প্রয়োজন অনুযায়ী রবারের মতো টেনে বাড়ানোও যাবে না। হয়তো এই জায়গাতেই লুকিয়ে রয়েছে কৃষিজমি সংরক্ষণের ভীষণ প্রয়োজনীয়তা।

এবার প্রথমেই বোঝার চেষ্টা করা যাক, ঠিক কীভাবে কৃষিজমি নষ্ট হচ্ছে, যে জন্য তার আশু সংরক্ষণের প্রয়োজন। প্রধানত দু’ভাবে কৃষিজমি নষ্ট হতে পারে, (১) নানা কারণে জমির উৎপাদন শক্তি কমে গিয়ে বা জমির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মাটির গুণাগুণের সার্বিক অবনমনের মাধ্যমে তা ক্রমশ ফসল উৎপাদনের পক্ষে সহায়ক না হয়ে উঠতে পারে এবং (২) বসবাস, পরিকাঠামো উন্নয়ন, শিল্পায়ন প্রভৃতি কারণে ভূমির ব্যবহার বদলে গিয়ে কৃষিজমির চরিত্রও পাল্টে যেতে পারে। প্রথম প্রকারের ক্ষেত্রে মাটির যথাযথ পরীক্ষার পর, বৈজ্ঞানিক প্রথায়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে চাষ করা প্রয়োজন। মাটির ভৌত ও রাসায়নিক বিষয়গুলো যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে, সে বিষয়েও দৃষ্টি দেওয়া দরকার। দ্বিতীয় প্রকারের ক্ষেত্রেই সমস্যাটা খুব জটিল। কারণ, এক্ষেত্রে উন্নয়নের সঙ্গে কৃষিজমি এবং এ জমি ব্যবহারের প্রত্যক্ষ সংঘাতটা অনিবার্য হয়ে উটছে। যদিও অর্থনীতির প্রশ্নে, ‘কৃষি’ এবং ‘উন্নয়ন’-এর মধ্যে সে অর্থে কোনো বিরোধ নেই। কৃষি আসলে একটি বহুমুখী উন্নয়ন প্রক্রিয়া। কোথায় কী ধরনের কৃষি হবে তা নির্ভর করবে, সেই অঞ্চলে সেই সময়কার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, মানুষের চাহিদা এবং পরিবেশের উপর।

যাই হোক, তা হলে সমাধানটা কোথায়? অবশ্যই জমির প্রকৃতি এবং জমির ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে ‘ল্যান্ড ব্যাংক’ তৈরি করা এবং উন্নয়নের ‘ইস্যু’-তে তা যথাযথভাবে কাজে লাগানো প্রয়োজন। অর্থাৎ, উর্বর কৃষিজমিতে যথাসম্ভব হাত না দিয়ে বিকল্প জমিতে শিল্প এবং আনুষঙ্গিক উন্নয়নমূলক কাজ করা এবং যে জমি যে কাজের জন্য সর্বাধিক উপযুক্ত সেই জমিকে সেই কাজেই ব্যবহার করা। কিন্তু ‘ল্যান্ড ব্যাংক’ তৈরিই একমাত্র সমাধান নয়। কারণ পরিবহনসহ পরিকাঠামো উন্নয়ন ও জরুরি ক্ষেত্রগুলাতে প্রয়োজনে কৃষিজমির ব্যবহার করতেই হবে। ঠিক ততটুকুই, যতটুকু না করলে নয়। আমার মনে হয়, এক্ষেত্রে সমীক্ষার ভিত্তিতে একটি মডেল তৈরির কথা ভাবা যেতে পারে। যেমন ২০০১ সালে দেশে কত জনসংখ্যা ছিল এবং ২০১৮ সালে তা কত হয়েছে? বৃদ্ধির হার কত? ২০১৭ সালে অকৃষি জমির পরিমাণ কত ছিল এবং ২০১৮ সালে তা কত হয়েছে? বৃদ্ধির হার কত? জনবৃদ্ধির ফলে, এই সময়কালের মধ্যে কৃষি উৎপাদনের চাহিদা কত বেড়েছে? হ্রাসমান কৃষিজমি এই বর্ধিত চাহিদার কতটুকু পূরণ করতে পারছে এবং কতদিন পারবে? কী কী পদ্ধতি নিলে ক্রমহ্রাসমান কৃষিজমি, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার বর্ধিত চাহিদাকে সামাল দিয়ে কতদিন চলতে পারবে? এই সব বিষয়গুলোই মডেলে রাখা প্রয়োজন।

মনে রাখতে হবে, সঠিক তথ্য ও প্রবণতার উপর ভিত্তি করে, আগামীদিনে সঠিক পদক্ষেপের দিশা পাওয়াটাই এই ধরনের সমীক্ষাভিত্তিক মডেলের প্রধান উদ্দেশ্য। সুতরাং শুধু ‘ল্যান্ড ব্যাংক’ নয়, প্রয়োজন জমি ও জমিসম্পর্কিত বিষয়গুলোকে নিয়ে একটি ‘কম্বাইন্ড ডেটা ব্যাংক’ তৈরি করা, যাতে ইউনিয়ন স্তর থেকে রাষ্ট্রীয় স্তর পর্যন্ত জনসংখ্যা, জমির ব্যবহার ও কৃষি উৎপাদন সম্পর্কিত তথ্যাবলি কালানুক্রমিক চিত্রটি সুস্পষ্ট রূপে ধরা পড়ে এবং পরিকল্পনা ও তার রূপায়ণের কাজে সহজে ব্যবহার করা যায়।

তবে এগুলোর সঙ্গে আরো কয়েকটি বিষয় যুক্ত না করলে আগামীদিনে সমাধানের রাস্তায় পৌঁছানো সম্ভব নাও হতে পারে। কৃষিজমিকে উন্নয়নের কাজে কৃপণের মতো ব্যবহার করলাম- এটাই এককথায় কৃষিজমি সংরক্ষণের মূল কথা হতে পারে না। একদিকে, বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষিজমিকে যেমন আরো বেশি মাত্রায় আধুনিক, বৈজ্ঞানিক কৃষিব্যবস্থার মাধ্যমে আনতে হবে, অন্যদিকে নানা কারণে অব্যবহৃত অথচ কৃষিযোগ্য জমিগুলোকে প্রত্যক্ষ কৃষি বা স্থান বিশেষে কৃষি-বনায়নের কাজে ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে যেখানে জমির তুলনায় জনসংখ্যা বেশি, জমির উপর জনসংখ্যার চাপ বেশি, সে ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জমি পুররুদ্ধার করে তা কৃষি বা কৃষি সম্পর্কিত কাজে ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে সুন্দরবন সন্নিহিত অঞ্চলের অনাবাদি নোনা জমি পাহাড়ি অঞ্চলের রুক্ষ্ম, পাথুরে জমির কথা ভাবা যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েল বা জাপান, ভৌগোলিকভাবে প্রতিকূল এমন সব জমিকে কৃষিজমিতে রূপান্তরিত করতে সমর্থ হয়েছে, যা সহজ কথায় অবিশ্বাস্য। তবে শুধু সরকারি উদ্যোগই নয়, ব্যক্তিগত স্তরেও সচেতনতা ও কিছু সময়োপযোগী পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতে কৃষিজমির অনিবার্য হ্রাস ও খাদ্যের যোগানে ঘাটতির কথা মাথায় রেখে, বাড়িসংলগ্ন ছোট জমি এমনকী টবেও, যেখানে যতটুকু সম্ভব খাদ্যোৎপাদন বিশেষ করে সবজি, ফলচাষ করা যেতে পারে। আমার যে বন্ধুটি, কৃষিজমির এই সংকট সময়ে গ্রামে উর্বর ‘সোনা’ জমিতে নিজের বাড়ি তৈরি করে কৃষিজমিটা প্রকৃতপক্ষে নষ্ট করলেন, তার দিক থেকে এই উদ্যোগটুকু অন্তত আশা করা সমীচীন বলে মনে করি। মনে রাখতে হবে, পরিবেশ ও সমাজ সচেতনতার প্রশ্নে, এই ধরনের কোনো উদ্যোগ ক্ষুদ্র হলেও তুচ্ছ নয়।

আগামীদিনের খাদ্যে যাতে ঘাটতি দেখা না দেয় এবং মানুষ যাতে সুস্থ, সবুজ পরিবেশে বাস করতে পারে, তার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি আজ থেকেই নিতে হবে। যে কোনো মূল্যে মানুষ ও কৃষিজমির কাম্য অনুপাতকে রক্ষা করতেই হবে। বজায় রাখতে হবে সার্বিক উন্নয়নের ধারাকেও। কীভাবে দু’টির মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা যায়, তার জন্য সর্বস্তরে নিরন্তর মতবিনিময় ও আন্তরিক প্রয়াস জরুরি। কারণ, আগামীদিনে বেঁচে থাকতে গেলে প্রয়োজনীয় পরিমাণ কৃষিজমি ও সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন-দুটোই আবশ্যক। এ ব্যাপারে সরকারকে আরো তৎপর হতে হবে, এর বিকল্প নেই।