ঢাকা ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘ট্র্যাকিং ডিভাইস’ ছাড়া জ্বালানি নয়

ভেজাল প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে
‘ট্র্যাকিং ডিভাইস’ ছাড়া জ্বালানি নয়

স্মার্ট ফুয়েল ডিস্ট্রিবিউশন মনিটরিং সিস্টেম (এসএফডিএমএস) চালু করতে আগামী ১ জুলাই থেকে ট্র্যাকিং ডিভাইস বা অনুসরণের বিশেষ প্রযুক্তি না থাকলে ডিপো থেকে ট্যাংক-লরিতে আর তেল দেওয়া হবে না। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এরইমধ্যে সব ট্যাংক-লরিতে ট্র্যাকিং ডিভাইস বসানোর নির্দেশ দিয়েছে। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তেলবাহী গাড়িতে ট্র্যাকিং সিস্টেম বসাতে অনীহা প্রকাশ করছে। দেশের জ্বালানি তেল পরিবহনকে আধুনিক করতে এসএফডিএমএস চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। জ্বালানি তেল পরিবহন থেকে ভোক্তার কাছে পাঠানো পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে আনতেই এই ব্যবস্থা চালুর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জ্বালানি তেল বহনকারী ট্যাংক-লরিগুলো কোন জায়গা থেকে কোন জায়গা যায়- সেটি মনিটরিং করা জরুরি। জ্বালানি তেলের ভেজাল প্রতিরোধ করতে ট্যাংক লরিগুলোতে পর্যবেক্ষণ দরকার। বিশেষত বাংলাদেশের গ্যাস ফিল্ডগুলোতে জ্বালানি তেল হিসেবে ব্যবহার করা যায় এমন কনডেনসেট ওঠে। এসব কনডেনসেট ফ্যাক্টরিতে নিয়ে পরিশোধন করে ব্যবহার উপযোগী করা হয়। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এসব কনডেনসেট জ্বালানি তেলের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করে। জ্বালানি বিভাগ থেকে বারবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তেলের ভেজাল বন্ধে চেষ্টা করা হলেও তা একেবারে বন্ধ হচ্ছে না। এ কারণে প্রযুক্তি ব্যবহার করলে একটি ট্যাংক-লরি কোন জায়গা থেকে কোন জায়গায় যাচ্ছে তা বোঝা যাবে। এতে ভেজাল প্রতিরোধ করা সম্ভব। পাশাপাশি নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সহজ হবে। বিপিসির তরফ থেকে জানানো হয়েছে এরইমধ্যে ৬৬টি ট্যাংক-লরিতে এই ব্যবস্থা সংযোজন করা হয়েছে। দ্রুত সকল অন্তরায় দূর করার নির্দেশ দিয়েছে বিপিসি। জ্বালানি বিভাগের সচিব নূরুল আমিন জানিয়েছেন আগামী পহেলা জুলাই থেকে ট্র্যাকিং ডিভাইস না থাকলে আর জ্বালানি তেলে দেবে না ডিপো। ‘নো ট্র্যাকিং ডিভাইস, নো ফুয়েল’ লিখে ডিপোতে ডিপোতে টাঙ্গিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তিনি আরো জানান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কুইক উইন ইনিশিয়েটিভ প্রোগ্রামের আওতায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কীভাবে আরো দ্রুততার সঙ্গে সেবা দেওয়া যায় তা নিশ্চিতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে জ্বালানি বিভাগ এই পদক্ষেপ নিয়েছে। ট্র্যাকিং ডিভাইসের আইডিয়া নিয়ে অনেক আগেই আমরা চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু চালকদের বেশিরভাগের টেকনোলজির অধীনে আসতে অনীহা থাকার কারণে কাজটি করা যাচ্ছিল না। অনেকের কাছে নতুন প্রযুক্তিতে আসাটাই কঠিন মনে হয়। আমাদের দেশে যখন কোনো প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ধারণা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া যায়, তখন কোনো কোনো মহল থেকে বাধা বিপত্তি আসে। বিষয়টিকে ঝামেলাপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করা হয়। তবে যে পদ্ধতি আধুনিক ও জনগণের জন্য কল্যাণকর সেগুলো গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। বাংলাদেশ এখন স্মার্ট যুগে প্রবেশ করেছে। এ কারণে সব ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে। এতে কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে এবং কাজটি অধিকতর নিখুঁত হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে জ্বালানি তেল একটি স্পর্শকাতর দাহ্য পদার্থ। এই দাহ্য পদার্থটির ভেজাল রোধ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে সেটা জনগণের জন্যও অস্বস্থির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সে কারণে এই আধুনিক পদ্ধতি যেন যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা হয় সেটা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত