ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেশে প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা পুরোপুরি দৃশ্যমান

তৈরি হচ্ছে নতুন উদ্যোক্তা
দেশে প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা পুরোপুরি দৃশ্যমান

প্রযুক্তি মানব সভ্যতার নিকট বিজ্ঞানের এমন এক আশীর্বাদ, যাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অসাধ্য সাধন করা সম্ভব হচ্ছে। বর্তমানে এই প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী মানবজীবনের এক অপরিহার্য উপাদান হয়ে উঠেছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে যেমন অভাবনীয় পরিবর্তন এনেছে, তেমনি বিশ্বের প্রতিটি দেশ ও জাতির অগ্রগতিতে অসামান্য অবদান রাখছে। দক্ষিণ এশিয়ার বিপুল জনসংখ্যাবিশিষ্ট ছোট একটি দেশ হিসাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হয়েছে, তা কোনোভাবেই অবহেলা করার মতো নয়। দেশে প্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রযাত্রা বর্তমানে পুরাপুরি দৃশ্যমান। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার দেশের শিক্ষাব্যবস্থা হতে শুরু করে চিকিৎসা, অর্থনীতি, নিরাপত্তা, সংস্কৃতিসহ প্রতিটি মৌলিক ক্ষেত্রে যুগান্তকারী বিপ্লব এনেছে। গত এক দশকের ব্যবধানে প্রযুক্তির জাদু শহরের পাশাপাশি স্পর্শ করেছে আবহমান বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদকেও। ইন্টারনেটের কল্যাণে পুরো বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলের সংযোগ করা সম্ভব হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মানুষ ইউরোপ-আমেরিকার সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে পারছে। বাংলাদেশে বসে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে রাতদিন চব্বিশ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ একযুগ আগেও মানুষের কল্পনার বাইরে ছিল, যা আজ বাস্তব রূপ পেয়েছে।

বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এই তিনজন ব্যক্তির অবদানই সবচেয়ে বেশি। তাদের পরিকল্পনার পাশাপাশি তরুণদের নানা উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত ও দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি প্রজেক্টের মাধ্যমে দেশে কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পথ প্রশস্ত হয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তির প্রশিক্ষণ হিসাবে সরকারিভাবে বেসিক কম্পিউটার, গ্রাফিকস ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মতো নানা কাজ শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশে প্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রযাত্রা গত এক দশক হতে দৃশ্যমান। এরইমধ্যে মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটসহ কয়েকটি বড় প্রাপ্তি বিশ্ববাসীর নিকট বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অন্যরকম উচ্চতায়। বাংলাদেশ প্রযুক্তি বিশ্বে অর্জন করিয়াছে একটি সম্মানজনক স্থান। সবচেয়ে বড় বিস্ময়ের নাম হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসাবে অগ্রযাত্রা শুরু। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ধারণার সহিত মানুষের জীবনেও এর বড় প্রভাব দেখা যাচ্ছে। জনজীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে উবার-পাঠাওয়ের মতো রাইড শেয়ারিং সেবা চালু হওয়ায়। এই ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান যেমন বেড়েছে, তেমনি অনেকের যাতায়াতেও সুবিধা হয়েছে। কম্পিউটার ও স্মার্টফোন ব্যবহারকারী বাড়ার কারণে নতুন উদ্যোক্তাও সৃষ্টি হয়েছে। যেই দেশের মানুষের একসময় নানাবিধ রোগ-ব্যাধির সঙ্গে লড়াই করার পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির জন্য সংগ্রাম করতে হতো, সেই দেশের মানুষ এখন উন্নত বিশ্বের মতোই প্রযুক্তির ব্যবহারে আধুনিক জীবনযাপন করতে পারছে।

সামগ্রিকভাবে নানা বিষয়ে দুর্বলতা থাকলেও সব মিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা এখন একটি প্রতিষ্ঠিত বাস্তবতা। এর পর এখন শুরু হয়েছে স্মার্ট বাংলাদেশের যাত্রা। নাগরিক সেবার মানোন্নয়নে বর্তমান সরকার গৃহীত সামগ্রিক সেবাদান প্রক্রিয়ায় গতি এনেছে। সেই দিন আর অধিক দূরে নয়, যেই দিন বাংলাদেশ সত্যিকারের ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে উন্নয়নশীল দেশের কাতার থেকে একধাপ এগিয়ে উন্নত রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে এবং আমরা হবো সেই গর্বিত রাষ্ট্রের নাগরিক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত