কিম-পুতিন চুক্তি বিশ্বের জন্য নতুন হুমকি হতে পারে

রায়হান আহমেদ তপাদার

প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া। এরপর থেকে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে ক্রমেই মাথাব্যথা হয়ে উঠেছে, পুতিনের সোভিয়েত সীমানা পুনরুদ্ধারের উচ্চাকাঙ্ক্ষা। ইউক্রেন যুদ্ধে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়া রুশ সামরিক শক্তি হয়তো আক্রান্ত হলে পিয়ংইয়ংয়ের পাশে এ মুহূর্তেই দাঁড়াতে পারবে না, তাই চুক্তির এই অংশটি আপাতত প্রতীকী। তবে পুতিন যেমন বলেছেন, ভবিষ্যতে চুক্তিটির মাধ্যমে দুই দেশের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক পরস্পরের আত্মরক্ষায় কাজ করবে। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া জয়ী হলে- তখন এই বাধা আর থাকবে না। এশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তেমনিভাবে পশ্চিমা আধিপত্যের জন্য প্রথাগত হুমকি হলো উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ং পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনকারী ক্ষেপণাস্ত্রের সমূহ উন্নতি করেছে এবং পাল্লা বাড়াচ্ছে। এরমধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো এসব ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার মধ্যে রয়েছে। সমাজতান্ত্রিক দেশটির দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানোর মতো ক্ষেপণাস্ত্র তাদের রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার শাসকগোষ্ঠী সুদীর্ঘ সময় ধরে পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়াতে সচেষ্ট। এখন রাশিয়াও যদি তার উন্নত প্রযুক্তি দেয়- তাহলেই পাশার দান উল্টে যাবে। পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফর তাই বুঝেশুনে নেওয়া এক সূক্ষ্ম চাল। ইউক্রেন সীমান্তে ট্যাক্টিক্যাল নিউক মোতায়েনের পাশাপাশি পুতিন যে দূরপ্রাচ্যেও যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ঘুম হারাম করতে পারেন- এটি তারই স্পষ্ট বার্তা। পশ্চিমা দুনিয়া প্রত্যাশা করতেই পারে, রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার নতুন জোটবন্ধন থেকে এবার কোরীয় যুদ্ধের মতো ধ্বংসাত্মক কোনো সংঘাতের সূচনা হবে না। কিন্তু, তাদের বুঝতে হবে এই সম্পর্কের বুনিয়াদ সুদীর্ঘ কালের। এর শেকড় রয়েছে আরেক রক্তক্ষয়ী সংঘাতের যুগে যখন মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের নেতারা সমূহ বিপদ অনুমান করে বিপজ্জনক পদক্ষেপ নিতেও দ্বিধা করেননি। কূটনীতির পোশাকি ভাষার আড়ালে এটি মূলত একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি।

যার আওতায়, উভয় দেশের মধ্যে যে কেউ আক্রান্ত হলে অন্য দেশ তার প্রতিরক্ষায় এগিয়ে আসবে। চুক্তিটিকে যুগান্তকারী বর্ণনা করে পুতিন বলেন, এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। যদিও চুক্তির বিষয়ে রাশিয়া বা উত্তর কোরিয়া বিস্তারিত কিছু জানায়নি, তবে একটি বিষয় স্পষ্ট কোরীয় উপদ্বীপে শক্তির ভারসাম্যে পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হলো। উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্প রাশিয়ার কাছে নানান ধরনের গোলাবারুদ, রকেট ইত্যাদি বিক্রি করে বিপুল অর্থ আয় করছে, এই অর্থ দিয়ে দেশটি নিজ সমরসজ্জাকে বাড়াবে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তিকে মোকাবিলায়। একইসঙ্গে মস্কোর থেকে উচ্চ প্রযুক্তির কারিগরি সহায়তা পাবে পিয়ংইয়ং। বিনিময়ে রাশিয়া অন্যদিক থেকেও লাভবান হবে। পুতিন উত্তর কোরিয়া থেকে অপেক্ষাকৃত কম আধুনিক অস্ত্র বা গোলাবারুদ পেতে চান। এনিয়ে ২০২৩ সালেই রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্তকে কিম জন উনের সঙ্গে একটি চুক্তি করেন তিনি। এই চুক্তির আওতায়, এরমধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়া বিপুল গোলাবারুদ পেয়েছে বলে দাবি করেছে পশ্চিমারা। ইউক্রেনের রণাঙ্গনে হাজার হাজার টন কামানের গোলা ও রকেট আর্টিলারির প্রয়োজন হচ্ছে। সেখানে উত্তর কোরিয়া থেকে পাওয়া সরবরাহ রাশিয়াকে দরকার মতো প্রচুর পরিমাণে গোলা ছোড়ার সুবিধা দিয়েছে। অন্যদিকে বাইডেন প্রশাসন দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক শক্তিশালী করেছে। উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরো অনমনীয় অবস্থান নিয়েছে। তাই রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার মাধ্যমে এগুলোর প্রভাব খর্ব করতে চান কিম। তাছাড়া, রুগ্ন অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে বিপুল জ্বালানি চাই উত্তর কোরিয়ার। দরকার খাদ্য সরবরাহ। এ দুটি জিনিসেরই বিপুল প্রাচুর্য আছে রাশিয়ায়। ফলে সামরিক সহযোগিতার বাইরে রাশিয়া থেকে অর্থনৈতিক সহায়তাও চান কিম।

সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন উত্তর কোরিয়া সফর শেষে ভিয়েতনাম সফর করেছেন। এ সময়ে পুতিন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং একটি কমপ্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পাটারশিন নামে একটি সামারিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এটি আমাদের ৭৪ বছর আগের দুঃখজনক স্মৃতিকে মনে করিয়ে দেয়। সন্দেহ নেই, ইউক্রেন যুদ্ধে লিপ্ত রাশিয়ান বাহিনীকে পুনরায় সশস্ত্র করার জন্য এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর প্রত্যাশিত প্রভাব সম্পর্কে কিছু তথ্য এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। তবে ক্রেমলিন বলেছে, যে এই চুক্তির অর্থ হবে আক্রমণ হলে প্রতিটি দেশ একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক সহায়তার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০২২ সালের শুরুর দিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে মস্কো পশ্চিমাদের দ্বারা নানা বাধার শিকার হয়েছে। পশ্চিমাদের কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার অর্থনীতিকে ভুগতে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বদানকারীদেরও এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে এবং কয়েক দশক ধরে তারাও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে। কারণ পশ্চিমা দুনিয়া পিয়ংইয়ংকে ক্রমবর্ধমানভাবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখে আসছে। তবে পুতিন পিয়ংইয়ংয়ের কাছে কম অত্যাধুনিক অস্ত্রের সন্ধান করছেন। ২০২৩ সালে ভ্লাদিভোস্টে দুই নেতা মিলিত হওয়ার সময় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে রাশিয়াকে আর্টিলারি এবং গোলা বারুদ সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছিল। এমন প্রেক্ষাপটে এবারের সফর পরবর্তী ইউক্রেন যুদ্ধ আরো ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুতিন এবং কিম সে সময় অস্ত্র চুক্তির বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন। এরই মধ্যে, কিম ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এর কারণ বুঝতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উত্তর কোরিয়াকে বিভিন্ন সময়ে নানা বাধা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করেছে। ২০১৯ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চলমান আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে উত্তর কোরিয়ার নেতা দেশটির মর্যাদা এবং নিরাপত্তা বাড়াতে আগ্রহী। পুতিনের সঙ্গে কিমের এই চুক্তি উত্তর কোরিয়াকে সেই ভিত্তি দেবে। পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন সিউল এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক জোরদার এবং উত্তর কোরিয়ার প্রতি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। একই সময়ে, উত্তর কোরিয়ার প্রয়োজন ছিল তার বিপর্যস্ত অর্থনীতির জন্য জ্বালানি সরবরাহ এবং ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা। এমন প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার কাছ থেকে অর্থনৈতিক সহায়তা খুঁজবে, এটিই স্বাভাবিক। তবে রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার মধ্যে এটিই প্রথম কোনো জোট নয়। এটিও প্রথমবার নয় যে, অস্ত্র সরবরাহ তাদের সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। কিম জং উনের দাদা কিম ইল সুং এবং কিম জুনিয়র সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাক্তন নেতা জোসেফ স্টালিনকে আদর্শ মেনে রাজনীতি করেছেন। রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট পুতিনও স্টালিনকে অনুকরণ করতে চেয়েছেন। ফলে উভয়ের মধ্যে জোট তৈরির রূপরেখা গুলো স্পষ্ট। ১৯৩০-এর দশকে, কিম ইল সুং ছিলেন তুলনামূলকভাবে অপরিচিত একজন কোরিয়ান কমিউনিস্ট যিনি মাঞ্চুরিয়াতে জাপানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত একটি ছোট গেরিলা দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যান এবং মেজর পদে উন্নীত হয়ে রেড আর্মিতে যোগ দেন। ১৯৪৫ সালের আগস্টে জাপানিরা আত্মণ্ড সমর্পণ করার পর, তারা মিত্রদের কাছে কোরিয়ার দখলকৃত ভূমি হস্তান্তর করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী কোরীয় অঞ্চলকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। একটি সোভিয়েত ইউনিয়নের তত্ত্বাবধানে উত্তরে, অন্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে দক্ষিণে পরিচালিত হতে থাকে। ১৯৪৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর কোরিয়া প্রতিষ্ঠিত হলে দেশটির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য স্ট্যালিন কিম ইল সুংকে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি মূলত একজন কোরিয়ান জাতীয়তাবাদী ছিলেন এবং তার শাসনের অধীনে কোরীয় উপদ্বীপকে একত্রিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। কিন্তু তিনি স্তালিনের অনুমতি ছাড়া এবং সোভিয়েত অস্ত্র ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রমণ চালাতে পারেননি। দক্ষিণ কোরিয়া দখলে সমর্থনের জন্য কিম ইল সুং স্ট্যালিনের কাছে অনেকবার অনুরোধ করেছিলেন। তবুও স্টালিন এ যুদ্ধের অনুমতি দেননি। প্রথম দিকের ঠান্ডা যুদ্ধে স্টালিন অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন, এই ভয়ে যে দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাতে যুক্ত হয়ে পড়তে পারে। হঠাৎ করে পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যায়। ১৯৪৯ সালের অক্টোবরে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি জাতীয়তাবাদী প্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাজিত করে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জন্ম হয়। এ ছাড়া ১৯৫০ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো বলে যে দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণের শিকার হলে তারা দেশটির প্রতিরক্ষার জন্য এগিয়ে আসবে না। এর পরে স্ট্যালিন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের প্রতি আরো আস্থাশীল হয়ে ওঠেন। তিনি কিম ইল সুংকে লেখা একটি চিঠিতে যুদ্ধের জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন এবং তার পছন্দসই অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন। এই সামরিক অস্ত্রের বেশিরভাগের মজুত দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় গড়ে তোলা হয়েছিল এবং সেগুলো ছিল অপেক্ষাকৃত পুরোনো।

সামরিক সহায়তার মধ্যে ২০০ টি-৩৪ ট্যাংক অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা জার্মানির নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সোভিয়েত-উত্তর কোরিয়া জোট আরো দৃঢ় হয়েছিল।

যাই হোক, এটি পরবর্তীতে শীতল যুদ্ধকে আরো সংকটের দিকে নিয়ে যায়। ১৯৫০ সালের ২৫ জুন দক্ষিণ কোরিয়ায় উত্তর কোরিয়ার আক্রমণ, আজ থেকে প্রায় ৭৪ বছর আগে, উত্তর কোরিয়াকে দ্রুত বিজয়ের দিকে পরিচালিত করেনি। কারণ ওয়াশিংটন তার মিত্র দক্ষিণ কোরিয়াকে পরিত্যাগ করতে অস্বীকার করে এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ১৫টি দেশের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে ওই যুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়াকে সহযোগিতা করে। যখন উত্তর কোরিয়া পরাজিত হতে থাকে তখন বিশ্ব বিপদজনকভাবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাছাকাছি চলে আসে। পরবর্তীতে কোরীয় যুদ্ধ অনেকটা ইউক্রেন যুদ্ধের মতো অচলাবস্থায় পরিণত হয়। কোরিয়ান যুদ্ধ তারপর আরো ২ বছর ধরে চলেছিল। অস্ত্র বিরতি চুক্তির মাধ্যমে যা স্থগিত হয়, যা আজও বিদ্যমান। রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে নতুন জোটের ফলে কোরিয়া যুদ্ধের মতো বিধ্বংসী বা ঝুঁকিপূর্ণ কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। তবে এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এর শিকড়গুলো সেই সময় থেকে একটি রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মধ্যে গ্রন্থিত রয়েছে। মস্কো এবং পিয়ংইয়ংয়ের নেতারা যখন নিজেদের বিচ্ছিন্ন বোধ করেছেন, তখনই বিপজ্জনক ও ভুল সব পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতিহাস তার সাক্ষ্য দেয়। এবারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফর, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে বৈঠক এবং সামরিক চুক্তি অতীতের কোরিয়া যুদ্ধের স্মৃতিকে নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। যদিও অতীতের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। যদি ঘটে তবে সেটি পুরো বিশ্বের জন্য নতুন হুমকি সৃষ্টি করবে।

লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক