ভাটি অঞ্চলের দুর্দশা লাঘব হবে কি?

আফতাব চৌধূরী, সাংবাদিক-কলামিস্ট।

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

হযরত শাহ জালাল (রহ.) এবং হযরত শাহ পরাণ (রহ.) সহ ৩৬০ আউলিয়ার মাজার সমৃদ্ধ পুণ্যভূমি অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, হাওর-বাঁওড়, ছোট-বড় টিলা, পাহাড়, চা বাগান, দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ এই চারটি জেলা নিয়ে সিলেট বিভাগ। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলাগুলো ছাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে এমন নান্দনিক দৃশ্য বাংলাদেশের আর কোথাও দেখা যায় না। হাওর-বাঁওড় সিলেট বিভাগের প্রকৃতিক সৌন্দর্যকে অধিকতর সুশমামন্ডিত ও শ্রীবৃদ্ধি করেছে।

এবার আকস্মিক বৃষ্টিতে এবং অকাল বন্যায় সিলেট বিভাগ ও পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ এবং নেত্রকোনা জেলার হাওর অঞ্চলে ফসল এবং মাছের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় হাওরবাসীর জনজীবনে নিদারুণ দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির উপর পড়ায় বর্তমানে এই বিপর্যয় দেশব্যাপী আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুনামগঞ্জ যখন প্রাক্তন সিলেটের একটি মহকুমা ছিল তখন সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জ, দিরাই থানায় মাঝেমধ্যে আমরা ক’জন মিলে বেড়াতে যেতাম, তখন হাওরবাসীকে ঝড়, বৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া এবং বিরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম করতে দেখেছি। আমার অভিজ্ঞতার আলোকে হাওরবাসী সম্পর্কে পাঠকের জানার জন্য এখানে কিছুটা আলোকপাত করা হলো।

বাংলাদেশের অনেকগুলো পরিবেশ অঞ্চলের মাঝে হাওর একটি। যারা হাওর দেখেননি তারা বুঝতে পারবেন না হাওর কেমন। শুকনো মৌসুমে হাওরে পানি থাকে না।

তখন দিগন্ত বিস্তৃত ধানখেত এবং হাওরের বিলে মাছ ধরা হয়। বর্ষাকালে চারিদিকে থৈ থৈ পানি কখনও শান্ত আবার কখনও বাতাসে অশান্ত হলে সাগরের মতো বিরাট বিরাট ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। হাওরে ধান, মাছ এবং জনবসতি ছাড়াও প্রাকৃতিক উপায়ে হয়ে উঠা হিজল, করছ এবং অন্যান্য জংলী গাছের বাগান পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করেছে। হাওরের জমির মাপঝোপ ও সমতল ভূমির জমি হতে সম্পূর্ণ আলাদা। হাওর অনেকটা চ্যাপ্টা বাটির মতো। চারিদিকে উঁচু পাহাড় ক্রমশ ঢালু হয়ে জলাশয়ের একটি নির্দিষ্ট সীমানায় এসে শেষ হয়েছে। ুুহাওরের জলাশয়ের এই অংশে সারা বছর পানি থাকে এবং এটাকে বিল বলা হয়। পাহাড় থেকে বিলের সীমানা পর্যন্ত হাওরের এই জমিতে শুকনো মৌসুমে পানি থাকে না। এখানে বোরো ধান চাষ করা হয়। ধানি জমির ভেতর অনেক উঁচু উঁচু মাটির ভিটির উপর অনেক দূরে দূরে একেকটি গ্রাম। শুকনো মৌসুমে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে আঁইলের উপর দিয়ে পায়ে হাঁটা পথ ছাড়া যাতায়াত ব্যবস্থা এখনো তেমন উন্নত হয়নি। বর্ষাকালে চারিদিকে অথৈ পানির মাঝে একেকটি গ্রাম দেখতে একেকটি দ্বীপের মতো মনে হয়। নৌকা কিংবা অন্য কোন জলযান ছাড়া এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে এখনও যাওয়া যায় না।

বিভিন্ন তথ্য হতে জানা যায়, বাংলাদেশে ৪০০ এর উপর ছোট বড় হাওর আছে। এর মাঝে শুধু সুনামগঞ্জ জেলায় ২০০টির মতো হাওর রয়েছে যার মধ্যে এবার ১৮০ টির মতো হাওরের ফসলহানি হয়েছে। সুনামগঞ্জ ছাড়া আর কোনো জেলায় এত হাওর না থাকায় সুনামগঞ্জকে হাওর কন্যা বলা হয়। সুনামগঞ্জের হাওরে প্রচুর ধান হয় বিধায় পাকিস্তান আমলে সুনামগঞ্জকে পূর্ব পাকিস্তানের শস্য ভান্ডার বলা হতো। ধান ছাড়াও হাওরের বিলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সারা বছর পাওয়া যায়। তাই মৎস্যভান্ডার হিসাবে সুনামগঞ্জের যথেষ্ট সুখ্যাতি রয়েছে। শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়াসহ অন্যান্য শীতপ্রধান অঞ্চল হতে প্রায় ২০০ প্রজাতির অতিথি পাখির আগমন এবং কলতানে হাওর অঞ্চলের বিলগুলো মুখরিত থাকে।

সুনামগঞ্জ জেলার হাওরে প্রায় ১ হাজারের উপর বিল বা জলমহাল আছে। ২০ একর এর উপর বিল ৩ বছরের জন্য জেলা প্রশাসন হতে এবং ৩ বছরের উপর ৬ বছর পর্যন্ত ভূমি মন্ত্রণালয় হতে ইজারা দেওয়া হয়। ২০ একরের নিচে জলমহাল উপজেলা প্রশাসন হতে ইজারা দেওয়া হয়। কিছু কিছু উন্মুক্ত জলাধার এই জেলায় আছে, যা ইজারা দেওয়া হয় না। এইসব জলাধার হাওর অঞ্চলে বসবাসরত মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।

কাগজে কলমে মৎস্যজীবীদের জন্য রাখা হলেও এখানে সব সময় নিকটবর্তী বিলের প্রভাবশালী ইজারাদাররা গরিব হাওরবাসীদের শ্রেণি পেশার মানুষ যারা বংশ পরস্পরায় বৈরী প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম করে বসবাস করে আসছে, তারা কখনও জলমহাল ইজারা পেয়েছে এমন নজির আছে বলে মনে হয় না। বিত্তশালী এবং রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত প্রভাবশালীরা নামে বেনামে এসব জলমহালের ইজারাদার। হাওর পাড়ের কৃষিজীবীদের অধিকাংশ ইজারাদারদের লাঠিয়াল এবং জলমহালের পাহারাদার। আর মৎস্যজীবীদের ইজারাদারেরা মাছের খলায় শ্রমজীবী হিসাবে মাছ ধরা এবং মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত। ইদানিং অবস্থাপন্ন অনেক কৃষিজীবী সন্তানদের লেখা পড়া এবং উন্নত জীবন যাপনের জন্য জেলা ও উপজেলা সদরে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। গরিব মৎস্যজীবীরা কিন্তু গ্রাম ছেড়ে শহরে এসে বসবাস করছে এমন নজির খুবই কম।

উল্লেখ্য বৃহত্তর সিলেটে হিন্দু সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীদের সিলেটি ভাষায় ‘কৈবর্ত’ এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীদের ‘মাইমুল’ বলা হয়। সিলেট সদর, সুনামগঞ্জ তাহেরপুর, আজমিরীগঞ্জ এবং বানিয়াচং উপজেলায় অনেক বিত্তশালী মাইমুল পরিবার আছে যারা সরাসরি মৎস্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং জলমহালের ইজারাদার। অভিজাত শ্রেণির সিলেটি মুসলমানরা এক সময় মৎস্য ব্যবসাকে ঘৃণা করত। মৎস্য ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় এখন অভিজাত শ্রেণির অনেকেই এই ব্যবসার সাথে জড়িত হয়েছে। কালের বিবর্তনে সিলেটে বিত্তের কাছে আভিজাত্য হার মানতে বাধ্য হয়েছে। প্রতি বছর নভেম্বরে হাওরের পানি কমার সাথে সাথে হাওর অঞ্চলের কৃষিজীবীরা কৃষিকাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। নভেম্বর হতে এপ্রিল এই ৬ মাস তাদের কর্মব্যস্ত সময় কাটাতে হয়।

এই সময় তারা কাক ডাকা ভোরে জমিতে হাল দেয়। এখন হাওরে গরু দিয়ে চাষের বদলে আধুনিক পদ্ধতিতে হাল-চাষ করা হয়। চাষের পর জমিতে বীজ বপণ এবং রোপণ করা হয়। রোপণের পর ধান না পাকা পর্যন্ত কৃষিজীবীরা সোনালি আঁশের পরিচর্যা করে থাকে। কৃষিজমিতে কাজের ফাঁকে ফাঁকে হাওরবাসীরা হিজল, করছ এবং নানা জংলী গাছের ডালপালার সাহায্যে বেড়া দিয়ে বর্ষায় হাওরের ঢেউয়ের আঘাত হতে বসতভিটা রক্ষার ব্যবস্থা করে। হাওরে ধানপাকার পর ধান কাটার জন্য বৃহত্তর ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, কুমিল্লা এবং অন্যান্য মঙ্গা পীড়িত এলাকার শ্রমজীবী মানুষেরা চুক্তিতে ধান কাটতে আসতো। ধান কাটার পর তারা কৃষকের গোলায় ধান তুলে দিয়ে তাদের প্রাপ্য ধান নৌকা করে নিয়ে চলে যেত। সময়ের বিবর্তনে এখন সর্বত্র কম বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় আগের মতো শ্রমজীবী মানুষরা ধান কাটতে আসে না। বৃহত্তর সিলেটের জৈন্তাপুর, কানাইঘাট এবং গোয়াইনঘাট এলাকার লোকজন এখন ধান কাটতে আসে। বর্ষায় হাওরবাসী অনেকটা আয়েশী জীবনযাপন করে। হাওর এলাকায় বিয়ে সাদীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান সাধারণত এই সময়ে হয়ে থাকে। আধুনিকতার ছোয়ায় হাওরবাসী এখন সনাতনী অনেক আচার অনুষ্ঠান বাদ দিয়েছে। আগের মতো, গোলায় ধান উাঠার পর বর্ষায় নবান্ন উৎসব, জারীগান, কবির গান, হাসন রাজার গান, লালনগীতিসহ নানা আনন্দ উৎসবের আসর এখন বসে না। টেলিভিশন হাওরবাসী চিত্ত বিনোদনের এখন প্রধান মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিলের ইজারাদারেরা শুকনো মৌসুমে বিলে মাছ ধরে। মাছ ধরার জন্য তারা বিলে অস্থায়ী বাড়িঘর নির্মাণ করে। এটাকে তাদের ভাষায় ‘খলা’ বলা হয়। মৎস্যজীবী নারী-পুরুষ এবং শিশু-শ্রমিকদের ইজারাদারেরা বিলে মাছ ধরার কাজে নিয়োগ করে। পুরুষরা মাছ ধরে এবং বিক্রির ব্যবস্থা করে। নারী ও শিশু-শ্রমিকরা মাছ কেটে রোদে শুকিয়ে শুঁটকি বানায়। বর্ষা আসার আগেই হাওরে পাকা ধানকাটা এবং বিলের মাছ ধরা শেষ করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে সব হাওর পানিতে ডুবে একাকার হয়ে গেলে কোনো হাওরের সীমারেখা থাকে না। হাওরবাসী বর্ষা মৌসুমে উন্মুক্ত হাওরের পানিতে মাছ শিকারসহ অনেকটা আয়েশি জীবন কাটায়।

হাওর সমৃদ্ধ সুনামগঞ্জ জেলার পৃথিবীর সবচেয়ে বৃষ্টি বহুল পাহাড়ি এলাকা চেরাপুঞ্জি এলাকার সন্নিকটে এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সুউচ্চ খাসিয়া জৈয়ন্তিয়া পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত হওয়ায় বাংলাদেশে সুনামগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। বজ্রপাতসহ শিলাবৃষ্টিও অন্যান্য জেলার তুলনায় এখানে বেশি। বৈরী আবহাওয়া এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে এখানকার কৃষিজীবীরা ব্রিটিশ আমলে হাওরের জমিতে আউশ ধান চাষ করত বলে জানা যায়। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল আসার সঙ্গে সঙ্গে আউশ ধান পাকা আরম্ভ হতো। বৃষ্টিতে জমি তলিয়ে গেলেও ধান নষ্ট হতো না। কৃষকরা পানিতে নেমে পাকা ধান কেটে এবং পরে শুকিয়ে গোলায় তুলতে পারত। পরবর্তীতে পাকিস্তান আমলে আউশ ধান বাদ দিয়ে কম ফলনশীল; কিন্তু বর্ষা আসার আগে আগে পাকে এমন বোরো ধান চাষ আরম্ভ হয়। এই জাতীয় ধানও কৃষকরা বর্ষা আসার আগে গোলায় তুলতে পারত। এতে কৃষিজীবীদের মহাজন এবং বিভিন্ন অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের টাকা যথসময়ে সুদসমেত পরিশোধ করতে অসুবিধা হতো না। কৃষকদের মুখে তখন হাসি ছিল।

৬০ দশকের শেষ দিকে এবং বাংলাদেশের জন্মের পর হতে স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন এনজিও সংস্থার পরামর্শে দেরিতে পাকা অধিক ফলনশীল ইরি বোরো দান চাষে কৃষকদের উদ্বুুদ্ধ করা হয়। অধিক ফলনশীল দেরিতে পাকা ইরি বোরো ধান চাষের পর হতে কৃষকদের কপাল পুড়তে আরম্ভ করে। অতি বৃষ্টি এবং আগাম বন্যার পানিতে এখন ধান তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতি বছর হাওরের ধান মারা যাচ্ছে। এতে অনেক কৃষক এখন জায়গা জমি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বলে শোনা যায়। চাষ মারা যাওয়াতে কৃষকরা আগের মতো চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে এমনও শোনা যাচ্ছে। উল্লেখ্য যে, হাওরে বিপুলসংখ্যক মানুষ একই সঙ্গে কৃষিজীবী এবং মৎস্যজীবী। আগাম বন্যায় এবার মুখের গ্রাস গোলায় উঠার পরিবর্তে জমিতে পচে যাওয়ায় সুনামগঞ্জসহ হাওর সমৃদ্ধ বাকি পাঁচটি জেলায় প্রজনন ঋতুতে ডিমভরা মাছ মরে যাওয়ায় সর্বত্র মাছের মড়ক লেগেছে। টেলিভিশনের বদৌলতে মৎস্যভান্ডার হিসাবে খ্যাত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর এবং মৌলভীবাজার জেলার হাকালুকিসহ বহু হাওরের মাছ মরার দৃশ্য এবার জনগণ দেখতে পেয়েছে। একদিকে গোলাশূন্য অন্যদিকে মৎস্যশূন্য হওয়ায় এবার হাওর এলাকায় সর্বত্র হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে।

গেল মাস হতে সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জসহ হাওর সমৃদ্ধ এই ৬টি জেলায় একত্রে বন্যা শুরু হয়। বিভিন্ন তথ্য হতে জানা যায় ফসল, মাছ, ঘরবাড়ি এবং রাস্তাঘাটসহ আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এবারের ভয়াবহ দুর্যোগে হাওর অঞ্চলে কম বেশি সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাজার মণ ধান পায় এমন গেরস্তর শূন্যহাতে ফিরতে হয়েছে। এমনও অনেক পরিবার আছে, কোনদিন লাইনে দাঁড়াবে বলে কল্পনা করতে পারেনি, তারাও ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়াচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।

এবারের ভয়াবহ দুর্যোগের কারণ হিসাব প্রচার মাধ্যম হতে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রভাবশালী ঠিকাদাররা কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতৃত্বের ছত্রছায়ায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেক জায়গায় বাঁধের কাজ শেষ না করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের যোগসাজশে প্রকল্পের টাকা তুলে নিয়েছেন। অনেক জায়গায় কিছু কাজ করে আগাম সব টাকা তুলে নেওয়ার সংবাদও প্রচার মাধ্যম হতে জানতে পারি। কাজ না করেও সম্পূর্ণ টাকা তুলে নিয়েছেন এমন সংবাদও প্রচার মাধ্যম হতে জানতে পারি। সুনামগঞ্জ বিশিষ্ট নাগরিকরা এক মতবিনিময় সভায় অভিযোগ করেন যখন ফসল হারা কৃষকরা দিশাহারা এবং অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে, তখন জলবায়ু পরিবর্তন, অকাল বন্যা, পানির উচ্চতা বেশি এসব তথ্য হাজির করে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে এমন অভিমত প্রকাশ করে। এখন আমরা জনসম্পৃক্ততার কারণে জানতে পানির সহজ সরল জীবনযাপনকারী হাওরবাসী এবার কোনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না।