টেকসইভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ নিন

শহরে পর্যাপ্ত ড্রেন নির্মাণ করতে হবে

প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বছরের পর বছর যায়, ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধ চিত্রের কোনো পরিবর্তন হয় না। বৃষ্টি হলেই রাজধানীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে কিংবা জনজীবনে দুর্ভোগ পোহাতে হবে- এ যেন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছরই আশ্বাস, নানা প্রকল্প, আর কোটি কোটি টাকা খরচ করেও জলাবদ্ধতার সমাধান হয় না। বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেয়া দরকার, শুধু এবারই নয়, বিভিন্ন সময়েই এই বিষয় আলোচনায় এসেছে-বৃষ্টিকে কেন্দ্র করে জনদুর্ভোগের কারণই হলো অপরিকল্পিত নগরায়ণ ব্যবস্থা। যেখানে, বৃষ্টির পানি পড়লেই তা আটকে থাকে। জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য যে ড্রেনগুলো আছে তাও ময়লা আর আবর্জনার স্তূপ পড়ে অকার্যকর হয়ে পড়ার বিষয়ও এর আগে আলোচনায় এসেছে। ফলে বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। কিছুদিন পরপর নগরজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ির হিড়িকসহ নানা কারণে দুর্ভোগ বাড়ে পথচারীদের। ফলে মানুষের এই দুর্ভোগ যদি রাজধানীতে প্রতিবারই সৃষ্টি হয় আর তারপরেও যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হয় তবে তার চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে! রাজধানীর জলাবদ্ধতা যেভাবে ঘটে চলেছে, তা নিরসনে সঠিক উদ্যোগ গ্রহণ ও যেভাবেই হোক তার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। চারপাশের নদীগুলো দখল-দূষণে মৃতপ্রায়। উপরন্তু অবৈধ দখল ও কঠিন বর্জ্যে ভরাট হওয়ার কারণে নগরের খাল, ড্রেন, বক্স কালভার্ট ও ব্রিক স্যুয়ারেজ লাইন দিয়ে পানি নদীতে যেতে পারছে না। ড্রেনেজ সিস্টেমেও সমস্যা রয়েছে। যেখানে সহজেই পানির সঙ্গে বিভিন্ন বর্জ্য যেমন পলিথিন এবং অন্যান্য অপচনশীল পদার্থ ভেসে গিয়ে নালার মধ্যে আটকে যায়। ফলে পানি সহজে নিষ্কাশন হতে পারে না। সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। এ কারণে শহরের সড়কের পাশে বসবাসকারী বাস্তুহারাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ দেখে মানবিক বোধসম্পন্ন যে কারো স্থির থাকা কঠিন। পথচারীদের খানাখন্দকে পড়া এবং হালকা যানবাহনের যাত্রীদের দুর্গতিও প্রায় সাধারণ দৃশ্য। একটি উন্নয়নশীল দেশের রাজধানীর এমন হাল কাম্য হতে পারে না। তাই ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। শহরে পর্যাপ্ত ড্রেন নির্মাণ করতে হবে। নগরের খাল, ড্রেন, বক্স কালভার্ট ও ব্রিক স্যুয়ারেজ লাইন পরিষ্কার এবং পানি চলাচলের উপযুক্ত রাখতে হবে। ঢাকার আশপাশের সব নালা-খাল, নদী সংরক্ষণ করতে হবে। শুধু সরকার বা সিটি করপোরেশনের কাছে প্রত্যাশা পেশ করে নাগরিকদের বসে থাকলে চলবে না। নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে আমাদের যেমন সচেতন হতে হবে, তেমনি সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর ওপরেও নাগরিক চাপ বাড়াতে হবে।