আমদানি রপ্তানির কার্যক্রম শুরু

সরকারের নজরদারি আরো বাড়াতে হবে

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা, ইন্টারনেট বন্ধ এবং নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটির কারণে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা নেমে আসে। আমদানি-রপ্তানিসহ শিল্পের চাকা বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ মানুষের দৈনন্দিন চলাচলও বাধাগ্রস্ত হয়। অনেকের মতে, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ক্ষতির পরিমাণ আরো বেড়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্ষতি মোকাবিলার জন্য সব বন্দরের পণ্য খালাসে দেরি হওয়ায় ডেমারেজ চার্জ মওকুফ, নতুন চার্জ আরোপ না করা, ঋণের বিপরীতে বাড়তি সুদ আরোপ না করা, কম সুদে ঋণ দেয়া ও অন্যান্য নীতিসহায়তা প্রয়োজন। একইসঙ্গে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে রপ্তানি আয় এবং দেশীয় ও বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানোর দাবিও উঠেছে।

স্বাভাবিকভাবেই অর্থনীতির চাকা বন্ধ হলে ক্ষতির অঙ্কও বাড়তে থাকে। কারণ তা পুরোপুরি চালু করতে বেশ সময় লাগে। ফলে সবকিছু স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণও বাড়তে থাকে। তবে ব্যবসায়ী কিংবা উদ্যোক্তাদের ক্ষতি তো হয়েছেই, সবচেয়ে বেশি হয়েছে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের। এটা সবারই জানা, অর্থনীতি এমনিতেই করোনার পর থেকে বহুমুখী চ্যালেঞ্জের ভেতর দিয়ে এগোচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দা এ চ্যালেঞ্জ আরো বাড়িয়েছে। এর ওপর সাম্প্রতিক অস্থিরতায় অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ আরো বাড়বে। ভুলে গেলে চলবে না, এ ধরনের পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়ে দেশের ভাবমূর্তি। দেশের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যেসব বিদেশি উদ্যোক্তা ব্যবসা করছেন, তারা অনিশ্চয়তায় ভোগেন। কাজেই এ ধরনের সংকট যাতে না হয়, সেদিকে সরকারকে নজর বাড়াতে হবে। আশার কথা, গেল বৃহস্পতিবার থেকে ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ার পর পুরোদমে বন্দর-কাস্টমসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখন ক্ষতির মাত্রা কমাতে সব ক্ষেত্রেই কাজে গতি বৃদ্ধিসহ সরকারের সহযোগিতাও বিশেষভাবে প্রয়োজন। এরইমধ্যে যা হয়ে গেছে, তা ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেয়া যায়, সেদিকেই সব পক্ষকে মনোনিবেশ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, সব পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই দেশের অর্থনীতিকে সন্তোষজনক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।