ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা ও শান্তি-শৃঙ্খলা জরুরি

অ্যাডভোকেট মো. আশরাফুল ইসলাম বাচ্চু
রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা ও শান্তি-শৃঙ্খলা জরুরি

জাপান ধ্বংসের পর যেভাবে জাপান জাতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আফগানিস্তান যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সিঙ্গাপুর যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মালয়েশিয়া যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। শুধু মাত্র সৎ ও যোগ্য শাসকের কারণে। আমরা কেন পারব না। আমরা পরিশ্রমী জাতি। আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা সেই ধরনের শাসক চাই। আমরা হিংসা হানাহানি রক্তক্ষয়ী আর কোনো কিছু দেখতে চাই না। পুলিশ যদি দায়িত্ব পালন না করে আমরা কিন্তু কেউ নিরাপদ থাকতে পারবো না। প্লিজ এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। পুলিশ বাহিনী যেন আর হুকুমের দাস না হয়। আমরা যেন তাদের ব্যক্তি স্বার্থে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার আর না করি। স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করা হোক। পুলিশ বাহিনীকে সৎ যোগ্য ব্যক্তি দ্বারা ঢেলে সাজানো হোক। বিচার বিভাগকে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তি দ্বারা সাজানো হোক। ক্ষোভ প্রতিহিংসা বড় কিছু করতে পারে না। নবীজি মক্কা বিজয়ের পর মাথা নিচু করে প্রবেশ করেছিলেন। অহংকার করেননি। সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সুশৃঙ্খলভাবে দেশটাকে রক্ষা করেছেন। জনগণের নিরাপত্তায় এগিয়ে এসেছেন এবং সঠিক দায়িত্ব পালন করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। তাদের সবাই সাহায্য করছেন। অত্যন্ত ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। জনগণের সাথে মিশে গেছেন।

সবকিছু হয়তোবা দুয়েকদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। আল্লাহ আমাদের তুমি সেই শিক্ষা দান কর। সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার শক্তি দান করুন। মহান আল্লাহর নিকট এই প্রার্থনা করি। আমরা এগিয়ে যেতে চাই নতুন এক বাংলাদেশ গড়তে। যদি দেশ থেকে ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করা যায়। ব্যাংকের ঋণখেলাপিদের টাকা যদি কঠোর হাতে ঠিকমতো আদায় করা যায়। যদি খাজনা ট্যাক্স কর ঠিকমতো আদায় করা যায়। প্রতিটি ইঞ্চি জমিতে আমরা ফসল ফলাতে পারি। যদি সবাই মিলে কাজ করি এবং বাংলাদেশকে রক্ষা করি। বাংলাদেশ তার আত্মমার্যাদা ফিরে পাবে ইনশাআল্লাহ। আমরা শপথ করি আগামীকাল থেকে কোর্ট কাছারি অফিস আদালতে সব ধরনের ঘুষ দুর্নীতি বন্ধ করা হোক। কেউ যেন ঘুষ না দেই কেউ যেন ঘুষ গ্রহণ না করি। রাষ্ট্রীয় সম্পদ, জনগণের সম্পদ ও টাকা পয়সা যেন কেউ অপচয় না করি। ক্ষতিসাধন না করি। এই একটি মাত্র স্লোগান প্রত্যেকটি অফিস আদালতে টানিয়ে দেই। পাড়ায় মহল্লায় সবাই দায়িত্ব পালন করি। সবাই মিলে এই ঈমানী দায়িত্ব পালন করি। কেন স্বাধীন দেশের নাগরিকরা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে পয়সা ছাড়া সেবা পাবে না? এই প্রশ্ন সবার। এ দেশকে রক্ষা করা সবার ঈমানী দায়িত্ব। সবাই মিলে একটু চেষ্টা করে দেখুন না। বাংলাদেশের চেহারাটা রাতারাতি পরিবর্তন হতে বাধ্য। সেই বাংলাদেশই আমরা দেখতে চাই। ব্যক্তির চেয়ে দেশ বড়। এই দেশটাকে সবাই মিলে গড়তে হবে। পাঁচটি বছর পরিচ্ছন্ন সৎ যোগ্য মেধাবী তরুণ নেতৃত্ব, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও প্রশাসকদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই দেশটাকে গড়ার জন্য মান্যবর নতুন উপদেষ্টাদের আমরা সবাই মিলে দায়িত্ব দেই। রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের শাখা-প্রশাখাগুলো আর যেন দুর্নীতিতে গ্রাস না করে। এগুলোকে সংস্কার করা প্রয়োজন। একবার সবাই মিলে চেষ্টা করে দেখি। বাংলাদেশ আমাদের সবার। এটা আমাদের অহংকার। বাংলাদেশ অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াতে বাধ্য। এই মাটি পবিত্র মাটি। এই জমিন বড়ই উর্বর। শুধু কাজে লাগানো দরকার। এই জমিনে অনেক ভালো মানুষ সাধক মানুষ ঘুমিয়ে আছেন। মহান আল্লাহ তাদের দোয়া ও বরকতে ঢেলে দিতে পারে বিশাল সম্পদ। অহংকার পতনের মূল আমরা যেন এটা ভুলে না যাই। আল্লাহ তুমি আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরার শক্তি দান করো। দেশকে রক্ষা করো। আর কোনো রক্ত হানাহানি দেখতে চাই না। প্রতিশোধের চেয়ে ক্ষমা করা উত্তম। তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীরা এগিয়ে এসেছে তারা নিজ হাতে রাস্তা পরিষ্কার করছে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। আমরা সবাই তাদের সাথে শরিক হতে চাই। অফিস আদালতে আর বিভক্তি দেখতে চাই না। পদোন্নতিতে আর বৈষম্য দেখতে চাই না। চাকরি নিয়োগে আর কোনো স্বজনপ্রীতি দুর্নীতি দেখতে চাই না। নতুন প্রজন্মের এই আওয়াজ এই উদ্যোগ ও ভালো কাজকে সাধুবাদ জানাই। অভিনন্দন জানাই। তারা যেন অফিস আদালতে গিয়া দেশটা গড়ার জন্য ঐতিহাসিক কিছু দায়িত্ব পালনের পথ দেখায়। আমরা তাদের কাছ থেকে শিখতে চাই। নতুন প্রজন্ম আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে সেই প্রত্যাশা সবার। শাসক পরিবর্তনের চেয়ে মানুষের পরিবর্তন বড় প্রয়োজন। তা না হলে শহীদের রক্ত বৃথা যাবে। সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা অমর ভালোবাসা। আল্লাহ তুমি আমাদের ক্ষমা কর। তুমি আমাদের সঠিক পথ দেখাও। যে পথ তুমি পছন্দ করো। আমিন। আল্লাহুম্মা আমীন।

লেখক : জজ কোর্ট, খুলনা

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত