ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জনজীবনের স্বাভাবিকতা ফিরে আসুক

নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা
জনজীবনের স্বাভাবিকতা ফিরে আসুক

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসকের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকার দ্বিতীয় দিন পার করলেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম দিনের উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো আমাদের আশা জাগিয়েছে। এই দুই দিনের শেয়ার বাজার এবং নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এরইমধ্যে পুলিশ বাহিনীও কাজে ফিরছেন। আশা রাখি খুব দ্রুত দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। গত কয়েকদিন ধরে দেশের ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছে শিক্ষার্থীরা। সাধারণ মানুষ তাদের স্বাগত জানিয়েছে। তাদের খাবার দিচ্ছে, সাহস যুগাচ্ছে।

ক’দিন ধরে সড়কে কোনো বিশৃঙ্খলা নেই। অল্প পরিসরে যানবাহন চললেও কোনো অসুস্থ প্রতিযোগিতা নেই। শিক্ষার্থীরা শহরের জ্রেবা ক্রসিংয়ের আগেই যানবাহন থামাচ্ছে। বাস স্টপেজ ছাড়া বাস দাঁড়াতে দিচ্ছে না। দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সড়কে যে শৃঙ্খলার কথা বলে আসছিলাম তা যেন এবার সত্যি হচ্ছে। রাস্তায় কোনো চাঁদাবাজি নেই। বাজারে বাজারে শিক্ষার্থীরা চাঁদাবাজি বন্ধে মাইকিং করছে।

দম অটকানো পরিস্থিতি থেকে মুক্তির শ্বাস নিয়ে নতুন করে বেঁচে উঠেছে দেশের মানুষ। কোটি কোটি মানুষের মাঝে সঞ্চারিত হয়েছে নতুন প্রাণের স্পন্দন। তারা দেখতে চায় এক নতুন বাংলাদেশ, ফিনিক্স পাখির মতো যে বাংলাদেশ জেগে উঠেছে ধ্বংস আর মৃত্যুর ভেতর দিয়ে। দলীয় স্বৈরাচার ও একনায়কত্ব যে রাষ্ট্রকাঠামোকে ফাঁপা বস্তুতে পরিণত করেছিল, সর্বস্তরে তারই প্রতিফলন দেখতে পাওয়া গেছে শাসকগোষ্ঠীর পতনে। আমরা দেখতে পেলাম প্রশাসনিক ব্যবস্থা বলতে কিছ– নেই, জননিরাপত্তা নেই, চারদিকে অরাজক পরিস্থিতি। এসবই হচ্ছে পতিত স্বৈরাচারের ফসল। গণতন্ত্রহীনতা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের দলীয়করণ আর ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে দেশবাসীকে। এমনকি স্বৈরাচারের পতনের পরও। যদি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা থেকে গণতন্ত্র উচ্ছেদ করা না হতো, তাহলে আজকের এ অবস্থা সৃষ্টি হতো না

ক্রান্তিলগ্ন থেকে উত্তরণের এ পর্বে জরুরি প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জনজীবনের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা। এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যেকোনো উদ্যোগের প্রতি জনসমর্থন রয়েছে বলে আমরা মনে করি। এ সরকারকে এরইমধ্যে জাতিসংঘসহ অনেক দেশ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সবার সহযোগিতায় সরকারের পথচলা সফল হোক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত