ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইতিহাস গড়েছে জেনারেশন জেড

মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান
ইতিহাস গড়েছে জেনারেশন জেড

অধিকার আদায়ে সফল, এবার পালা সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন দেশ গড়ার। শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে দায়িত্ব পেয়েছি, তা পালনে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকব, ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নই অন্তর্বর্তী সরকারে আমাদের অংশগ্রহণের মূল উদ্দেশ্য। ছাত্র-জনতার এই গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে মেরামত করে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ সাধন করার জন্য। গণঅভ্যুত্থানে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হবে ছাত্র নাগরিকের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করা। ছাত্র-জনতার প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা ও দাবি অনুযায়ী রাষ্ট্র মেরামত না হওয়া পর্যন্ত ছাত্র-জনতা সতর্ক ও সজাগ আছে এবং থাকবে। যে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানি, জনগণের সম্পত্তির ক্ষতি সাধন ও বিশৃঙ্খলা প্রতিহত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত আছে ও জনগণের সঙ্গে থেকে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে আসিফ আরো লেখেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুদ্ধ করেছি আমরা, এখন আবার দায়িত্ব নিয়ে সেই যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতিও নিরাময় করছি। ভলান্টারি অ্যাক্টিভিটির মাধ্যমে দেশের দায়িত্ব নেয়া ছাত্র-জনতাকে স্যালুট জানাই।

জুলাই-আগস্ট ২০২৪। একটি ইতিহাসের নাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিশু, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের শত প্রাণের বিনিময়ে বাংলার ইতিহাসে সংযোজিত হলো নতুন এক অধ্যায়। সরকারের উপর মানুষের দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভ, কষ্ট ও বঞ্চনার চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বাধ্য হয়ে সরকারপ্রধান ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের উপর প্রত্যাশার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত হলো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও আপামর জনতার প্রয়োজন/চাহিদাসমূহ নিরূপণ করা। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, স্লোগান, ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডের বার্তা থেকে সহজেই তাদের প্রয়োজন/চাওয়া বোঝা গিয়েছিল। শিক্ষক, অভিভাবক, শিল্পী, আইনজীবী, অবসরপ্রাপ্ত সেনা ও সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও পেশাজীবী এমনকি শ্রমজীবী মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যায়। আন্দোলনের শুরুতে কোটা সংস্কারের বিষয়টিই প্রাধান্য পেয়েছিল। তারুণ্যশক্তি আজ জেগে উঠেছে। এ শক্তির আবেগ অতি প্রবল। যত্নের সঙ্গে সঠিক পথে পরিচালনা করতে পারলে সমস্যা সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের সঙ্গে নিয়েই সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে সংস্কার করতে হবে। গুরুত্বের ক্রমানুসারে একেকটি প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার সংস্কৃতিতে সাজাতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের সত্যিকার বন্ধু হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সরকারি কর্মচারীরা যেন নিজেদের শাসক না ভেবে সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, সেভাবে আইনের সংশোধন জরুরি। প্রকৃত গণতন্ত্রের জন্য চাই নিয়ন্ত্রণমুক্ত, রাজনৈতিক পরিচিতি ও প্রভাবমুক্ত শক্তিশালী সংবাদ মাধ্যম সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর সঠিক নজরদারি করতে সক্ষম হবে।

২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের অধিক সময়ের স্বৈরাচারী শাসনের সমাপ্তি ঘটে। এই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতাকে দিতে হয় অজস্র প্রাণ। আর কেউ কেউ বরণ করেছেন পঙ্গুত্ব। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন নূর হোসেন। সেই ছবি এখনো গণতন্ত্রকামী ছাত্র-জনতার কাছে একটি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে।

২০২৪ সালে এসেও আবু সাঈদ, মুগ্ধ, রিয়া গোপের মতো ছোট্ট শিশুসহ যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে বিভিন্নভাবে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করেছেন তারা প্রত্যেকে এক একজন নূর হোসেন। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পরপরই জাতি যে দৃশ্য দেখল তা আমাদের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করে। সংসদ ভবনের চেয়ার থেকে শুরু করে বাথরুমের কমোডটি পর্যন্ত লুটপাট থেকে রেহাই পায়নি। তাহলে এত রক্ত, এত মায়ের বুক খালি কেন? তাই দেশের সাধারণ মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি। আমাদের সবার উচিত বিবেক ও নীতিনৈতিকতার আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে সমাজের প্রতি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা।

ছাত্ররা তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। একইভাবে আমাদের দায়িত্ব দেশের সমস্ত নাগরিককে তাদের অধিকার নিশ্চিত করা। ১৭ বছর আগের একটি গানের লাইন বারবার আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনে ঘুরেফিরে আসত ‘৩০ বছর পরও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি’। ছাত্রদের এই স্বপ্ন কি আসলেই পূরণ হবে? কারণ ‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করাই কঠিন’ এই কথাটি ভুলে গেলে চলবে না।

বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৩১ শতাংশের বেশি রয়েছে তরুণরা। তাই দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, উন্নয়ন সবকিছু তরুণদের উপর নির্ভর করছে। তরুণরা রাজনীতিতে এলে মেধাবীরা তার প্রাপ্ত যোগ্যতা পাবে, রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ হবে, ভোটাধিকার থাকবে সবার, দারিদ্র্য বিমোচনে তারা কাজ করার পাশাপাশি শিক্ষার মানও নিশ্চিত করতে পারবে। আর দুর্নীতি অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যাবে, কারণ দুর্নীতিগ্রস্তরা তরুণদের ভয় পায়। হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে ও হাজার হাজার ছাত্রদের নিহত-আহতদের আর্তনাদে তৈরি হয়েছে এই নির্ভীক নেতৃত্ব। এখন স্বাধীনতা রক্ষা করার যুদ্ধে নেমেছে তরুণরা। বিশ্বায়নের এই যুগেও বাংলাদেশের নিম্ন আয়ের মানুষের ছেলেমেয়েরা এখনো একটি ছোট চাকরির স্বপ্ন দেখে। তাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকারত্ব দূর করা।

সর্বস্তরে ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তবায়ন করা। এছাড়া আমাদের রাজস্বের প্রধান উৎস ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেবেল যুক্ত তৈরি পোশাক তথা অ্যাপারেল ম্যানুফাকচারিং থেকে। তাই পাঠ্যক্রমে এই বিষয়টা সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হলে আমরা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবো। বিদ্যালয়, কলেজ এবং এমনকি মাদ্রাসা পাঠ্যক্রমেও যদি এই অ্যাপারেল তথা গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের সাধারণ জ্ঞান, প্রাথমিক ধারণা, শিল্পায়নের ইতিহাস ও প্রযুক্তিগত কিছু অধ্যায়সহ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং যুক্ত করা হয় তাহলে বেকারত্ব তথা দারিদ্র্যবিমোচনে বিরাট ভূমিকা পালন করবে। কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় পাঠ্যক্রম এবং ফলাফলভিত্তিক শিক্ষা যা শিক্ষার্থীর দক্ষতা ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান অর্জন করতে সহায়ক হবে।

আমরা যদি পাহাড়কে সরিয়ে ফেলার স্বপ্ন দেখি তার শুরুটা হওয়া উচিত ছোট ছোট নুড়ি সরানোর মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ স্বপ্ন দেখে। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নও করে। এরই ধারাবাহিকতায় অদম্য সাহস বুকে নিয়ে অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে বাংলার রাজপথ কম্পিত করতে রাস্তায় নেমেছিল অদম্য তরুণের দল। আজ আমরা সফল। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই যেখানে দুর্নীতির হার শূন্যের কোঠায় চলে আসবে। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না। কেউ আর বেকার থাকবে না। মিথ্যাচার, অত্যাচার লেজ গুটিয়ে পালাবে। বিশ্বমানের শিক্ষায় বাংলার ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষিত হবে। যেখানে থাকবে না কোনো জাতি-উপজাতির, ধনী-গরিবের পার্থক্য। যেখানে মানুষের অধিকার নিশ্চিত হবে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশের প্রশাসন দেশের স্বার্থে কাজ করবে। তারা মানবিক হবে, তারা হবে প্রকৃত দেশপ্রেমিক।

আমি এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে কোনো তরুণ আর বিদেশে পাড়ি জমানোর স্বপ্ন দেখবে না। তারা দেশের স্বার্থে প্রাণ দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। আমি এমন বাংলাদেশ চাই যেখানে শান্তির হাওয়া বইবে। যেখানে আর কোনো জুলুম, নির্যাতন, সন্ত্রাস, স্বৈরাচার স্থান পাবে না। শিক্ষাঙ্গনে অসুস্থ রাজনীতি বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। শিক্ষার্থীরা আর কোনো শিকলে বন্দি থাকতে চায় না। শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষার্থী সংসদ গড়ে তোলা হোক। মনে রাখতে হবে, ছাত্রসমাজের ওপর আঘাত এলে ইতিহাস বদলায়। পৃথিবীর কোনো শক্তি বাংলার তরুণ, মেধাবী ছাত্র সমাজকে দমাতে পারবে না।

তারুণ্য একটি দেশের সম্পদ, আগামীর ভবিষ্যৎ। আমাদের তরুণদের দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে হবে। তাদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলতে হবে। তাদের নতুন নতুন উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করতে হবে। তরুণদের মধ্যে উদ্যোগী হওয়ার প্রবণতা বাড়াতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে যুক্ত করতে হবে। তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানের মতো মৌলিক চাহিদা পূরণে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

দুর্নীতি দমন করতে হবে। আইনের সঠিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একটি উন্নত দেশ গড়তে হলে শিক্ষাব্যবস্থাকে দৃঢ় করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থায় প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। অনলাইন শিক্ষা, মোবাইল অ্যাপস, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)সহ এসব যুগান্তকারী প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা শিক্ষাকে আরো আকর্ষণীয় এবং কার্যকর করতে পারি। একইসাথে, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের উপরও জোর দিতে হবে। তাদের আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করতে হবে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কেন এত পিছিয়ে? কারণ আমরা শুধু ডিগ্রিধারী তৈরি হতে চাই, জ্ঞানী মানুষ নয়। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় সৃজনশীলতা, গবেষণা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলি শেখানো হয় না। ফলে আমরা তরুণরা বেকার হয়ে পড়ছি, বা অন্য দেশে চলে যাচ্ছি। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। শুধু তত্ত্ব নয়, ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের উপর জোর দিতে হবে।

দীর্ঘ ১৬ বছর পরে ছাত্রসমাজ দেশকে একনায়কতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থা থেকে মুক্তি দিয়েছে। মুক্তি দিয়েছে বাকস্বাধীনতাহীন, সাধারণ মানুষের মধ্যে বৈষম্য, গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা থেকে। ছাত্রসমাজ রুখে দাঁড়িয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে। তবে এটি এত সহজে আসেনি, অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে, অনেকে হারিয়েছে স্বজন, আবার অনেকে বরণ করেছে পঙ্গুত্ব।

দেশটি যেমন একদিনে স্বাধীন হয়নি তাই এটি সংস্কারও একদিনে সম্ভব নয়। একটি নতুন বাংলাদেশ হিসেবে সর্বপ্রথম চাহিদা বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলার। সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি সবার নির্বিশেষে একই অধিকার থাকবে। মানুষে মানুষে কোনো তফাৎ বা পার্থক্য থাকবে না। সবাই মানুষ সবার অধিকারও এক। ভোটের অধিকার আবার কার্যকর করে তুলতে হবে, প্রাপ্তবয়স্ক সবার ভোটদান নিশ্চিত করে গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এশিয়ায় দুর্নীতির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। তাই দেশকে দুর্নীতি থেকে মুক্তি দেয়া এখন সব থেকে বড় নজরদারির বিষয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়ন এনে দেশকে মেধাশূন্য হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে হবে। চাকরির ক্ষেত্রে সুপারিশ নয় বরং যোগ্যতার মূল্যায়ন করতে হবে।

সরকারি কার্যক্রমগুলো সাধারণ জনগণের জীবনমুখী করতে হবে। পোশাক শিল্পকে করতে হবে নিজ দেশমুখী। পর্যটন কেন্দ্রসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনগণের হয়রানিমূলক কার্যকলাপ বন্ধ করার বিষয়ে বিশেষ নজরদারি রাখতে হবে। পুলিশ প্রশাসন দ্বারা সাধারণ জনগণের হয়রানিমূলক কার্যক্রম দমন করতে হবে। আর এ সবকিছু তখনই সম্ভব হবে যখন আমাদের প্রধান হবেন সৎ ও ন্যায় ব্যক্তিত্বের। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা শুধু তাদের অধিকার চেয়েছে। সমতা চেয়েছে। মেধার মূল্য চেয়েছে। কোটার সংস্কার চেয়েছে।

আক্রমণ করে, দমননীতি প্রয়োগ করে শিক্ষার্থীদের কোনো আন্দোলনই দাবিয়ে রাখতে কেউ পারেনি। কোটা বৈষম্য সংস্কার করতে গিয়ে আজ পুরো রাষ্ট্রকেই সংস্কার করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের এই অর্জন অর্জিত হলো বহু প্রাণের বিনিময়ে। এখন সময় স্বাধীনতা রক্ষা করার। স্বাধীনতার প্রথম প্রহরেই জ্বালাও-পোড়াও দিয়ে যে জাতি আনন্দ-উল্লাস করে আমি তাদের নিয়ে হতাশ! ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসের কাছে আমার একটা ছোট্ট অনুরোধ, আমাদের একটি বৈষম্যহীন, সাম্যের দেশ উপহার দিন। তারপর সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে সে ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক। আমরা এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, যেখানে থাকবে না কারো একক আধিপত্য!

নাগরিক তার মৌলিক অধিকারগুলো সঠিকভাবে পাবে। চাকরির পরীক্ষাসহ সমস্ত পরীক্ষায় স্বচ্ছতার দিকে চেয়ে আছে সমস্ত ছাত্রজনতা। এই গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে মেরামত করে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ সাধন করার জন্য। কোনো নির্দিষ্ট দল কিংবা গোষ্ঠীর ক্ষমতায় অনুপ্রবেশের উদ্দেশ্যকে চরিতার্থ করার জন্য নয়। আন্দোলনের প্রথম সারি থেকে নেতৃত্ব দানকারী একজন আন্দোলনকারী হিসেবে, এই যুদ্ধের একজন গর্বিত অংশীদার হিসেবে আশা করাটা আমার অধিকার! নতুন করে সাম্যের বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায় বিভোর আমার দুই চোখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত