ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দ্রুত পুনর্গঠন জরুরি

অর্থনৈতিক সংকট
দ্রুত পুনর্গঠন জরুরি

সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট অস্থিরতার প্রভাব গিয়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতিতেও। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যও ব্যাহত হয়েছে। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের অভিমত- দেশের অর্থনীতি আগে থকেই বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছিল। নতুন সরকারের প্রেক্ষাপটে এখন চ্যালেঞ্জের সংখ্যা আরো বাড়ল। বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা। কারখানার নিরাপত্তা জোরদার করে উৎপাদন কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করা। পাশাপাশি ভেঙেপড়া সরবরাহব্যবস্থাও দ্রুত স্বাভাবিক করা দরকার। বস্তুত সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে সরবরাহ ব্যবস্থায়।

যে কারণে পণ্যের দাম বেড়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় ধীরে ধীরে সরবরাহব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এরইমধ্যে পণ্যের দাম কিছুটা কমতে শুরু করলেও উৎপাদনব্যবস্থা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কনটেইনার জট লেগে গেছে। নিরাপত্তার কারণে উদ্যোক্তারা পণ্যের ডেলিভারি নিচ্ছেন কম। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আমদানি-রপ্তানিতে। বস্তুত নতুন সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক। আগে থেকে চলা সংকটের কারণে খুব শিগগিরই অর্থনীতিকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনার কাজটি খুব কঠিন। অনিয়ম, দুর্নীতি, টাকা পাচার, হুন্ডি- এসব বন্ধ করা হলে আশা করা যায় দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে। অর্থনীতিকে গতিশীল করতে হলে সবার আগে আস্থার পরিবেশ নিশ্চিত করা দরকার। দেশে ডলারের সংকট এখনো প্রকট। ডলারের দাম কৃত্রিমভাবে ধরে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত দামে ডলার মিলছে না।

ফলে আমদানির এলসি খোলা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাম্প্রতিক আন্দোলনের নেপথ্যেও কাজ করেছে অর্থনৈতিক সংকট। কাজেই এসব সংকট দ্রুত দূর করার পদক্ষেপ নেয়া দরকার। দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হলে অর্থনীতিকে গতিশীল করে এখন বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর পদক্ষেপও নিতে হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রাথমিকভাবে সরকারি খাতে কর্মসংস্থান বাড়ানোর পদক্ষেপও নেয়া দরকার। সরকারি খাতের শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ প্রদান করা হলে তারাও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবেন। সরকারি খাতের বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলোতে জনবল সংকট রয়েছে। সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রদানের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাভজনক করার পদক্ষেপও নিতে হবে। দেশের মোট কর্মসংস্থানের বড় অংশই হচ্ছে বেসরকারি খাতে। কাজেই বেসরকারি খাতকে চাঙা করার পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শিল্পের বিকাশে দরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ। আমরা আশা করি, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত