অভিন্ন নদীর পানির সুষম বণ্টন কেন নিশ্চিত হয়নি

রায়হান আহমেদ তপাদার, গবেষক ও কলামিস্ট

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে এক দীর্ঘমেয়াাদ অমীমাংসিত ইস্যু। দু’দেশের মধ্যে ১৯৯৬ সালে একমাত্র গঙ্গা নদীর পানির বণ্টনের চুক্তি স্বাক্ষর হলেও তিস্তাসহ আলোচনায় থাকা আটটি নদীর পানি ভাগাভাগির ব্যাপারে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। গঙ্গা চুক্তির পর আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগির ব্যাপারটি। ২০১১ সালে দু’দেশের মধ্যে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে সব প্রস্তুতি নেয়া হলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতায় তা সম্পন্ন করা যায়নি। যদিও এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কিন্তু এখন থেকে ২০ বছরকে মাথায় রেখে এরকম একটি চিন্তা থাকতে হবে। যেটি রাখা হয়নি।

আমাদের প্রতিবেশীদের মধ্যেও এই দৃষ্টিভঙ্গীর অভাব আছে। সেজন্য দেখা যাচ্ছে, তিস্তা ইস্যুতে আমরা অনেক পরে নজর দিয়েছি। যতদিনে নজর দিয়েছি, ততদিনে কিন্তু সমস্যাটি শুরু হয়ে গিয়েছে। তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত আলোচনা অনেক পুরোনো। দেশ স্বাধীনের পর পরই ১৯৭২ সালে তিস্তার পানি নিয়ে যৌথ নদী কমিশনের দ্বিতীয় সভায় আলোচনা হয়। ১৯৮৩ সালে অন্তর্বর্তীকালীন একটি চুক্তিও হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের ছিল ৩৬ শতাংশ, ভারত ৩৯ শতাংশ আর ২৫ শতাংশ পানি ছিল নদীর নাব্য বজায় রাখার জন্য। ১৯৮৫ সালে সেই অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। ১৯৮৭ সালে মেয়াদ আরো ২ বছর বাড়ানো হয়েছিল। এরপর আর কোনো চুক্তি হয়নি। ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। ভারতের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের জটিলতায় সেটি আর এগোয়নি। তিস্তায় পানি সংকটের প্রভাব বিপুল। ধারাবাহিকভাবে পানিপ্রবাহ কমে আসায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী খাদ্য উৎপাদন করতে পারেনি তিস্তা-তীরবর্তী মানুষ। সন্দেহ নেই, তেমনটি হলে শক্তিশালী হতো উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খাদ্যনিরাপত্তা বলয়। একইভাবে বাড়াতে পারত অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা ওই অঞ্চলের কৃষকের আয়। তিস্তায় পানির দুষ্প্রাপ্যতার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি ছাড়াও আরেক ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি আমরা। আর তা হলো পরিবেশগত ক্ষতি। পানির অভাবে নদী অববাহিকায় প্রতিবেশগত ভারসাম্য, প্রাকৃতিক কার্যাবলি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে; হুমকিতে পড়ছে জীববৈচিত্র্য। আমরা দেখছি তিস্তার পানি না পেয়ে সেচের জন্য অনেক কৃষক ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করছেন। এতে তাদের উৎপাদন খরচ বাড়ছে, পরিবেশে পড়ছে বিরূপ প্রভাব। যেকোনো পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি রাষ্ট্রকে জাতীয় স্বার্থ বা জণকল্যাণ ও সম্মান-এ দুটি বিষয়ের দিকে নজর রাখা উচিত। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দিক থেকে এ বিষয়গুলোর ঘাটতি ছিল। কারণ গত ১৫ বছরের শাসনামলে ভারতের ওপর বাংলাদেশের রাজনৈতিকনির্ভরতা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বা অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের নিয়মই হচ্ছে পারস্পরিক সমঝোতা এবং পানির ন্যায্য বণ্টন ও অববাহিকাভিত্তিক ব্যবস্থাপনা। অভিন্ন নদীতে কোনো একটি দেশের একক খবরদারির সুযোগ নেই। কোনো যৌথ নদীতে কোনো দেশ একক সিদ্ধান্তে বাঁধ নির্মাণ করতে পারে না, অন্য দেশের অনুমতি নিতে হয়। আবার বাঁধ নির্মাণের পরও নিয়মিত তথ্য সরবরাহ করতে হয়। বাঁধ খুলে দেয়ার আগে জানাতে হয়। কিন্তু ভারত এগুলো মান্য করেনি। বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিবাদ জানানো হয়নি। বিগত বছরগুলোয় দুটি দেশের অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নীতিতে ভারত সবসময়ই নিজের স্বার্থেই সোচ্চার থেকেছে। বাংলাদেশের স্বার্থ সবসময়ই উপেক্ষিত থেকেছে। ১৯৭২ সালের মার্চে দুই দেশের মধ্যে ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী, সহযোগিতা এবং শান্তি চুক্তি’ সই হয়। এ চুক্তি অনুসারে যৌথ নদী ব্যবস্থাপনার জন্য গঠন হয় যৌথ নদী রক্ষা কমিশন (জেআরসি)। দুই দেশের মধ্যে মোট নদী ৫৪টি। সেচ, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এসব নদীর পানিসম্পদ ভাগাভাগির মতো বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানই ছিল এটির মূল উদ্দেশ্য। দেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় দরকষাকষিতে বরাবরই ব্যর্থ হয়েছে কমিশন। এ ছাড়া কমিশনের নিয়মিত কার্যক্রমও ঠিকমতো সম্পাদন হয়নি। ফলে কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জেআরসির কার্যপদ্ধতি অনুযায়ী বছরে চারটি সভা করার কথা ছিল। সে হিসেবে অর্থাৎ ৫২ বছরে ২০৮টি জেআরসির বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা। কিন্তু বাস্তবে কমিশন আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছে শুধু ৩৮টি সভা। ৫২ বছর পার হলেও আন্তঃদেশীয় নদীগুলোর পানির সুষম বণ্টন নিশ্চিতে এ কমিশন তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে নদীগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সহযোগিতা নিতে পারে। জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় এ কমিশনের সক্ষমতা বাড়ানো অপরিহার্য। ৫২ বছরে এ কমিশনের সাফল্য বলতে শুধু গঙ্গা চুক্তি। এ চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের ন্যায্যভাবে পানি ভাগ করে নেয়ার কথা ছিল। যৌথ নদী কমিশনের ২০২৪ সালের তথ্য বলছে, এ বছর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ পানির ন্যায্য অংশ পেয়েছে। ২০২৬ সালে এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। সম্প্রতি এ চুক্তি নবায়নের বিষয়ে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনা হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন, যা এ চুক্তির ভবিষ্যৎকেও শঙ্কায় ফেলেছে। ১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ কনভেনশনটি ২০১৪ সালের ১৭ আগস্ট থেকে আইনে পরিণত হয়েছে। সেখানে উজানের দেশ থেকে ভাটির দেশে প্রবাহিত নদীর পানি কীভাবে ব্যবহার হবে, তার দিকনির্দেশনা আছে। যে নদীর পানি যে খাতে প্রবাহিত হয়, সেই নদীর পানি সেই খাতে না রেখে খাত পরিবর্তন করলে তা নদীর জন্য কল্যাণের হবে না। ভারতের যেটি তোরসা নদী বাংলাদেশে তা দুধকুমার। ভারতের যেটি জলঢাকা, বাংলাদেশে তা ধরলা নদী। এ নদীতে এমন উল্লেখযোগ্য পানি থাকে না, যা দিয়ে তিস্তার ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। আর এ দুই নদীতে পানি থাকলেও তা দিয়ে তিস্তার ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হতো না।

জাতিসংঘে গৃহীত কনভেনশনে পানিসম্পদ ব্যবহারবিষয়ক আর্টিকেল-৫-এ বলা হয়েছে, কোনো প্রবাহিত অভিন্ন বা আন্তর্জাতিক নদীর উপকূলবর্তী দেশগুলো ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে পানিসম্পদ ব্যবহার করবে। সীমান্ত নদী কিংবা জলাধার ব্যবহারের ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যা ও ভূমির পরিমাণ অনুযায়ী পানিসম্পদ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পানিসম্পদ আইনেও অভিন্ন নদী বা সীমান্তবর্তী জলাধারের যৌথ ব্যবস্থাপনা, ন্যায্য পানি বণ্টনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে বিভিন্ন দেশ অভিন্ন নদীর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করছে। এর মধ্যে দানিয়ুব নদীর কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের ১২টি দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এ নদীর তীরবর্তী অঞ্চলকে পটে আঁকা ছবির মতো রক্ষণাবেক্ষণ করছে তারা। দানিয়ুবের তীরে গড়ে উঠেছে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা, হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট, সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডসহ জার্মানি থেকে রুমানিয়ায় বিস্তৃত বিভিন্ন নয়নাভিরাম শহর-বন্দর। নর্থ সির তীর থেকে ব্ল্যাক সির তীর পর্যন্ত রয়েছে দানিয়ুবের নাব্য ও জাহাজ চলাচলের সব সুযোগ-সুবিধা। শুধু জাহাজ চলাচল ও সেচ ব্যবস্থারই সূত্র নয়, এ অঞ্চলে মিঠা পানির মাছ ও পানীয় জলের অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে দানিয়ুব। এতটা কাল পারস্পরিক অঙ্গীকার, দায়িত্বশীলতা ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতির ভিত্তিতে এ নদীর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করেছে দেশগুলো। সিন্ধু ও তার পাঁচ নদের পানি ন্যায্যতার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে ইন্ডাস ওয়াটার ট্রিটি বা সিন্ধু জলচুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছিল বিশ্বব্যাংক। আর চুক্তি বাস্তবায়ন এবং চুক্তি সম্পর্কিত যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তিতে গঠন হয় ‘সিন্ধু কমিশন’। সিন্ধু অববাহিকাকে ঘিরে হওয়া পানির হিস্যাটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো ও দীর্ঘ সময় ধরে চালু থাকা আন্তর্জাতিক পানি বণ্টন চুক্তি।

গত ৬৪ বছর এই কমিশন বেশ সফলতা দেখিয়েছে। এগুলো বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন ও ব্যবস্থাপনায় বিশেষভাবে শিক্ষণীয়। তিস্তা দেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষি, মৎস্য ও খাদ্যব্যবস্থার জন্য পানির বড় আধার। বিশেষ করে অববাহিকা সংলগ্ন প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গ্রামের মানুষ তাদের জীবিকার জন্য এ নদীর ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক আইনি বিধিব্যবস্থা অনুযায়ী একটি আন্তঃদেশীয় নদী হিসেবে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়া বাংলাদেশের অধিকার। দুই দশকের বেশি সময় ধরে, বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে এ নদী থেকে একচেটিয়া পানি প্রত্যাহার করে আসছে ভারত। ফলে তিস্তার বাংলাদেশ অংশে পানিপ্রবাহ ক্রমে কমে গেছে। এতে তিস্তার পানির ওপর নির্ভরশীল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ১২টি উপজেলায় কৃষি উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আবার বর্ষার পানি ছেড়ে দেয়ায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা দেখা দিচ্ছে। সাধারণভাবে ধানচাষ করলে যে ব্যয় হয়, সেচ প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে সেই ধান চাষ করলে ব্যয় হয় ২০ ভাগের এক ভাগ। রংপুরের মঙ্গা দূরীকরণে তিস্তা সেচ প্রকল্প অনন্য ভূমিকা পালন করছে এখন। সেই সেচ প্রকল্প কার্যত শুষ্ক মৌসুমে অচল। যে আট হাজার হেক্টর জমিতে রেশনিং সিস্টেমে পানি দিয়ে ধান চাষ করা হচ্ছে, তা নদীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই ছেড়ে দেয়া প্রয়োজন। তিস্তায় পানি না থাকার কারণে আরো অসংখ্য সমস্যা দেখা দেয়। উত্তরের জীবনের জন্য তিস্তার পানির কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় যৌথনদী রক্ষা কমিশনের সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। বছরে যেসব সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা নিয়মিত করতে হবে। তা ছাড়া তিস্তা প্রসঙ্গে যৌথ নদী কমিশনের কোনো কার্যক্রম আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। অবস্থা দেখে মনে হয়, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির সম্ভাবনা অনেকটাই ঝিমিয়ে গেছে। বড় চেষ্টা আসতে হবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেই। এক্ষেত্রে তিস্তা নদীর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা সাফল্যের পরিচয় দিতে পারেনি। আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি ভাগাভাগির ক্ষেত্রে চুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ চুক্তির মাধ্যমেই একটি দেশের পানির হিস্যার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হয়। তিস্তাসহ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রতিটি নদীর পানি সমতা নীতির ভিত্তিতে বণ্টন হবে বলে প্রত্যাশা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকারকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দুই দেশের পানি বণ্টনের মীমাংসা শুধু দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়, এক্ষেত্রে ভারতের রাজ্য সরকারের স্বার্থ এবং সম্মতির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতিরও এখানে প্রভাব রয়েছে। তারা বলেছেন, বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে থেকে রাজনৈতিক উচ্চপর্যায়ে যে ধরনের সংলাপের প্রয়োজন, সেটি যথাসময়ে করা সম্ভব হয়নি, এ ছাড়া সবপক্ষের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করা যায়নি। যে কারণে অভিন্ন নদীর পানি সংক্রান্ত ছোটখাট বিষয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নেও দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকতে দেখা যায়। যৌথ নদী কমিশনের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংলাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটাই সমাধানের দিকে নিয়ে যাবে। তাই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রেখে এর সমাধান সম্ভব। দুই দেশই আমাদের পানির দক্ষ ব্যবহার করতে পারি, আমরা দুই দেশে অববাহিকাভিত্তিক সামগ্রিকভাবে নদী ব্যবস্থাপনাকে যদি চিন্তা করি, তাহলে দেখা যাবে যে, এরকম অনিশ্চয়তা এবং দুশ্চিন্তা আমরা দূর করতে পারব। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও এর সমাধান আমরা করতে পারিনি।

[email protected]