বিচ্ছেদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের জন্য বিশ্বাসের বারুদ দরকার!

রাজু আহমেদ

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

ভেঙে যাওয়ার আগেও যেন জোড়া লাগা এবং লাগানোর জন্য শেষ চেষ্টাটুকু থাকে। বলে চলে যাওয়া সহজ তবে না বলে থেকে যাওয়ার মধ্যে স্বপ্নীল অনুভূতি আছে। বিচ্ছিন্ন থাকা, বিচ্ছেদ করা- এসব কত সহজে পারা যায় অথচ থেকে যাওয়ার মতো সৌন্দর্যমণ্ডিত অমূল্য সাফল্য পৃথিবীতে দ্বিতীয়ত নেই। রেখে দেয়ার মতো দামি আর কিছু নাই। সম্পর্কে বিশ্বাসের ভিত মজবুত হলে, পারস্পারিক যত্ন করলে এবং সম্মান দিলে যা পাওয়া যায় তা সম্পদের অধিক। সে সম্পর্ক শানিত শোভিতের সম্পূরক। সহ্য-ধৈর্য আর চাওয়া-পাওয়ার সম্মিলনে যে মধুর মিলন তার জন্য একশ’ বছর অনায়াসে অপেক্ষা করা যায়। একটু সুখের জন্য আরেকটু যত্ন হোক। মনের ভাষা বুঝতে পারা আর স্বপ্নগুলো জানার জন্য সুন্দর মন নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। চেষ্টা বিফল হয় না। অসময় এলো বলে চলে গেলামণ্ড কাপুরুষতা হবে। চিরকাল সময় কারো সমান নাহি যায়। দুঃখ-দুঃসময়ে যে হাত ভরসা দেয়, যে আকাশ ছায়া ফেলে এবং যে বুকে আশ্রয় হয় তার সাথে বেইমানির চেয়ে মন্দ কিছু অন্ধের খোঁজেও নাই। আস্থার জায়গা নষ্ট হয়ে গেলে, বিশ্বাস-ভরসা হত্যা করলে একসাথে বাঁচা দায়। তখন ছন্নছাড়ার তকমা পায়। ছেড়ে যাওয়া আর ধরে রাখার মধ্যে যে বিস্তর ফারাক তা গন্তব্যে পৌঁছানো সফলরা জানে। ভালোর আলো মাখাতে লেগে থাকতে হয়। ত্যাগ-তিতিক্ষায় যে ফল তা অধিক মিষ্টি। ইগোকে সীমানাপ্রচীর বানালে সে সম্পর্ক যত মধুর হোক- টিকবে না। মোহ যখন গভীর হবে তখন বধূর সম্পর্কও থাকবে না। লোভ যদি সম্পর্ক নির্ণায়কের মাপকাঠি হয় তবে তা মনের রঙে রাঙবে না। ভালোবেসে যা জয় করা যায় তা কেনা যায় না, আবার দখল করেও ধরে রাখা যায় না। মন যত্ন চায়। যে মনকে স্বপ্ন দেখাতে পারে, পারে হাওয়ার ঘোড়ায় সওয়ার করাতে সে থাকে, তাকে রেখে দেয়। ঝড়-ঝাপটা মোকাবিলা করে যারা থেকে গেছে তারা বুঝেছে সম্পর্কের পূর্ণতা ও গভীরতা কতখানি। পেয়েছে তৃপ্তিদায়ক স্বস্তি। কালোমেঘ দেখেই যারা পালিয়ে গেছে, যুদ্ধের মুখোমুখি হতেই যারা হাল ছেড়ে দিয়েছে তাদের কপালে শান্তির পাল জোটেনি। তাদের ভোগ পূরণ হয়েছে কিস্তু শখণ্ডসাধ মেটেনি। অনায়াসে মনের অনাহার দেখে ধুঁকে ধুঁকে যারা জীবন থেকে মুক্তি খুঁজেছে তারা বুঝেছে জীবনযন্ত্রণা কত অধিক হতে পারে। তারা সয়েছে পরাজয়ের গ্লানি, দেখেছে পথচলার ক্লান্তি। অথচ আরেকটু ধৈর্য দেখালে ধরা দিত স্বপ্ন। এখানেই নেমে আসতো স্বর্গ। আমরা অল্পতেই হাল ছেড়ে দেই। অতঃপর ভাগ্য-সময়ের দোষ দিই। আফসোস করতে করতে কপাল চাপড়াই। অথচ যতদিন নিজের দোষ বুঝতে পারবো না এবং বিচার না হবে আমার- ততদিন অতৃপ্তির মধ্যে বাস করবে আত্মা।