ঢাকা ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

একসঙ্গে এগিয়ে যাই সম্মুখে দৃঢ় প্রত্যয়ে

আবুল খায়ের বাবু, কলাম লেখক
একসঙ্গে এগিয়ে যাই সম্মুখে দৃঢ় প্রত্যয়ে

গত ১৮ সেপ্টেম্বর একটি মোটরসাইকেল চুরির মতো একেবারেই ছোট একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে সংঘটিত হয়ে গেল ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত। পুড়েছে ঘড়বাড়ি-ব্যবসা, প্রতিষ্ঠান, আবাসস্থল। আক্রান্ত হয়েছে ধর্মীয় স্থান, মারা গেছে চারজন, আহত অনেকে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- তারা বাইরের কেউ নয়, নয় কোনো ভিনদেশী। তারা একে অপরের বন্ধু-সহপাঠি-সহকমী প্রতিবেশী সবার সমান অধিকারে বাংলাদেশের নাগরিক বাংলাদেশি। গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, মামুন নামে বাঙালি একযুবক উপজাতীয় একজনের মোটরসাইকেল চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে এবং উপজাতীয়দের গণপিটুনীতে মারা যায়। ঘটনার প্রতিবাদে বাঙালিরা মিছিল করলে মিছিলে হামলা করা হয়। সেখান থেকে শুরু আত্মঘাতী সংঘাত। সেনাবাহিনী অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আসলে তাদের প্রতি গুলি ছোড়ার ঘটানাও নাকি ঘটেছে। প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে আর উপজাতীয় সংঘঠন তিনদিনের অবরোধ ডাক দেয়। ঢাকা থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল গিয়ে আলাপ-আলোচনায় তদন্ত কমিটি গঠন এবং তদন্তে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির নিশ্চয়তায় পরিস্থতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল।

প্রশাসন ১৪৪ ধারা তুলে নেয়। মানুষের মনে আস্থার অভাব এবং শংকা থাকলেও আশা করেছিল, এখানেই সব হিংসা-হানাহানির হবে অবসান। কিন্তু নাহ!, সকলকে হতাশ করে খাগাড়াছড়িতে পহেলা অক্টোবার, মঙ্গলবার দুপুরে এক শিক্ষককে উপজাতীয় ১০-১৫ জন তরুণ পুলিশের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। অভিজ্ঞ টেকনিক্যাল স্কুলের পাশে শিক্ষকের থাকার কক্ষে সপ্তম শ্রেণির এক পাহাড়ি ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন। সংবাদে একছাত্রের উদ্ধৃতিতে জানা যায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দশম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে এই শিক্ষককে ফাঁসানো হয়েছিল এবং তাতে বেশ কিছুদিন জেলহাজতে ছিলেন। ফলে চারিদিকের পাহাড়ি-বাঙ্গালী উত্তেজনা থামাতে প্রশাসন দ্রুত আবারও ১৪৪ ধারা জারি করে এবং নিরাপত্তা টহল জোরদার করায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রশাসন ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

এমন ঘটনা সারা বাংলাদেশে প্রতিদিনই ঘটছে। ছেলে বাপকে মারছে, ভাই ভাইকে মারছে, বন্ধু বন্ধুকে মারছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে মানুষ পিটিয়ে মারছে প্রতিবাদ হচ্ছে মিছিল হচ্ছে, থানায় মামলা হচ্ছে। প্রসাশন অপরাধীকে আইনের আওতায় আনছেন। দেশের পাবত্যাঞ্চলেও এই অমানবিক প্রবৃতি হামলে পড়েছে। চোর-ডাকাত-খুনি যেই হোক, আইন নিজের হাতে তুলে গণপিটুনি দিয়ে মারা কোনো সভ্যতায় পড়ে না। পাশাপাশি দুটি খালি কলসী রাখলেও ঠুকাঠুকি হয়। কাম-ক্রোধ-লোভে ভরা মানুষের সমাজে এমন ঠুকাঠুকি না হওয়ার কথা নয়। অপরাধ দমনে সেই জন্য রয়েছে প্রশাসন। যে কোনো অপরাধে ব্যক্তিই অপরাধী তার কোনো জাত নেই, ধর্ম নেই, তাকে শাস্তি দিতে হবে, তার জন্য আইন আছে, থানা পুলিশ আছে, আইন কেন নিজেদের হাতে তুলে নিতে হবে? তেমনি অপরাধীকে শাস্তি দিতে হবে; কিন্তু তার পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন তো নয়ই, তার গোত্রস্বজনদের দায়ী করে তাদের ওপর আক্রমণ কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। মেনে নেয়া যায় না হত্যার প্রতিবাদে মিছিলে আক্রমণ করা। মনে হয় মানুষের বিবেক যেন আজ অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে, মানুষের মনুষত্ব লোপ পেয়ে পশুত্ব গ্রাস করে ফেলেছে। এখন ভাবতে হবে পাহাড়ে এতো বেশি ঘন ঘন হানাহানি কি স্বাভাবিক, নাকি কোনো দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে পাহাড়ি জনপদ?

মাস না পেরুতেই আমরা ভুলে গেছি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমাদের ইস্পাত কঠিন ঐক্যের কথা। ভুলে গেছি নিহত ছাত্র-জনতার কথা, ভুলে গেছি হাসপাতালের বেডে আহতদের যন্ত্রনাকাতর মুখগুলোর কথা। যে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য এতো ত্যাগ, আমরা কি পারলাম নিজেদের সংস্কার করে তার মূল্য দিতে? ৭১ সালের সেই সকল শহীদদেরও মনে রাখিনি। তাদের অবদানকে মূল্য দিতে পারিনি। তাই সত্যিকার স্বাধীনতার স্বাদও পাইনি। এতো বছর যারা স্বৈরাচারের জেল-জুলুম, অত্যাচার নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মামলা-হামলা গুম-খুনের ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন। আজ তাদের প্রথম কাজ ছিল স্বৈরাচারের দোসর খুনিদের-খুনের ইন্ধনদাতা, অর্থ লুণ্ঠনকারী-পাচারকারীদের খুঁজে বের করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া। এখানেও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ব্যর্থ কারণ বড় বড় রাঘববোয়াল সবাই পালিয়েছে, আর আমরা অতি তুচ্ছবিষয় নিয়ে নিজেরা একে অপরের সাথে হানাহানিতে, জিঘাংসায় মেতে উঠেছি।

পাহাড় আর সমতল আলাদা করে ভাবার এখন আর সময় নেই। এতোদিনের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী-উপজাতি আজ আদিবাসী স্বীকৃতির দাবি তুলে দেশকে অস্থিতিশীল করারও সময় নয়? সময় নয়, এতো বছর পর পাহাড়ি উপজাতি আর সেটেলার বলে বিভাজন তৈরি করা। পার্বত্যাঞ্চল এখন অসংখ্য দেশি-বিদেশি মদদপুষ্ট সশস্ত্র সন্ত্রাসীতে পূর্ণ, যাদের চাঁদাবাজিতে পাহাড়ি-বাঙালি অতিষ্ঠ কেউই শান্তিতে নেই। সেই পাহাড় থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে দেশের সীমান্ত অরক্ষিত রাখা যায় না। সম্ভব নয় পুনর্বাসিত বাঙালিদের উচ্ছেদ করা। সবাই একত্রে বসে পদ্ধতি বের করতে হবে, কীভাবে উপজাতি-বাঙালি শান্তিপুণ্য’ সহাবস্থান করতে পারে। আমাদের সেনাবাহিনী-বিজিবি বিভিন্ন শান্তি-শৃঙ্খলা বাহিনী শখ করে পাহাড়ে থাকেন না। দেশের অখণ্ডতাণ্ডসীমান্ত, পার্ব্যতঞ্চলের মানুষের জানমাল রক্ষায় মৃত্যুকে হাতে নিয়ে দুর্গম পাহাড়ি ক্যাম্পে তারা দায়িত্ব পালন করেন। সশস্ত্র সন্ত্রাসী নির্মূল করতে পারলে অথবা তারা অস্ত্রত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসলে, পুলিশ বাহিনী যদি শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারে, সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর সেনা তদারকির কোনো প্রয়োজন নেই। তারা তাদের ব্যারাকেই ফিরে যাবে।

স্মরণ করা প্রয়োজন সেনাবাহিনী, সেনাক্যাম্প, পুনর্বাসিত বাংলাদেশি বাঙালিদের কারণে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে, দৃশ্যমান অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে, পর্যটন শিল্পের উন্নতিতে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে ওঠায় শিক্ষিতের হার বেড়েছে, জীবনমানের উন্নতি হয়েছে। যদিও বাঙালিরা এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে। তাই সোশ্যাল মিডিয়াসহ সবখানে উপজাতিদের প্রচার-প্রচারণা প্রচুর থাকলেও পুনর্বাসিত বাঙালিদের কষ্টের কথা অবহেলার কথা দেখতে পাওয়া যায় না। ইদানিং আদিবাসী স্বীকৃতি পেতে বেশ কিছু ইস্যু তুলে আনা হচ্ছে। দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় নিবেদিতপ্রাণ আমাদের দেশ-প্রেমিক, সেনাবাহিনীকে ভিলেন বানানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আদিবাসী স্বীকৃতি পেলে উপজাতিদের বেশ কিছু দাবি তোলার সুযোগ আছে, সেগুলো অজানা কারো নয়। কিন্তু দেশের কিছু সুশীলদের উসকানি খুব বেশি সবল, যাদের কাজ কেবলই ধর্ম কিংবা দেশের অখণ্ডতার বিরোধী প্রচারণায় কোরাস গাইতে শুরু করা। যতটুকু জানা যায়, আদিবাসীদের জন্য জাতিসংঘের আদিবাসী অধিকারের ঘোষণা করা হয়েছে। এই স্বল্প পরিসরে তা তুলে ধরা সম্ভব নয়। বিশ্বের ১৪৫টি দেশ পক্ষে থাকলেও অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে অবস্থান নেয়। বাংলাদেশ জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রের অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ভোট দানে বিরত থাকে। সেই ঘোষণাপত্রের ৪৬টি অনুচ্ছেদ থেকে দু’চারটা বিষয় উল্লেখ করছি, যা মানলে দেশের অখণ্ডতা বিপন্ন হবে, তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।

১) আদিবাসী এলাকায় তাদের একক অধিকার থাকবে। ২) সেখানে তাদের বাইরের পুলিশ থাকবে না। ৩) সেনাবাহিনী প্রবেশ করতে পারবে না, থাকবে সকল প্রকার সামরিক কার্যক্রম বন্ধের অধিকার। ৪) বাইরের কেউ জমি কিনতে পারবে না। এরই মধ্যে হাতছাড়া হওয়া জমি উদ্ধার করে ফেরত দিতে হবে। এখানে বড় প্রশ্ন বিভিন্ন দেশ থেকে এসে পাহাড়ে বসবাসরত আমাদের উপজাতি ভায়েরা জাতিসংঘের আদিবাসী অধিকারের ঘোষণাপত্র অনুযায়ী আদিবাসী হতে পারে কি? আছে কি প্রয়োজন এসব নিয়ে বিশ্বাস অবিশ্বাসের ডালপালা গজানোর?

সবার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, আইনের শাষণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সম্ভব একটা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া। ইতিহাস বলে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে একটা ক্ষোভ ছিল। দেশ স্বাধীনের পর আমাদের অতি উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদী নেতার সবাইকে বাঙালি হওয়ার ঘোষণায় তা আগুনে ঘৃতাহুতী ঘটে। ’৭৫ পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদ বাংলাদেশি ঘোষণায় ক্ষোভ প্রশমিত হলেও সমতল থেকে নদীভাঙনে গৃহহীন, ভূমিহীন বাংলা ভাষাভাষিদের পাহাড়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করলে পাহাড় আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠে। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা আগুনে ঘড়বাড়ি পুড়িয়ে গুলি করে অসংখ্য পুনর্বাসিত বাঙালিদের নৃশংসভাবে হত্যা করে। উপজাতি-বাঙালি সংঘাতে অনেক উপজাতি আশ্র্য় নেয় ভারতে। ভারত সুযোগ বুঝে তাদের সকল প্রকার সহযোগিতা দিয়ে শক্তিশালী করে গড়ে তুলে সশস্ত্র শান্তি বাহিনী। সশস্র সংঘাত সংঘর্ষে হতাহতের মাত্রা বাড়তে থাকে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার পট-পরিবতনে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় বসতে না বসতে প্রায় দুই দশকের সংঘাতময় অবস্থায় সশস্ত্র উপজাতি শান্তি বাহিনীর সাথে আওয়ামী লীগের হাসিনা সরকারের পার্ব’ত্য শান্তি চুক্তি হয়। পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ গঠিত হয় ১৯৯৮ সালে এই পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান হন পাহাড়ি উপজাতিদের পক্ষে স্বাক্ষরকারী জ্যোতিরিন্দ বোধিপ্রিয় লারমা। এই চুক্তি ছিল তৎকালীন ভারত সরকার এবং বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের হাসিনা সরকারের যৌথ প্রযোজনায় একমাত্র ‘আমি’ শান্তির জন্য একটা কিছু করেছি প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য মঞ্চায়িত নাটিকা। এখানে উপজাতি-বাঙালি সহাবস্থানকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়নি। এই চুক্তি বৈষম্যমূলক চুক্তি যেখানে বাংলাদেশের অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে, পুনর্বাসিত বাংলাদেশি বাঙালিদের অবহেলা করা হয়েছে। সব চাইতে আশ্চর্যজনক ব্যাপার চুক্তির সাথে সাথে শান্তি বাহিনী থেকে বেড়িয়ে ইউপিডিএফ নামে শান্তি চুক্তিবিরোধী আরেকটি সশস্ত্র সংঘঠন আত্মপ্রকাশ করে শান্তি চুক্তিকে তামাশায় পরিণত করে।

এই চুক্তির শর্ত পালন করা সম্ভব নয় জানতো সবাই আর তাই চুক্তির পর দীর্ঘ দুই দশকের তাদের শাসনকালে চুক্তির কোনো অগ্রগতি হয়নি। সারা পাহাড়জুড়ে আছে দেশি-বিদেশি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাদের দমনে একমাত্র সেনাবাহিনী প্রয়োজন। সেই সেনাবাহিনী পাহাড়ে থাকতে পারবে না কেন? সবার সমান অধিকারের বাংলাদেশে সবাই বাংলাদেশি সবার অধিকার দেশের সব জায়গায় থাকবার। পাহাড়ী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বাংলাদেশিরা যদি সারা বাংলাদেশ ব্যাপী চাকরি-ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে, গাড়ি-বাড়ি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে, অন্য জেলার মানুষ পাহাড়ে থাকতে পারবে না, জমি ক্রয় করতে পারবে না কেন? পাহাড়ে গীর্জা, চার্চ পেগোডা হতে পারবে; কিন্তু মুসলিম হতে পারবে না, মসজিদ দিতে পারবে না আর তাই অবাধ্য হওয়ায় ওমর ফারুককে গুলি করে মারতে হবে? যতটা জানি, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে কোনো বাঙালিদের চাকরি হয় না, যদি ঘটনা সত্য হয়, তবে কেন এই বৈষম্য? তাই অতি দ্রুত এই বৈষম্যমূলক চুক্তি বাতিল করা প্রয়োজন।

তৃতীয় কোনো পক্ষকে ফায়দা লোটার সুযোগ না দিয়ে, কারো আত্মতুষ্টির জন্য নয়, সবার সমান অধিকার দিয়ে স্থায়ীভাবে ধমণ্ডবর্ণ, নির্বিশেষে শান্তি-সম্প্রীতিতে পাহাড়ি-বাঙালি বসবাসের জন্য যুগপোযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। পাহাড়ি সকল উপজাতি নৃগোষ্ঠী-বাঙালি সংখ্যাগত পার্থক্য না করে, সমান সংখ্যক প্রতিনিধি দিয়ে জেলা পরিষদ গঠন করা এবং পাহাড়ে বসবাসরত পাহাড়ি সকল উপজাতি-বাঙালিদের দিয়ে পুলিশ প্রশাসন পরিচালনা করে শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা যায় কি না, পরীক্ষা করা যেতে পারে।

শুধু সরকারই সব করে দেবে তা ভাবা ঠিক নয়। শান্তির জন্য বৈষম্যদূর করতে প্রয়োজন আমাদের সকলের মানসিকতার পরিবর্তন, প্রয়োজন নিজেকে নিজের আমুল সংস্কার।

আমাদের সবাইকে বাংলাদেশি ভাবতে হবে। পাহাড়ি-বাঙালি ভেদাভেদ বন্ধ করতে হবে। একে-অপরের প্রতিবেশীকে ভালোবাসতে হবে সম্মান করতে হবে। আমরা কেউ যেন এমন কোনো ভুল না করি যাতে অস্থিতিশীল হয় আমার প্রতিবেশীর পরিবার, কোনো শহর। মনে রাখতে হবে প্রতিবেশীর ঘরের আগুনে যেমন পুড়তে পারে আমার ঘড় আমার স্বপ্ন তেমনি জনারণ্যের লাগানো আগুনে পুড়তে পারে দেবালয়। মনে রাখতে হবে, আমার যে কোনো বিপদে আমারই প্রতিবেশী প্রথম এসে পাশে দাঁড়াবে অন্য কেউ নয়। কারো ষড়যন্ত্রের ফাঁদে না, পড়ে আসুন আগে সংস্কার করি নিজেকে, নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবাই একসাথে এগিয়ে যাই সম্মুখে দৃঢ়প্রত্যয়ে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত