১৯৭৫ সালের ৩১ মার্চ ও ৪ জুন তারিখের দুই বৈঠকে ইসরায়েল দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ অ্যাপার্থাইড (বর্ণভেদ) সরকারের কাছে জেরিকো ক্ষেপণাস্ত্র এবং সেসব ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহার উপযেগী পারমাণবিক সমরাস্ত্র বিক্রির পাকাপাকি প্রস্তাব দিয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্য আর কোনো দেশ শক্তিশালী হোক সেটা ইসরায়েলের নীলনকশার বিরোধী। ইরাকের সাদ্দাম হোসেন তার দেশকে শিল্প-বাণিজ্য আর অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ করেছিলেন। তার অধীনে ইরাক শক্তিশালী দেশ হয়ে উঠেছিল। বাগদাদের উপকণ্ঠে অসিরাকে সাদ্দাম একটা পারমাণবিক গবেণাকেন্দ্র স্থাাপন করেছিলেন। তেলআভিভের পকেট সাম্রাজ্যবাদীদের সেটা সহ্য হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ধার করা জঙ্গি বিমান দিয়ে হামলা করে ইসরায়েলিরা ১৯৮১ সালে অসিরাক কেন্দ্রটি ধ্বংস করে দেয়। প্রকৃত ব্যাপার এই যে, ইসরায়েল সাদ্দাম হোসেনকে মধ্যপ্রাচ্যে তার আধিপত্যের প্রতি চ্যালেঞ্জ মনে করেছিল। এ উদ্দেশ্য সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সরকারকে উসকে দিয়ে ইসরায়েলিরা ২০০৩ সালের ২০ মার্চ ইরাক আক্রমণ করিয়েছিল। বুশের পদলেহী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ৮০ শতাংশ ব্রিটিশ নাগরিকের আপত্তি সত্ত্বেও সে আক্রমণে শরিক হন। ভুয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বুশ ও ব্লেয়ার দাবি করেছিলেন, সাদাম হোসেন বিপুল পরিমাণ গণবিধ্বংসী জৈবিক ও রাসায়নিক অস্ত্র মজুদ করেছেন। টনি ব্লেয়ার দাবি করেছিলেন, সে সব অস্ত্র নির্দেশ দানের ৪৫ মিনিটের মধ্যে সাইপ্রাসে ব্রিটিশ ঘাঁটির বিরুদ্ধে ব্যবহারের উপযোগী অবস্থায় আছে। জাতিসংঘের অস্ত্র তদন্তকারী দলের নেতা ড. বি তদন্ত করে জানিয়েছিলেন তারা ইরাকে কোন গণবিধ্বংসী অস্ত্র পাননি। আমাদের আরো তদন্তের জন্য সময় দিন। সে অনুরোধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের নিকট গ্রহণযোগ্য ছিল না। অতএব ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও তাতে রাজি হননি। মার্কিন ও ব্রিটিশরা ইরাক আক্রমণ করে দখল করেছে ফলে সে যুদ্ধের পরিণতিতে ১২ থেকে ১৩ লক্ষ লোক মারা গেছে। বেশ ক’বছর পর এখনও ইরাকে প্রায় প্রতিদিনই এক থেকে একশটা করে মানুষ নিহত বা আহত হচ্ছে। ইউরেনিয়াম বোমা ব্যবহারের ফলে নবজাত ইরাকি শিশুরা বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মাচ্ছে। কিন্তু সাদ্দামের গণবিধ্বংসী অস্ত্র সেসব নির্মাণের কোনো নীল নকশাও পাওয়া যায়নি ইরাকে। বরং বিভিন্ন সূত্রে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, সাদ্দামের গণবিধ্বংসী অস্ত্র সংক্রান্ত মিথ্যা ‘গোয়েন্দা তথ্যগুলো’ ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসদ মার্কিন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল। দু’বছর আগে ইসরায়েলি জঙ্গি বিমান উত্তর সিরিয়ার একটি স্থাপনা বোমা ফেলে ধ্বংস করে। ইসরায়েলের দাবি ছিল, সিরিয়া সেখানে একটি পারমাণবিক কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করেছিল। ইরানের বিরুদ্ধে তেলআভিভ আর তার পৃষ্ঠপোষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি ধমকির অবধি নেই। ইরান পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। তার বক্তব্য বিদ্যুৎ এবং চিকিৎসা শাস্ত্রে ব্যবহারের জন্য আইসে টোপ উৎপাদন তার লক্ষ্য। কিন্তু তেলআভিভ আর ওয়াশিংটন বার বার বলছে, আসলে ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে চায়। ক্রমেই সে দাবি করছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। অন্যান্য ইহুদি-প্রভাবিত দেশকে দিয়েও সে দাবি করাচ্ছে তেল আভিভ। মার্কিন এবং আন্তর্জাতিক গবেষকরা বলেছেন, বোমা তৈরি যদি তেহরানের উদ্দেশ্য হয় তাহলেও বোমা তৈরির প্রকৌশল আয়ত্ত করতে আর প্রয়োজনীয় উপযুক্ত জ্বালানি উৎপাদন করতে তার আরো অন্তত পাঁচ বছর সময় লাগবে। কিন্তু ইসরায়েল বিশ্বব্যাপী প্রচার চালায় এই বলে যে, আসছে এক-দেড় বছরের মধ্যেই তেহরান পারমাণবিক বোমার মালিক হবে। ইসরায়েল বার বার হুমকি দিচ্ছে বোমা ফেলে সে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করবে। সে জন্য অবশ্যই তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিমান ও কংক্রিট বিধ্বংসী বোমা ধার করতে হবে। সেটা মধ্যপ্রাচ্য ও বাকি বিশ্বে ওয়াশিংটনের আরব ও মুসলিম মিত্রদের বিরক্তির কারণ ঘটাবে। তা ছাড়া ইরান অবশ্যই প্রতিশোধ হিসাবে ইসরায়েল ও মধ্যপ্রাচ্য মার্কিন ঘাঁটিগুলোর ওপর রকেটের আক্রমণ চালাবে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রেকে মধ্যপ্রাচ্য আরো একটা বড় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হবে। ওবামা প্রশাসন সেটা চায়নি। তাই ইসরায়েলকে শান্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দফায় দফায় অর্থনৈতিক ও অন্যান্য অবরোধ আরোপ করেছে। সাদ্দাম উৎখাত ও গত হয়েছেন। ইসরায়েল তার আধিপত্যবাদের পরবর্তী কাঁটা ইরানকে সরিয়ে দিতে মারিয়া হয়ে উঠেছে। তেহরান লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীকে অর্থ সাহায্য দেয়। এ গোষ্ঠীকে ধ্বংস করার আশায় ২০০৬ সালের জুন মাসে ইসরায়েলিরা সর্বশক্তি দিয়ে লেবানন আক্রমণ করে। বিশ্ব সমাজের আকুল আবেদন সত্ত্বেও বুশ ও ব্লেয়ার নিরাপত্তা পরিষদকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস করতে বাধা দেয়। চার সপ্তাহ পরে হিজবুল্লাহ রকেটের আক্রমণে ইসরায়েলে যখন গণআতঙ্ক দেখা দেয় তেলাআভিভ মাত্র তখনই যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি হয়েছিল। প্যালেস্টাইনে ২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল ইসলামপন্থি হামাস দল। তেহরান হামসকেও অর্থ সাহায্য দেয় হামাস ফলে অবরুদ্ধ গাজায় ক্ষমতাসীন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলিরা গাজার ওপর বিমান, স্থল, নৌ আক্রমণ চালায়। তিন সপ্তাহের সে আক্রমণে গাজার সব স্থাপনা বিধ্বস্ত হয়, ১ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি মারা যায়। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, এ দু’টি যুদ্ধ প্রকৃতপক্ষে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রক্সি-যুদ্ধ ছিল। ইরান এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্য সব দেশ বার বার ওয়াশিংটনকে মনে করিয়ে দিয়েছে যে, তার নীতি অন্যায় ও পক্ষপাতদুষ্ট। কেননা, মার্কিন পোস্য ও দোসর ইসরায়েল বহু পারমাণবিক বোমা তৈরি কবে মজুদ রেখেছে। ওয়াশিংটন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, অথচ কথায় কথায় ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক আক্রমণের হুমকি দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা আরো উল্লেখ করেছেন, উত্তর কোরিয়া ছাড়া আরো দুটো দেশ ভারত ও পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক। ওয়াশিংটন গোড়ায় আলোচনা করলেও এখন ব্যাপারটা হজম করে নিয়েছে। এই উভয় দেশের সাথেই এখন যুক্তরাষ্ট্রের গলায় গলায় হৃদ্যতা। তা ছাড়া দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সাথে পারমাণবিক সহযোগিতার চুক্তিও করেছে। ইসরায়েল, ভারত ও পাকিস্তান ওয়াশিংটনের মুরব্বিয়ানায় গৃহীত পারমাণবিক অস্ত্রের প্রসার রোধ (এনপিটি) চুক্তিতে সই করেনি। ইরান সই করেছিল। তার দাবি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ইরান এখনো কোনো অপরাধ করেনি, এমনকি এনপিটি চুক্তিও সে লঙ্ঘন করেনি। তবু ভবিষ্যতে ইরান বোমা তৈরি করতেও পারে এই খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে ওয়াশিংটন ইরানকে শাস্তি দিচ্ছে আর তাকে সর্বক্ষণ উসকানি দিয়ে চলেছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যকে একটা পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত এলাকা ঘোষণার জন্য সে অঞ্চলে মতবাদ ক্রমেই জোরালো হয়ে উঠেছে। কিন্তু ইসরায়েল ও ওয়াশিংটন তাতে রাজি হচ্ছে না। ইসরাইলের ভান্ডারে যে পারমাণবিক বোমা আছে সে কথা তেলআভিভ স্বীকারও করছে না, অস্বীকারও করছে না। কিন্তু অন্য কোনো দেশের এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিছু প্রমাণও বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৮৬ সালে মরদেখাই ভানুন নামক একজন ইসরায়েলি নাগরিক এবং দিমোনায় ইসরায়েলের পারমাণবিক কেন্দ্রের প্রকৌশলী লন্ডনে আসেন। সানডে টাইমস পত্রিকায় দীর্ঘ সাক্ষাৎকার এবং বেশ কিছু আলোকচিত্র দিয়ে তিনি প্রমাণ করেন যে, ইসরায়েল পারমাণবিক বোমা তৈরি করেছে। এক ‘মধু-ফাঁদ’ তৈরি করে ইসরায়েল গোয়েন্দা সংস্থা। মোসদ ভানুনকে ফাঁসিয়ে ফেলে। মোসদের এক সুন্দর চর লন্ডনে ভানুনের সাথে প্রেম-প্রেম খেলা চালায় এবং তাকে রোম যেতে রাজি করায়। মোসদের চররা সেখান থেকে তাকে ছিনতাই করে ইসরায়েলে নিয়ে যায়। ভানুন পুরো ১৮ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করেছেন। বেশিরভাগ সময়ই তাকে ইির্সন সেলে রাখা হয়েছিল। ছাড়া পাওয়ার পরও তাকে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে, কোনো বিদেশির সাথে তার কথা বলা নিষেধ। কিন্তু ভানুন একাধিকবার সে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছেন এবং বিভিন্ন মেয়াদে তাকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে ইসরায়েলের পারমাণবিক বোমার সংবাদ ফাঁস হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অন্যান্য পৃষ্ঠপোষক ও সমর্থক বলে আসছে যে, ইসরায়েলের বোমা নিয়ে তাদের কোনো উদ্বেগ নেই, কেননা ইসরায়েল একটা দায়িত্বশীল গণতান্ত্রিক দেশ, তার বোমা অন্য কারো হাতে যাওয়ার ভয় নেই। অন্যদিকে ইরান সম্বন্ধে তাদের বক্তব্য, তেহরানের কাছ থেকে হিজবুল্লাহ, হামাস কিংবা অন্য কোনো সন্ত্রাসীগোষ্ঠী পারমাণবিক অস্ত্র সংগ্রহ করতে পারে। সাশা পোলাকভ সুরানস্কি নামে জনৈক মার্কিন শিক্ষাব্রতী অ্যাপার্তাইড সরকারের আমলে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিষয় একখানি বই লিখেন। সে বই সম্বন্ধে গবেষণা করতে গিয়ে তিনি বলতে গেলে ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ’ বের করে ফেলেছেন।
সাশা পোলাকড সুরানস্কি বইয়ের মালমসলা সংগ্রহ করার জন্য অ্যাপার্থাইড-উত্তর বর্তমান দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ সরকারের কাছ থেকে সত্তরের দশকের গোপণ নতিপত্র পাওয়ার আবেদন করেন। ইসরায়েল সরকারের জোরালো অনুরোধ আগ্রাহ্য করে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার সেসব নথিপত্র সুরানস্কিকে দেয়। সুরানস্কি তার সদ্য প্রকাশিত বই ‘দ্য আনস্পোকেন অ্যালায়েন্সে’ (অকত্রিত মৈত্রী) লিখেছেন যে, ১৯৭৫ সালের ৩১ মার্চ উভয় দেশের কর্মকর্তাদের বৈঠক হয় এবং সে বৈঠকে ইসরায়েল দক্ষিণ আফ্রিকাকে ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক বোমা বিক্রি করতে রাজি হয়। সে বছরেই ৪ জুন তারিখে ইসরায়েলের তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিমন পেরেজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পি ডবি-উ বোথ সুইগারল্যান্ডের জুরিখে এক বৈঠকে মিলিত হন। জেরিকা ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক সমরাস্ত্র বিক্রিসংক্রান্ত চুক্তিতে তারা উভয়েই স্বাক্ষর করেন। দলিলের শুরুতেই লিখিত হয় যে, সেটা ‘সর্বোচ্চ গোপনীয় দলিল’ এবং সে দলিল যে আদৌ আছে সেটাও অস্বীকার করতে হবে।
সুরানস্কির বইতে অন্তর্ভুক্ত দলিলগুলা থেকে চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হয়, শিমন পেরেজ ১৯৭৫ সালেই লিখিতভাবে স্বীকার করেছিলেন, ইসরায়েল পারমাণবিক বোমা তৈরি করছে, তার ভাণ্ডারে সে বোমা মজুদ আছে এবং পছন্দসই খদ্দের পেলে পারমাণবিক বোমা বিক্রি করতে ইসরায়েলের আপত্তি নেই। ইসরায়েলের বোমা অন্য কারো হাতে পড়ার ভয় নেই বলে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য কোনো দেশ যে দাবি করে, সে দাবিও এখন অসার প্রতিপন্ন হল। মূলকথা হচ্ছে ইসরায়েল অনস্বীকার্যভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী। নিজে স্বীকার না করলেও বাকি বিশ্ব সেটা জানে। সেই অস্ত্রের জোরে সে মধ্যপ্রাচ্য আঞ্চলিক পরাশক্তি হয়ে থাকতে চায়। এ অঞ্চলের অন্য কোনো দেশ শক্তিশালী হচ্ছে, বিশেষ করে পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে চাইছে সেটা ইসরায়েলের কাছে অসহ্য। নিজের এবং পৃষ্ঠপোষকদের শক্তি ব্যবহার করে সে দেশটিকে বিধ্বস্ত করা ইসরায়েলের কৌশল। ইরানের বিরুদ্ধে তেলআভিভের প্রকাশ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন হুমকির এই হচ্ছে আসল ব্যাখ্যা। এদিকে বিশ্বের যুদ্ধ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইসরায়েলের পারমাণবিক বোমার প্রচুর মজুত আছে এবং অদূর ভবিষ্যতে এগুলো ব্যবহৃত হবে এবং এতে বিনষ্ট হবে বিশ্বশান্তি। এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। এদিকে মাত্র ক’বছর আগে সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে সারা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের প্রতিবাদকে উপেক্ষা করে জেরুজালেমে স্থানান্তর করা হলো আমেরিকার দূতাবাস। প্যালেস্টাইনের সাধারণ মানুষ এর প্রতিবাদে মুখর হলো। ইসরাইলী বর্বর সেনাদের গুলীতে তখন ৭০ জনের মত প্যালেস্টাইনী নিহত হন-আহত হন ৫০০ এর বেশি। এ ৭০ জন প্যালেস্টাইনীদের হত্যার ব্যাপারে জাতিসংঘ কমিটি গঠন করলেও শেষ পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি তখন। আবার রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে জেরুজালেম শহর অবৈধভাবে ইহুদিদের দখলে নেয়া প্যালেস্টাইনী ভূমি। গেল ক’দিন থেকে বর্বর ইহুদিদের নির্বিচার হামলায় শিশু নারীসহ অসংখ্য প্যালেস্টাইনী মুসলমান নিহত ও আহত হচ্ছেন, তাদের বাড়িঘর ঘুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে- পরিতাপের বিষয় সারা বিশ্ব যেন নীরব ভূমিকা পালন করছে। জাতিসংঘ নামক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও কোনো বলিষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না প্যালেস্টাইনীদের রক্ষার ব্যাপারে সর্বশেষ তথ্য জানা যায়, ইসরাইলের লাগামহীন আক্রমণে গেল ৮ মাসে ৪০ হাজারের মতো প্যালেস্টাইন নিহত হয়েছেন যাদের বেশিরভাগ নারী শিশুও বেসামরিক নাগরিক। কিন্তু বিশ্ব নীরব।