গণতন্ত্র মানুষকে বেশ কিছু অধিকার দিলেও তার চেয়ে বেশি আরোপ করে দায়দায়িত্ব। নতুবা গণতন্ত্র নীতিগতভাবে কার্যকর হতে পারে না। সে কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে নাগরিকদের অধিকার ও দায়দায়িত্বের বিষয়গুলো সাংবিধানিকভাবে লিপিবদ্ধ করা থাকে।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে হলেও এ কথাটি সত্য যে আমাদের স্বাধীনতার বিগত ৫৩ বছরে দেশের রাজনীতির চেয়ে ব্যক্তিগতভাবে কোনো কোনো রাজনীতিকের আধিপত্য ছিল অনেক বেশি। তাদের নির্দেশ কিংবা মুখের কথা ছিল সংবিধানের ঊর্ধ্বে। তাদের অনেকের ইচ্ছা অনুযায়ী সংবিধানকে বারবার সংশোধন করতে দেখা গেছে। দলীয় স্বার্থে নিজেদের ইচ্ছামাফিক সংবিধানকে বারবার পরিবর্তনের কারণে আমাদের সংবিধানের বেশ কিছু মৌলিক বিষয়ে এখন দ্বন্দ্ব কিংবা সংঘাত দেখা দিয়েছে। সংবিধান প্রণেতা কিংবা বিশেষজ্ঞদের মতো এই সংবিধান এখন অনেকটাই অচল হয়ে পড়েছে।
তাই এর সংস্কার কিংবা পুনর্লিখন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এ বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী অভ্যুত্থানের পর অন্য ‘মহাসংস্কারের’ দাবির মুখে তাই আমাদের সংবিধানের বিষয়টিও প্রাধান্য পেতে শুরু করে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, বাংলাদেশের কোনো মানুষ স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে সেভাবে কখনোই তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করতে পারেনি। ফলে পদে পদে তাদের মানবাধিকারের বিষয়টিও লঙ্ঘিত হয়েছে।
যে মানুষ কখনো তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ কিংবা চর্চা করতে পারেনি, তারা কখনোই অন্যের ব্যাপারে সহনশীল হতে পারে না। ধৈর্য ধারণ করতে পারে না যৌক্তিকভাবে। এই বিষয়টি এখন শুধু আমাদের জনগণের মধ্যেই নয়, বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও মাঝেমধ্যে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ কথা অনস্বীকার্য যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মহাঅভ্যুত্থানের ফসল। তাদের ডেকে আনা হয়েছে দেশের সর্বস্তরে এক মহাসংস্কারের প্রত্যাশায়।
এই দুর্নীতি, অনাচার, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতামূলক প্রশাসনযন্ত্রকে সংস্কার এবং রাষ্ট্রকে যথাসম্ভব মেরামত করার জন্য। এতে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা এবং বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছে। কারণ যে ধরনের সর্বাত্মক ও মেরামতের কথা আগাগোড়া উল্লেখ করা হয়েছে, তা কোনো একটি নির্দিষ্ট দলের পক্ষে বিভিন্ন দলীয় মতবিরোধের কারণে দুঃসাধ্য হয়ে পড়তে পারে। এতে প্রশাসনে কিংবা রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে বিভিন্ন আচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, এই কাজটি সম্মিলিতভাবে করতে হবে।
দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞ, স্বনামধন্য পেশাজীবী মহল, শিক্ষক সম্প্রদায় এবং সর্বোপরি রাজনীতিকরা মিলে এই বিশাল দায়িত্বটি পালন করতে হবে। এই মহান দায়িত্বটি শুধু রাজনৈতিক মহল থেকে সুসম্পন্ন করা সম্ভব নাও হতে পারে। এরই মধ্যে যে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে, সেগুলো সুচারুভাবে সম্পন্ন করতেও কাঙ্ক্ষিত সময় তো লেগেই যাবে। এরপর সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ কিংবা মতবিনিময়ের বিষয়টি তো রয়েছেই।
তারপর সংবিধান, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন নিয়ে তো বেশ কিছুটা সময় মতবিনিময় করতেই হবে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, বিভিন্ন সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়নের আগেই কোনো কোনো মহল থেকে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে নির্বাচনের রোডম্যাপ কিংবা সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করার ব্যাপারে, যা কারো পক্ষেই এই মুহূর্তে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা দুঃসাধ্য। যারা বারবার এসব প্রশ্ন উত্থাপন করছেন, তাদের এই বিশাল কর্মযজ্ঞের বিষয়টি মাথায় রাখা সমীচীন হবে বলে মনে করি। উল্লেখ্য যে এর মধ্যে গণমাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান বলেছেন, সম্ভাব্য সংস্কার ও নীতি প্রণয়নের পর প্রায় দেড় বছর সময় লেগে যেতে পারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. ইউনূসও সেনাপ্রধানের বক্তব্যের রেশ ধরে কিছু কথা বলেছেন, যা এরই মধ্যে মোটামুটি সবার জানা হয়ে গেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদান, কর্মব্যস্ততা এবং বিশেষ করে প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থানের ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ইসলামিক ব্যাংক এবং বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সফল আলোচনার প্রশংসা করেছেন অনেকেই। এতে বিশ্বব্যাপী ড. ইউনূসের গ্রহণযোগ্যতা কিংবা জনপ্রিয়তা সম্পর্কে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি অত্যন্ত ইতিবাচক ধারণা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ড. ইউনূসের দ্বিপক্ষীয় আলোচনাটি শুধু বাংলাদেশিদের মধ্যেই নয়, বিশ্বব্যাপী একটি বিশেষ আলোচনার সূত্রপাত করেছে। কারণ এ ধরনের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক জাতিসংঘের অধিবেশন চলাকালে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সাধারণত করতে দেখা যায় না। ড. ইউনূসের আলোচনার ফলকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম তার ‘ব্যক্তিগত ম্যাজিক’ বলে উল্লেখ করেছে। কারণ নিউইয়র্কে অবস্থানকালে অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি প্রায় সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন, যা বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং বিভিন্ন সেক্টরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এ প্রতিশ্রুতি অতি অল্প সময়ের মধ্যে ১৪ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের এ মুহূর্তের প্রয়োজন মেটানো, বিশেষ করে ব্যাংকিং ও বৃহত্তরভাবে অর্থনীতিকে পুনর্বিন্যাস করার জন্য অত্যন্ত আবশ্যক।
তারপর রয়েছে অন্যান্য সেক্টরের অর্থাৎ সংস্কারের প্রতিক্রিয়ায় থাকা প্রায় আধাডজন কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়নের খরচ মেটানো। এই বিশাল পরিমাণ অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ করা হয়তো একমাত্র ড. ইউনূসের বদৌলতেই সম্ভব হতে পারে। সে ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্বের বিভিন্ন পরাশক্তির দেশগুলো। তারা ড. ইউনূসকে সার্বিক সাহায্য ও সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তা ছাড়া তার প্রতি রয়েছে, তাদের সবার আশ্বাস ও সহমর্মিতা। যারা মনে করেছিলেন, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী এত বড় একটি বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা বাংলাদেশের পক্ষে কি মোটেও সম্ভব? তারাই এখন ড. ইউনূসের সম্ভাব্য সাফল্যের কথা ভেবে দ্রুত তাদের মত পাল্টাচ্ছেন।
বর্তমান সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সবার একটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন, সেটি হচ্ছে, বাংলাদেশকে যে ঋণ বা সাহায্য-সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে, তারও একটি বিশেষ শর্ত রয়েছে।
আর সেটি হলো, গণতন্ত্রে উত্তরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনের জন্যই বিশেষ বিবেচনায় এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। একদিকে ড. ইউনূস, অন্যদিকে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার। এর মাঝখানে আর কোনো বিবেচনার প্রশ্ন নেই।
এই সহযোগিতার আশ্বাস বিশ্বব্যাপী সাবেক প্রধানমন্ত্রী কোথাও পাননি। তা ছাড়া পরবর্তী পর্যায়ে কোনো নির্বাচিত সরকারও সবার কাছ থেকে এমন আশ্বাস পাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। এখানে উল্লেখ্য যে বিদায়ি সরকার ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ রেখে গেছে। তা ছাড়া তাদের আমলে গত দেড় দশকে দেশ থেকে ১৭ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়ে গেছে। ড. ইউনূস সেই পাচারকৃত অর্থের উল্লেখযোগ্য অংশ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে অত্যন্ত জরুরিভাবে আলোচনা করেছেন। সে জন্য হয়তো কিছু সময় লাগতে পারে, তবে সেই অর্থ উদ্ধারের ব্যাপারে ড. ইউনূস আশাবাদী। এর পাশাপাশি তিনি চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন শিল্পসমৃদ্ধ দেশ থেকে বাংলাদেশে দ্রুত বিনিয়োগ আসার ব্যাপারে অত্যন্ত তৎপর রয়েছেন। এ অবস্থার মধ্যে যারা চান অতি দ্রুত নির্বাচন দিয়ে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা থেকে বিদায় নিক, তারা আসলে কীসের বশবর্তী হয়ে সেসব কথা বলেন, সেটি তারাই হয়তো ভালো জানেন। শেখ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে হয়তো সম্ভাব্য সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হবে, তবে এই অন্তর্বর্তী সময়ে ড. ইউনূসের বিকল্প অন্য কাউকে কি ভাবা যায়? তাহলে বাংলাদেশে এখন হয়তো এক অভূতপূর্ব অরাজকতা সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়ত। ব্যাংকিং সেক্টর থেকে বাণিজ্য, পুলিশ প্রশাসন থেকে রাষ্ট্রযন্ত্র-সর্বত্র এক গণযুদ্ধ এই সম্ভাবনাময় দেশটিকে গ্রাস করে নিত অল্প সময়ের মধ্যে। এসব অবাঞ্ছিত কথা ভেবেই দেশের শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ আঁতকে ওঠে বারবার। তারা এ দেশে আর কোনো প্রতিবিপ্লব কিংবা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি চায় না। তারা চায় না সর্বগ্রাসী দুর্নীতি কিংবা লুটপাট। গণতান্ত্রিক কিংবা আইনের শাসনের পরিবর্তে কর্তৃত্ববাদ, স্বেচ্ছাচারিতা এবং পুলিশি জুলুমণ্ডনির্যাতন। সুতরাং যারা নির্বাচনের প্রশ্নে এরই মধ্যে অস্থির হয়ে পড়েছেন, তারা কি প্রকৃত অর্থেই রাজনীতি সচেতন, নাকি তারাও আবার ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার নৈরাজ্যের বিবরে নিমজ্জিত হতে চান?
বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃত অর্থে কখনোই তাদের ন্যায্য গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ কিংবা গণতন্ত্রের চর্চা করার সুযোগ পায়নি। সে কারণে অনেকের মধ্যে প্রবল হতাশা জন্ম নিয়েছে। তাদের অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা ও অসহিষ্ণুতা। সে কারণে তারা দ্রুত পরিবর্তন চায়। কিন্তু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচিত সরকার কি তাৎক্ষণিকভাবে কাঙ্ক্ষিত সব নিয়মণ্ডশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে?
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতা দখল কিংবা নতুন কোনো দল গঠনের বাসনা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যোগ দেননি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ভবিষ্যতে দেশে যদি কোনো নতুন দল গঠন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে, তবে সেটি পৃথক কথা।
এতে দেশের বড় দু-একটি দলের চিন্তিত হওয়ার বিশেষ কোনো কারণ থাকতে পারে না। একটি নতুন সংগঠন দাঁড় করাতে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে যাদের সংগঠন করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা ভালো করেই জানেন একটি রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলতে কতটা মেহনত ও সম্পদের প্রয়োজন পড়ে। সুতরাং যেনতেনভাবে একটি নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় চলে যাওয়ার দিবাস্বপ্ন যারা দেখেন, তাদের ভাবতে হবে যথাযথ সংস্কারবিহীন বাংলাদেশে ক্ষমতায় গেলেও তারা কত দিন সেখানে টিকে থাকতে পারবেন?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মতো নেতারা ষড়যন্ত্রের সামনে টিকে থাকতে পারেননি। একজন প্রাণ হারিয়েছেন কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে, অন্যজন সামরিক চক্রান্তের মুখে। দেশবাসী সে রাজনীতির পরিসমাপ্তি চায়। তারা চায় এক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলতে, যেখানে থাকবে আইনের শাসন ও মানবাধিকার।
মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ প্রশস্ত হবে এবং সব বৈষম্যের অবসান ঘটবে। ড. ইউনূস সেই নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এসেছেন। তাকে তার পরিকল্পিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাহায্য করা আমাদের একটি নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি।
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক।