বয়স্ক ও বিধবা ভাতা চলমান সংকট!

আতিক সিদ্দিক

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা কার্যক্রমের আওতায় ৫৮ লাখ ১ হাজার মানুষকে এবং বিধবা ভাতার আওতায় ২৫ লাখ ৭৫ হাজার নারীকে সুবিধাভোগী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ভাতা প্রদানের পরিমাণ বয়স্ক ভাতা : প্রতিমাসে ৬০০ টাকা, বিধবা ভাতা : প্রতিমাসে ৫৫০ টাকা। বর্তমান বাজারদরের তুলনায় এই ভাতা অত্যন্ত কম এবং উপকারভোগীদের ন্যূনতম প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ট নয়। খাদ্য, চিকিৎসা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যস্ফীতির কারণে এই পরিমাণ টাকায় বেঁচে থাকা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনিয়মিত প্রদান ও ভাতাভোগীদের সংকট- সাধারণত এই ভাতাগুলো ৩ থেকে ৬ মাস পরপর বিতরণ করা হতো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, সাম্প্রতিক সময়ে এ ভাতা ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে যেসব মানুষ এই ভাতার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল, তারা চরম অর্থকষ্টে পড়েছেন। বিশেষ করে বয়স্ক ও বিধবারা- যাদের উপার্জনের অন্য কোনো উপায় নেই- তারা মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কাজ করার কারণে অনেক সুবিধাভোগী সাথেই প্রতিদিন কথা হয়, দীর্ঘ সময় ভাতা বন্ধ থাকায় তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে পারছেন না।

এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত উত্তরণ প্রয়োজন, কারণ রাষ্ট্রীয় সহায়তা না পেলে তাদের জীবনমান আরও অবনতি ঘটবে। সমাধানের জন্য সুপারিশ- ১. ভাতা বৃদ্ধির প্রয়োজন: বয়স্ক ও বিধবা ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ন্যূনতম বাজারদরের সাথে সমন্বয় করা যেতে পারে ২. নিয়মিত বিতরণ : ৩ মাসের পরিবর্তে মাসিক ভিত্তিতে ভাতা প্রদান নিশ্চিত করা উচিত ৩. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা : ভাতার বিলম্বের কারণ এবং অর্থ বরাদ্দে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এই ভাতাগুলো বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বেঁচে থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অবলম্বন। তাই এর যথাসময়ে বিতরণ এবং উপযুক্ত পরিমাণে বরাদ্দ নিশ্চিত করা সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।

উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যকর্মী