আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মানুষের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা জরুরি
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
৫ আগস্ট-পরবর্তী দেশের নতুন প্রেক্ষাপটে জনমনে সঙ্গতই প্রত্যাশা জেগেছিল সমাজ জীবনের স্তরে স্তরে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের রূপরেখা বাস্তবায়িত হওয়ার প্রেক্ষাপটে শান্তি-নিরাপত্তা ও মানুষের সুস্থ জীবনযাপনের পথ কণ্টকমুক্ত হবে। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতি সাক্ষ্য দিচ্ছে, অপরাধের পরিসর বিস্তৃত হওয়ায় জননিরাপত্তা কিংবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এও বলা হয়েছে, একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অন্যদিকে নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। আমরা জানি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে সেনা-র্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযান চলছে কিন্তু এর পরও থেমে নেই সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্য।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খুন-খারাবি, ডাকাতি, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, হামলাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বার্তা প্রায় প্রতিদিনই সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে। প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর প্রতিবেদনেই জানা গেছে, শুধু অক্টোবরেই সারা দেশে অন্তত ৯০ জন খুন হয়েছেন। গণপিটুনির মতো চরম নিষ্ঠুর ও বর্বরোচিত ঘটনাও গত দুই মাসে কম ঘটেনি। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, লালবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনী বিদ্যমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে টহল জোরদার করেছে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পথে চলতে এখন পদে পদে ভয় পায় মানুষ- এও সংবাদমাধ্যমেরই বার্তা। তবে স্বস্তির খবর হলো, আমরা যখন এই সম্পাদকীয় লিখছি, তখন জানা গেছে সেনাবাহিনীসহ প্রত্যেকটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশব্যাপী সতর্ক নজরদারি বাড়িয়েছে এবং অপরাধ ও অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করেছে। আমরা তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই, কিন্তু একই সঙ্গে এ কথাও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে কিংবা জননিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হলে মানবাধিকারে অভিঘাত লাগে। জনিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়। আমাদের বিশ্বাস, আইনের শাসন নিশ্চিত হলে অনেক অস্থিরতাণ্ডঅনিশ্চয়তা কেটে যাবে। নিকট অতীতে কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসীর মুক্তি দেয়ার পর এই সম্পাদকীয় স্তম্ভেই আমরা বলেছিলাম, এদের কারণে জননিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। আমরা মনে করি, এই বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখার পাশাপাশি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নিশ্চয়তা জরুরি।