ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পারবেন কি রাষ্ট্র মেরামত করতে?

আবুল খায়ের বাবু, কলাম লেখক
পারবেন কি রাষ্ট্র মেরামত করতে?

গত ০৮-১০-২৪ইং প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা অবাঞ্চিত এবং ভারত মনে করে সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার উৎসবের ক্ষেত্রে এসব ঘটনা প্রকৃত বার্তা দেয় না। তিনি জানান, সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক আক্রমণ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। তিনি আশা করেন সেই সুরক্ষা সংখ্যালঘুদের দেয়া হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পতনে ভারতের মোদি সরকার ভীষণভাবে ব্যথিত মর্মাহত হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ক্ষোভে বিভিন্ন নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্য তো আছেই, অনেকের মতে ইচ্ছাকৃত বাঁধের পানি ছেড়ে দিয়ে বন্যায় প্লাবিত করা হয়েছে বাংলদেশকে, সীমান্তে টার্গেট কিলিংয়ের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে দুইজন সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ বেশ ক’জন বাংলদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের অভিমত দেশের ভেতরের বিভিন্ন গোষ্ঠীকে বিভিন্ন দাবিতে রাস্তায় নামিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করে দাঙ্গা বাধাবার জোর প্রপাগাণ্ডা চালানো হচ্ছে।

দীর্ঘ একটানা ষোল বছর ক্ষমতায় থেকে দেশের প্রতিটি সেক্টর রাজনৈতিক দলীয়করণ করায় হাসিনার পদত্যগ এবং দেশত্যাগের সাথে সাথে মন্ত্রী-এমপি, মেয়র-কমিশনার, বড়কর্তা এমনকি জাতীয় মসজিদের খতিবসহ সবাই গাঢাকা, আভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলায় নিয়োজিত থানা, পুলিশশূন্য ছিল। একটা রাষ্ট্র পরিচলনার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্র পুরা প্রশাসন একেবারেই বিশৃঙ্খল ছিল। এমনই প্রতিকূল অবস্থায় ইনটেরিজম সরকার ক্ষমতায় বসতে না বসতে সুশৃঙ্খল আনসার বাহিনীসহ একের পর এক দাবি নিয়ে ব্যানার নিয়ে অসংখ্য দল রাস্তায় নেমেছে। ইনটেরিম সরকারে ক্ষমতায় বসার দুই মাস পার হয়েছে কিন্তু দাবি আদায়ের আন্দোলন অদ্যাবধি বন্ধ হয়নি। বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে, দাবি নিয়ে আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু ভাইয়েরা সেদিনও রাস্তায় নেমেছিলেন। এখনো ঢাকার শাহবাগ-শহীদ মিনারে, চট্টগ্রামসহ অন্যান্য শহরে প্রায়ই সমাবেশ করছেন স্লোগান দিয়েছেন ‘দিতে হলে আরও দেবো রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’।

সম্ভবত আগষ্ট মাসে আন্দোলনরত হিন্দু ভাইদের একজনকে বলতে দেখলাম তাদের দাবি যদি মানা না হয়, তাদের নিরাপত্তা যদি না দেয়া হয় তারা সবাই ভারতে চলে যাবে। যেহেতু তারা বাংলাদেশে থাকতে পারছে না ভারতেও মুসলিমরা থাকতে পারবে না। এমন হুমকি দেশপ্রেমিক কারো কাছ থেকে কাম্য নয়। সাংবাদিকরা যখন আন্দোলনকারীদের একজনকে প্রশ্ন করলেন আপনি কোন থানা থেকে এসেছেন তিনি নিজ থানার নাম বলতে পারলেন না উল্টো প্রশ্নকারীর উপর মারমুখী হয়েছেন, হওয়ার কারণ কি? বলতে পারবেন আপনার প্রতিবেশী মুসলিম ভাই কি সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে নিরাপদ? বিরোধী রাজনীতি করায়, কিংবা ব্যক্তিগত আক্রোশে, কিংবা দুর্বল হওয়ায় তারা বা তাদের বাড়ি কি নিরাপদ?

গত ২৫/১০/২৪ইং সনাতনি গণজাগরণ মঞ্চের আয়োজনে আট দফা দাবি আদায়ে চট্টগ্রামে গণসমাবেশ করেছেন। অন্যন্য দাবির সাথে সাথে সংখ্যানুপাতে সংসদে আসন বিন্যাসের দাবি জানিয়ে প্রয়োজনে ভোট বর্জনের কথাও বলেছেন। দাবি আদায়ে দেশের বিভাগ ও জেলাসমূহে সমাবেশের পর ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করবেন বলে নেতারা জানিয়েছেন। আমরা বুঝি না নাকি না বোঝার ভান করি। ইনটেরিম সরকার কেবল শুধু দাবি পূরণের জন্য বসেননি। তাদের কাজ রাষ্ট্র সংস্কার করে অতিদ্রুত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। দাবি-দাওয়া থাকবে, আন্দোলন হবে কিন্তু কোনটা সময় আর কোনটা সময় নয় ভাবতে হবে। এসব দেখে বিগত পনের বছর যারা গুম-খুন, মামলা-হামলায় নিপীড়িত-নির্যাতিত, যারা জুলাই আগস্টে আপনজন হারিয়েছেন, দেখেছেন সন্তানসম কিশোর ছাত্রদের গুলিবিদ্ধ লাশ, দেখেছেন প্রতিবাদী জনতার রক্তে রক্তাক্ত হতে রাজপথ, দেখেছেন হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলার মতো নিষ্ঠুরতম ঘাতকদের কাজ। তারা ভাবতেই পারেন এতো সব দাবি নিয়ে রাস্তায় আন্দোলন হুমকিধমকির উদ্দেশ্য জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আমাদের ছেলে-মেয়েরা যে বিজয় অর্জন করেছে তা ভুলুণ্ঠিত করা। আগে ভালো ছিলাম এই কথাটা প্রতিষ্ঠিত করা। রাষ্ট্র সংস্কার বাধাগ্রস্ত করে ইনটেরিম সরকারকে ব্যর্থ করে পতিত সরকারকে পুর্নবাসিত করার ষড়যন্ত্র, ভুল হবে কি?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই রাস্তায় নেমেছিল। বিজয়ের আগে-পরে এমন কোনো ঘটনার কথা শুনিনি সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাইদের কাউকে শুধু ধর্মের কারণে সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গায় রক্ত দিতে হয়েছে? রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, ব্যক্তিগত শত্রুতায়, অর্থনৈতিক লোভ-লালসায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কেউ না কেউ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে আক্রান্ত হয়। ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় থেকে হত্যা-জুলুম নির্যাতন করে/নির্যাতনকারীর সহযোগী হয়ে দাপট দেখিয়ে সুবিধা নিলাম। যখন ক্ষমতাচ্যুত হলাম নির্যাতিতরা প্রতিশোধ নিতে গেলে তখন আমি নিরপরাধ সংখ্যালঘু তা কি করে হয়? অপরাধীর পরিচয় ধর্ম দিয়ে নয় অপরাধ দিয়ে হতে হবে। তবে অবশ্যই কোনোভাবেই আইন কাউকে নিজের হাতে তুলে নেয়ার অধিকার দেয়া যাবে না। সুখের বিষয় চারিদিকে এতো এতো প্রপাগাণ্ডা কিন্তু বাংলাদেশে দেশ-প্রেমিক ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের ঐক্যের কারণে অদ্যাবধি ধর্মের কারণে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কোনো নজির নেই। ভারতে বাবরী মসজিদসহ অসংখ্য মসজিদ, অন্যান্য সংখ্যা লঘুদের উপাসনালয় ভাঙা, নামাজ পড়তে না দেয়া, গুজরাট, দিল্লিসহ ভারতজুড়ে দাঙ্গা, গরুর মাংস রাখার অজুহাতে জয় শ্রীরাম বলে হাজার হাজার মানুষ হত্যাসহ কি হচ্ছে না ভারতের সংখ্যা লঘুদের উপর? ফিলিস্তিনিদের উপর ইজরাইলিরা যেভাবে নিপীড়ন নির্যাতন করে ভারতের মুসলমানদের উপর সরকারের মদদে ঠিক একই পন্থায় নিপীড়ন নির্যাতন চলছে। একবার ভাবুন, কেমন আছি আমরা সবার সমান অধিকারের শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশে?

বাংলাদেশ থেকে অনেক সনাতন ভাইয়েরা ভারতে পাড়ি দিয়েছেন এটা অসত্য নয়, কিন্তু শুধু অত্যাচার-নিপীড়নেই পাড়ি দিয়েছেন সেটা বোধহয় সঠিক নয়। কারণ হিন্দু ভাইদের তীর্থস্থান ভারত, বিশ্বের একমাত্র বৃহত্তর হিন্দু রাষ্ট্র। সুযোগ-সুবিধা ভালো হলে শুধু বাংলাদেশ কেন বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে যে কোনো হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ভারতে ছুটে আসবে। তেমনি সুযোগ পেলে যে কোনো মুসলমান, বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে মক্কা-মদিনায় ছুটে যাবে এটা কোনো অস্বাভিক ঘটনা নয়। ভালো আয় করার জন্যও শেষ সম্বল ভিটে মাটি বিক্রি করা লাখ লাখ টাকা খরছ করে মৃত্যুকে হাতে নিয়ে অনিশ্চিত সুখের আশায় পাড়ি দিচ্ছে অসংখ্য যুবক মরুভূমি-মহাসাগর। মরুভূমিতে শুকিয়ে মরছে মহাসাগরে ডুবে মরছে কিন্তু যাওয়া বন্ধ নেই।

বিশ্বের অতি ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর মানুষের শান্তিপূর্ণ সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতির সহাবস্থান বিশ্বে ঈর্ষণীয় তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তা নিয়ে আমাদের অহংকার আছে। তবে ব্যতিক্রমও আছে এবং থাকাটা এতো মানুষের এতো এতো মতে একেবারেই অসম্ভব কিংবা অস্বাভাবিক নয়। কারণ এই দেশেই স্বার্থের কারণে বাপ-বেটা, ভাই-ভাই মারামারি খুনাখুনি হয়। সামান্য কথা থেকে দুই গ্রামের মানুষ রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষে লিপ্ত হয়। আজ অনেকেই আমাদের বন্ধু, আবার অনেকে চায় না সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্বের অটুট বন্ধনে রাজনৈতিক সামাজিক স্থিতিশীলতায় এদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি। ভয়, যদি তাদের দেশেরই কোনো গোষ্ঠী বাংলাদেশের অগ্রগতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধীনতার ডাক দেয়। তাই কখনো রাজাকার-মুক্তিযোদ্ধা, কখনো স্বাধীনতা স্বপক্ষ-স্বাধীনতার বিপক্ষ, কখনো আবার হিন্দু-মুসলিম, কখনো পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের নিয়ে কল্পকাহিনী বানিয়ে জাতীকে বিভক্ত করে এই দেশ ও দেশবাসীর উপর কর্তৃত্ব করার চেষ্টা আগেও ছিল এখনো আছে এবং নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতেও থাকবে। সবাইকে দেখানো স্বাধীনতা পেয়ে কি লাভ আমাদের কথাই তাদের মানতে হয়। আমরা কেনো ভাবি না প্রতিবেশী দুই বাড়ির অথবা দুই গ্রামের দুই সম্প্রদায়ের দুইজনের সাথে আর্থিক দেনা পাওনা নিয়ে, ক্ষমতার দ্বন্দ্বে, রাজনৈতিক মতভেদের কারণে সংঘাত হানাহানি হতেই পারে। হতে পারে দুর্বলের উপর সবলের আগ্রাসী কোনো কর্মকাণ্ড। এক্ষেত্রে প্রয়োজন সমণ্ডঅধিকারের আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ এবং ন্যায়বিচারের মাধ্যমে দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

ড. ইউনুস ঠিকই বলেছিলেন ‘আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্ক্ষা, সেখানে আমরা বিবেচিত মুসলমান হিসেবে নই, হিন্দু হিসেবে নই, বৌদ্ধ হিসেবে নই; মানুষ হিসেবে। আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক।’ কিন্তু দেখছি শুকর যেমন কেবলই ময়লা শুকে বেড়ায় তেমনি আমাদেরই অতিমাত্রিক অসাম্প্রদায়িক ঝান্ডাধারী কোনো কোনো সুশীলজন যে কোনো দুই সম্প্রদায়ের ব্যক্তির মধ্যে সংঘটিত অপরাধের মাঝে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ শুকতে।

ছোটবেলায় হিন্দু শিক্ষকদের সান্নিধ্যই বেশি পেয়েছি, স্নেহ ভালোবাসায়, কে দিদি কে আপু কে মাসী আর কে খালা তফাৎ বুঝতে পারিনি। সাম্প্রদায়ীক-সম্প্রীতির শব্দ শুনেছি বলে মনেও করতে পারি না। অথচ এখন তার চলছে যথেচ্ছা অপপ্রয়োগ। মনে হয় আমরা যতই শিক্ষিত হচ্ছি নিজেদের মানবিক বলছি, যতই দাবি দাওয়া পদণ্ডপদবি নিয়ে হরেক রঙের সংগঠন হচ্ছে, রাজনীতিকে ধর্মের চাদরে ঢেকে ফেলছি অথবা ধর্মকে রাজনীতিকরণ করছি ততই যেনো আমাদের মাঝে একের প্রতি অপরের আস্থা হারিয়ে সন্দেহ বাড়ছে সম্প্রীতি কমছে আর দিন দিন দানবে পরিণত হচ্ছি। ভাতৃত্ববোধ, মায়া-মমতা কমছে। দেশপ্রেম এখন কেবলই বক্তৃতাণ্ডবিবৃতির চেতনা নামক শব্দে সীমাবদ্ধ।

আমেরিকায় দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদ্বয়ের আলোচনায় আশা করেছিলাম এতো দিনে ভারতের শোক প্রশমিত হওয়ার। কিন্তু হয়নি। তাই অতি আবেগি হয়ে অতি দ্রুততার সাথে যাচাই-বাছাই ছাড়া মিথ্যাচারের মাধ্যমে ভারতীয় পররাষ্ট্র মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। পূজায় সরকার নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছিলেন যাতে কোনো সন্ত্রাসী দুষ্টচক্র কোনো প্রকার অঘটন ঘটিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে। সরকারের পদক্ষেপের সাথে সাথে পাড়া-মহল্লায় সবাই সজাগ ছিল যাতে কেহ দেশে শান্তি-সম্প্রীতি নষ্ট করার সুযোগ না পায়। তারপরও কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে/ঘটানোর চেষ্টা চলেছে, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। ভারতের সেখানেও কুম্ভিরাশ্রুর শেষ নেই। তারা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত কিন্তু বিহারে মণ্ডপে সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়েছে তার খবর নেই। ভারতের নেতাদের ভাবা প্রয়োজন আঠার কোটি মানুষের প্রতিবেশী দেশ অস্থিতিশীল করতে চাইলে। বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীতে ভরপুর দেড়শ’ কোটি মানুষের দেশে তার প্রভাব পড়তে পারে। আঞ্চলিক শান্তি-সম্প্রীতিতে সবাই সমৃদ্ধ হতে হলে দাদা সুলভ দাম্ভিকতা ত্যাগ করে ভাবা উচিত কোনো বিশেষ ব্যক্তির সাথে রাষ্ট্রের নয়, রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের, রাষ্ট্রের মানুষের সাথে রাষ্ট্রের মানুষের সু-সম্পর্ক গড়তে হবে। নেতা-নেত্রীর নয় প্রতিবেশী দেশের জনগণের প্রতি, তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

দেশে গেরুয়াধারী সনাতনি নেতাদের জয়শ্রীরাম বলে আন্দোলনের ডাক, কেহ আবার কালেমা খচিত কালো এবং সাদা পতাকা নিয়ে দিচ্ছে খেলাফতের ডাক, পাহাড়ে অশান্তির কালো ছায়া, ইনটেরিম সরকারের সহনশীলতায় পতিত সরকারের সহযোগীদের সোশাল মিডিয়ায় গুজব, পতিত সরকারের রেখে যাওয়া প্রশাসনে মন্থরতা অতি সম্প্রতি প্রকাশ্যে কারো কারো সরকারের বিরোধিতা, একই মামলায় পূর্বের ন্যায় শত শত আসামি করা, রাজনৈতিক নেতাদের দ্রুত নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশে অতি-অস্থিরতা, নিয়ন্ত্রণহীন অস্থির এবং ঊর্ধ্বমুখী বাজারের দ্রব্যমূল্য। দেশের সাধারণ মানুষ সত্যিই আজ বড় বেশি শংকিত। দেশের ভেতরে-বাহিরে চলমান ষড়যন্ত্র, একে অপরের প্রতি আস্থাহীন, শ্রদ্ধাবোধহীন, ভ্রাতৃত্ববোধহীন, সহমর্মিতাহীন, দেশপ্রেমহীন মানুষের নিজেদের সংস্কার ছাড়া এতোবেশি প্রতিকূলতায় গুটিকয়েক অরাজনৈতিক উপদেষ্টারা দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জঞ্জাল মুক্ত করে পারবেন কি রাষ্ট্র মেরামত করতে?

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত